
মোঃ আবু জাফর,কুমিল্লা আদর্শ সদর(কুমিল্লা)শিক্ষানবিশ প্রতিনিধি।
কুমিল্লা জিলা স্কুলের সম্মানিত সিনিয়র শিক্ষক জনাব নাজমুল আবেদীন যিনি সকলের কাছে আলিবাবা স্যার নামে পরিচিত। ৩৫ বছরের সাধনা, পরিশ্রম, ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য নিয়ে গড়ে তুলেছেন নিজের সংগ্রহশালা।এই সংগ্রহশালা যেন সবাই দেখতে পারে তাই তিনি এর নাম দিয়েছেন কুমিল্লার জাদুঘর। ২০১৬ সালে এই জাদুঘরের কার্যক্রম শুরু হয় । ২০২২ সালে প্রসার আরও বাড়ানোর জন্য কুমিল্লার নগর উদ্যানে একটি নতুন ভবনে স্থান পায় এই সংগ্রহশালাটি।
২০২১ সালের শুরুর দিকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চলের তৎকালীন পরিচালকসহ সাত সদস্যের একটি টিম এই জাদুঘর পরিদর্শন করে। নাজমুল আবেদীন স্যার বলেন,”জাদুঘরের লাইসেন্স আনার কার্যক্রম চলমান আছে। লাইসেন্স পাওয়া গেলে এটি হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যক্তিগত জাদুঘর।” প্রথম ব্যক্তিগত জাদুঘর মোনতাসির মামুনের।
এই জাদুঘরে স্থান পেয়েছে ব্রিটিশ আমলের ৩২ কেজি ওজনের ফ্যান, হ্যাজাক বাতি, সের মাপের বাটখারা, বুনো মহিষের শিং, উটের হাড়, সাপের বীণ,
গানের কল, ব্রিটিশ আমলের কুড়াল, খড়ম, ঢেঁকি, লাউয়ের ডুগডুগি, লোহার পাল্লা, বাবুই পাখির বাসা, জমি মাপার শিকল, পিতলের বদনা, তাল পাতার নৌকা, বিশালাকৃতির তাম্রপাতিল, পিতলের হুক্কা, তামার কড়াই, পাললিক শিলা, এয়ার গান, ফেরাউন-ক্লিওপ্যাট্রার মমি, বাংলা সিনেমার রিল, গ্রামোফোন রেকর্ড, ঘোড়ার চামড়া, ব্রিটিশ আমলের ঘড়ি, গৌতম বুদ্ধ আমলের থালা ও ৯৩ টি দেশের বিভিন্ন সময়ের ব্যবহৃত মুদ্রা। বর্তমানে জাদুঘরটিতে তিন শ প্রকারের প্রায় দুই হাজারের বেশি জিনিসপত্র সংরক্ষিত আছে।
বিশেষ সাক্ষাৎকারে স্যার বলেন,”আমাদের তরুণ প্রজন্ম যাদের কাছে গ্রামীণ ঐতিহ্য এখনো অজানা।
আমাদের সন্তানরা যেন তাদের শেকড় ভুলে না যায় সে দিকটা প্রাধান্য দিয়ে আমি সংগ্রহশালাটি গড়ে তুলেছি।” তিনি আরো বলেন, “জাদুঘরের উপর ভিত্তি করে একটি এলাকার পর্যটন শিল্প গড়ে ওঠে। আমার স্বপ্ন পর্যটন নগরী কক্সবাজারে একটি জাদুঘর গড়ে তোলা। এছাড়াও কুমিল্লার জাদুঘরের জন্য আরো বড় জায়গা প্রয়োজন। সব জিনিসের স্থান সংকুলান হয় না নগর উদ্যান জাদুঘরে।আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আধুনিকতার পাশাপাশি গ্রামীণ ঐতিহ্যকে যেন ধারণ করতে পারে সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”