
গাজীপুরে অবরুদ্ধ ১২ পরিবার, মিলছে না প্রতিকার ৷ প্রতিবেশী মানুষের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। সুখে দুঃখে যারা পাশে থাকেন সবসময়। কিন্তু গাজীপুরের গল্পটি হতাশার।
কালীগঞ্জের বক্তারপুর ইউনিয়নের কলুন গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে এক প্রতিবেশী পাশের ১২টি পরিবারের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে অবরুদ্ধ হয়ে দিন কাটাচ্ছেন ১২টি পরিবারের অন্তত ৫০ থেকে ৬০ জন মানুষ। এদিকে ঘটনাটি স্থানীয় উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনে অভিযোগ করেও মিলছে না প্রতিকার।
বুধবার (০৫ অক্টোবর) সকালে ভূক্তভোগীদের পক্ষে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বিষয়টি জানান কলুন গ্রামের মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেরে ইব্রাহীম ভূঁইয়া (৩৮)।
অভিযুক্তরা হলেন একই গ্রামের প্রতিবেশী মৃত আমজাদ ভূঁইয়ার ছেলে আলোক ভূঁইয়া (৫৫), ফরিজ উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে সাইফুল ভূঁইয়া (২৭) ও মৃত মনিরুজ্জামানের ছেলে কাশেম ভূঁইয়া (৫৮)।
ভূক্তভোগী ইব্রাহীম ভূঁইয়া জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে অভিযুক্তরা গেল ১০ আগস্ট আমার পরিবারসহ আরও ১২টি পরিবারের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছে। ৩০/৩৫ বছর যাবৎ চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাস্তাটি হঠাৎ করে বন্ধ করে দেওয়ায় ওই ১২টি পরিবারের অর্ধশতাধিক মানুষ অনেকটা অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। অনেক কষ্টে অন্যের বাড়ির উঠোন বা বারান্দা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এভাবে শিশু, মুরুব্বি, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা চলাচল করছেন। এটা অত্যন্ত কষ্টের বিষয়।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের কাছে তারা সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা করলেও অভিযুক্তরা রাস্তা এখনো উন্মুক্ত করেনি। ১৫ সেপ্টেম্বর কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও কালীগঞ্জ থানার ওসির কাছে লিখিত অভিযোগ করেও রাস্তার ব্যাপারে কোন প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
অভিযুক্ত কাশেম ভূঁইয়া বলেন, যে রাস্তা নিয়ে অভিযোগ সেটা আমাদের পারিবারের রাস্তা। এই রাস্তা দিয়ে আমাদের বৌ-বেটিরা চলাচল করে। তবে আমাদের অন্য জায়গা দিয়ে বিকল্প রাস্তা তৈরি করে তাদেরকে চলাচল করতে বলেছি।
ইউপি সদস্য মো. ইকবাল হোসেন সারোয়ার জানান, চেয়ারম্যান ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ সবাইকে নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশ মীমাংসা করে দিয়েছিলাম। কিন্তু পরে তারা আর সালিশের কথা মানেনি।
বক্তারপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আকন্দ ফারুক জানান, এ ব্যাপারে আমি গিয়ে বলে এসেছি। পরে শুনলাম তারা আর রাস্তা দেয়নি। থানার ওসি সাহেবও আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। উনি বলেছেন ঘটনাস্থলে আসবেন। ওসি আসলে আবার গিয়ে বিষয়টি মীমাংসার ব্যবস্থা করব।
কালীগঞ্জ থানার ওসি আনিসুর রহমার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি ও দু’পক্ষের সাথেই কথা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দুইপক্ষ ও স্থানীয় চেয়ারম্যানকে সাথে নিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করব।
ইউএনও মো. আসসাদিকজামান জানান, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা দুই পক্ষকে সাথে নিয়ে আবারও মীমাংসার চেষ্টা করবেন।