বাড়িরাজশাহী বিভাগচাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাকৃষকলীগ নেতার নেতৃত্বে দুই হাজার কলাগাছ কাটার অভিযোগ

কৃষকলীগ নেতার নেতৃত্বে দুই হাজার কলাগাছ কাটার অভিযোগ

আলি হোসেন,, বিশেষ প্রতিনিধি চাঁপাইনবাবগঞ্জ 
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে কৃষকলীগ নেতার নেতৃত্বে পূর্ব শত্রুতার জেরে দুই হাজার কলাগাছ কেটে প্রতিশোধ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এরমধ্যে দুই দিনে প্রায় ৫০০ ফলন থাকা গাছ কেটে ফেলেছে প্রতিপক্ষরা। এতে ৮-৯ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় ও বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের গুলদহার বিলে পুকুরের পাড়ের কলাবাগান কেটে নষ্ট করা হয়। 
স্থানীয় বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শী, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গুলদহার বিলে জমির মালিকের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে পুকুরের পাড়ে কল চাষ করেছিলেন ভোলাহাট উপজেলার হেলাচী গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মো. মুসলিম উদ্দীন। গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে পুকুরে এসে আগের রাতে কেটে যাওয়া প্রায় ১৫০০ গাছ কাটা অবস্থায় পায় কৃষক মুসলিম উদ্দীন। 
এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত কর্মকর্তা গোমস্তাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম অভিযুক্ত জামবাড়িয়া ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলামকে গাছ কাটা বন্ধ করতে বলে থানায় বসে সুরাহার জন্য বললেও কলাগাছ কাটা অব্যাহত রাখে তারা। পরে অবশিষ্ট সবগুলো কলাগাছ কাটার পাশাপাশি সেখানে থাকা কুঁড়েঘরও ভেঙে ফেলে তরিকুল ইসলামের লোকজন। 
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মুসলিম উদ্দীন বলেন, আমি জমির মালিকের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে ধারদেনা করে পুকুরের চারদিকে কলাবাগানটি তৈরি করেছিলাম। অনেক গাছে কলা ধরেছিল। কিন্তু পুকুর ও কলাবাগান পাশের বিলের জায়গা দাবি করে বুধবার রাতে গাছ কেটে যায় তরিকুল ইসলামের লোকজন। পরে থানায় অভিযোগ দিলে সেখান থেকে পুলিশের সব ধরনের কর্মকান্ড করতে বন্ধ করার কথা বললেও তা শুনেনি তারা। জোরপূর্বক ৫০-৬০ লোক এসে শনিবার সকালে বাকি গাছগুলোও কেটে ফেলেছে। এতে আমি একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছি। আর কিছুই থাকলো না আমার। পুলিশকে অভিযোগ দিয়েও রক্ষা করতে পারলাম না অনেক কষ্টে গড়ে তোলা কলাবাগান। 
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী জমিলা রহমান, মোহাম্মদ আলী জানান, দুই দিন আগে কলাবাগানের বেশিরভাগ কাটা হয়েছিল রাতে। শনিবার সকালে বাকি কিছু গাছ ছিল তাও কেটে ফেলেছে। অনেক লোকজন নিয়ে গাছ কাটতে আসায় বাধাও দিতে পারেনি কৃষক মুসলিম উদ্দীন৷ কেটে ফেলা অনেক গাছেই ফলন ছিল। গাছ কাটার পরে কলা কুড়িয়ে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। 
কলাগাছ কাটার কথা স্বীকার করে জামবাড়িয়া ইউনিয়ন কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম বলেন, পুকুর ও কলাবাগানের জায়গাটি বিলের। আমরা বিলের ইজারা নিয়েছি। তাই বিলের সংস্কার করতেই গাছগুলো কাটা হয়েছে৷ বিলের জায়গা দখলের বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে কোন অভিযোগ করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইজারাদার হিসেবে আমাদের সম্পদ রক্ষা করা দায়িত্ব। তাই কাউকে জানানোর প্রয়োজন নেই। 
এবিষয়ে গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইস উদ্দীন বলেন, এনিয়ে থানায় একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে দুদিন আগেই। এরপর আজকেও বাকি গাছ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এবিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওসি।
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments