
গত রবিবার (২২ ডিসেম্বর) বিকালে মনোহরদী থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল জব্বার মনোহরদী থানায় তাঁর নিজ কার্যালয়ে মনোহরদী উপজেলা প্রেসক্লাবের সকল সদস্য তথা মনোহরদী উপজেলার সকল সাংবাদিকদের সাথে পরিচিত হওয়া সহ চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা ও মত-বিনিময় সভার আয়োজন করেন।
আলোচনা সভার শুরুতে মনোহরদী থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জনাব, মুহাম্মদ আব্দুল জব্বার সাহেব বলেন, ৫ ই আগষ্ট পরবর্তী সময়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়া সহ দেশের সঙ্কট-কালীন পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন থানা ভাংচুর ও লুটপাট এর পরও মনোহরদী থানা ভবন অক্ষত থাকাটাই মনোহরদী বাসীর সু-শিক্ষা ও আইনের প্রতি চরম শ্রদ্ধাশীল হওয়ার প্রমান বহন করে।
মনোহরদী থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জনাব, মুহাম্মদ আব্দুল জব্বার সাহেব আরও বলেন, আমি ব্যক্তিগত ভাবে ঢাকা জেলার বাসিন্দা। আর নরসিংদী জেলাধীন মনোহরদী থানা’টিও বিগত সময়ে বৃহত্তর ঢাকা জেলার অংশ হিসেবে থাকার কারণে আমি এই অঞ্চলেরই সন্তান। আর তাই আমি আমার দীর্ঘ কর্ম-অভিজ্ঞতার আলোকে মনোহরদী থানাটিকে একটি দূর্নিতি, মাদক, সন্ত্রাস, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, কিশোর-গ্যাং ও ইভ-টিজিং সহ সকল প্রকার অপরাধ, অপকর্ম ও অরাজকতা মূক্ত করে একটি আধুনিক থানা হিসেবে গড়ে তুলতে দৃঢ় প্রতীজ্ঞ এবং এই কর্মপরিকল্পনার সফলতায় আমি সহ আমার মনোহরদী থানার সকল পুলিশ সদস্য আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি। কারণ, আইন, বিচার ও শাসন গনতন্ত্রের প্রকাশ্য তিনটি স্তম্ভ হলেও গনতন্ত্রের অপ্রকাশ্য স্তম্ভ হচ্ছে গণমাধ্যম।
গনতন্ত্রের তিনটি স্তম্ভ ঠিক রাখতে এবং গনতন্ত্রের তিনটি মূলমন্ত্র সাম্য, স্বাধীনতা ও ভাতৃত্ব বজায় রাখতে গণমাধ্যম ও গণমাধ্যম কর্মীদের ভূমিকা অপরিসীম এবং অপরিহার্য। তাই আপনাদের সহযোগিতা আমার ও আমাদের একান্ত প্রয়োজন।
এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, যেকোন অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভুক্তভোগীর ন্যায় বিচার সুনিশ্চিত করার জন্য যেমনিভাবে পুলিশের প্রয়োজন ঠিক তেমনিভাবে পুলিশের পুলিশিং (স্বাভাবিক কার্যক্রম) এ গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের খুবই প্রয়োজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গণমাধ্যম হচ্ছে মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। গণমাধ্যমের প্রকাশিত বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ আমাদের কার্যক্রম সহ সকল প্রকার রাজনৈতিক তথা সকল রাষ্ট্রীয় কাজ অব্যাহত রাখায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমের ভূমিকা অতুলনীয়। বিগত সময়ে আপনারা যেরকম ভাবে স্বাধীন মত প্রকাশ করতে পারেন নি ঠিক তেমনিভাবে আমরাও আমাদের কার্যক্রম স্বাধীনভাবে করতে পারি নি। তবে, এখন সময় মুক্ত ও স্বাধীন ভাবে নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করার। আর তাই, আমরা এবং আপনারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করলে মনোহরদী থানা তথা পুরো বাংলাদেশ ৭১ এবং ২৪ এর স্বাধীনতার মূল লক্ষ্যে পৌছাতে পারবে।
মনোহরদী থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল জব্বার সাহেব মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সকল সাংবাদিকবৃন্দদের সাথে পরিচয় পর্ব শেষে সবার কাছ থেকে মনোহরদী থানায় চলমান সমস্যা গুলো শুনেন এবং ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করেন। তাছাড়াও চলমান সমস্যাগুলো আশু-নিরসনের বিষয়ে আলোচনা করেন।
মতবিনিময় সভাটিতে মনোহরদী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জনাব কাজী শরিফুল ইসলাম সাকিল বলেন, সাংবাদিকরা পুলিশের বন্ধু, আপনাদের সহযোগীতা পেলে মনোহরদীকে দূর্নীতি মুক্ত করা আমাদের জন্যে সহজ হবে। আপনারা আমার কাছে সব ধরনের সহযোগিতার পাবেন।
এ সময় কোন সাংবাদিক যেন থানায় এসে দালালী করে সাধারণ জনগণকে হয়রানী করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল জব্বার সাহেবকে আহ্বান জানান তিনি।
এরপর উপস্থিত সাংবাদিকবৃন্দ তাঁদের পরিচয় ও মতামত তুলে ধরেন।
উক্ত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্য উপস্থিত ছিলেন মনোহরদী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আজমিরী সুলতানা, সহ-সভাপতি কামাল উদ্দীন বাদল, সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম বাদল, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন হোসেন, দপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাওঃ মো.এমরুল ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন, সম্মানিত সদস্য ইব্রাহিম খলিল, মোঃ কাউছার মিয়া, শামীমুল হক শামীম, জাকির হোসেন, হুমায়ূন কবির, অলি উল্লাহ্, মো.ইমরান হোসেন, পিংকী রাণী দাস, মমতাজ মহল লাকী, মো.হিমেল মিয়া, তানজির আহমেদ, মো.কাওসার আহমেদ, এস এম সুমন প্রমূখ।