
হোসেন আলী , কোটালিপাড়া (গোপালগঞ্জ) সংবাদ দাতা –
গোপালগঞ্জেের কোটালিপাড়া উপজেলার ১ নং কলা বাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডঃ বিজন কুমার বিশ্বাস এর বিরুদ্ধে ভিজিডি এর ২৫২ বস্থা চাউল আত্মসাৎ, ও ২৩/২৪ অর্থ বছরের বিশেষ বরাদ্দের ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার নামমাত্র কাজ করে অর্থ লোপাট ও বিশ্ব শান্তি সেবাশ্রমের নামে প্রায় তিন লক্ষ ৭১ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।
এবং আজ প্রায় তিন মাস যাবত ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত না হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ।
এতে এলাকার স্থানীয় মেম্বারসহ জনগণের চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে ।
এ বিষয়ে একটি কলাবাড়ির চেয়ারম্যান বিজন কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কোটালীপাড়া ইউএন ও বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এবং জেলা প্রশাসক গোপালগঞ্জ, দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকা ও জন প্রশাসন মন্ত্রণালয় ঢাকা বরাবরে এ অভিযোগের অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে ।
১ নং কলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডঃ বিজন কুমার বিশ্বাস কোটালিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বিঞ্জান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
তারই ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনার নৌকা প্রতীকে মনোনীত হয়ে জনগণের ভোটবিহীন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বিগত দিনে কলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদে যত চেয়ারম্যান আসছে তাদের বিরুদ্ধে এমন ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী । গত ৫ই আগস্ট এর আগে পর্যন্ত চেয়ারম্যান কলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদে একটি রাম রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। যে কারণে কোন জনগণ তার বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে সাহস পাইনি। আজ ক্ষমতার পালাবদল হয়ে যাওয়ার কারণে এবং নিজের দুর্নীতির দায়ে স্ত্রী ছেলে ইন্ডিয়া পাঠিয়ে নিজে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে বলে জানান এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
বিষয়টিকে কেন্দ্র করে কলাবাড়ী ইউনিয়নে জনগন ও মেম্বারদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে কলা বাড়ী ইউনিয়নের প্রায় ৮ জন মেম্বার এ বিষয়ে একটি মানব বন্ধন করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছে মেম্বার কমলেশ ঢালী, পরিতোস হালদার, পরিতোস মধু, লাবলী বাড়ৈ, নিউটন সরকার, অধির বাড়ৈ, বিমল সরকার সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
মেম্বারগন বলেন দুর্নীতি করে চেয়ারম্যান তার স্ত্রী ও ছেলেকে ইন্ডিয়ায় ২য় তলা বাড়ি করে তাদের সেখানে পাঠিয়ে দিয়েছে। আর তিনি চেয়ারম্যান প্যানেল চেয়ারম্যান মনোজ বৈদ্য বিমল গাইন ও ১ জন মহিলা মেম্বারকে সাথে নিয়ে সকল প্রকার অনিয়ম দুর্নীতি করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এ মত অবস্থায় আমাদেরকে যারা ভোট দিয়ে মেম্বার বানিয়েছে,, সেই সমস্ত জনগণের চেয়ারম্যান না থাকার কারণে আমরা কোন সেবা দিতে পারছি না। জনগণ সকল প্রকার সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে মেম্বার তথা কলা বাড়ী ইউনিয়নের জনগন চেয়ারম্যানের উপরে বিক্ষুব্ধ রয়েছে । যেকোনো মুহূর্তে এলাকায় একটা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি সহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। কোটালীপাড়া নির্বাহী অফিসার দয়াকরে, অতি দ্রুত কলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদে একজন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে কলাবাড়ি ইউনিয়ন বাসীর সকল প্রকার দুর্দশা লাঘোবে আপনার সহযোগিতা কামনা করছি।
এ বিষয়ে ১ নং কলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিজন কুমার বিশ্বাসের নিকট প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি কোন প্রকার দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত না। যাহারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে,সে আমার একই গ্রামে হওয়ার কারণে ব্যক্তিগত শত্রুতার হীন স্বার্থসিদ্ধির জন্য করেছে। আমি এই অভিযোগের বিরুদ্ধে সরকার তথা প্রশাসন যদি আমার কাছে জবাব চায় আমি তাহার জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছি। ৫ ই আগস্ট এর পরে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের হলে এই সমস্ত লোকজন আমার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমি প্রায় তিন মাস যাবত ইউনিয়ন পরিষদের যাই না এ কথা সত্য,কিন্তু জনগণ কোন প্রকার সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ কথাটি সত্য নয়। জনগণ আমার সাথে যোগাযোগ করে সকল প্রকার সেবা নিচ্ছে ।
এ বিষয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব সাগুপ্তা হকের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ১ নং কলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আমি একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, এ বিষয়ে আমি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করব। চেয়ারম্যান বিজন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার তার বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ।