
মোঃ জাহান জেব কুদরতী,মোংলা(বাগেরহাট)প্রতিনিধি।
ঘূর্ণীঝড় রেমাল এর তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দক্ষিণ জনপদ সহ সুন্দরবনে। ঝড়ের কবলে পড়ে মারা গেছে হরিণসহ অন্যান্য অসংখ্য প্রাণী। মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তল্লাশী চালিয়ে বনের কটকা,কচিখালী,হিরন পয়েন্ট ও দুবলা এলাকা থেকে ৩০টি মৃত হরিণ উদ্ধার করা হয়।
এ ছাড়া আরও ১৫টি আহত হরিণকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করেছেন বনরক্ষকীরা। এই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে বনের অভ্যন্তরে ২৫টি টহল ফাঁড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লবণ পানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে অন্তত ৮০টি মিঠা পানির পুকুর।
খুলনা বিভাগীয় কর্মকর্তা বাবু
মিহির কুমার দে বলেন, রবিবার বিকাল থেকে একটানা ২০ ঘণ্টা ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডব ও জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছপালার ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বন বিভাগের বিভিন্ন বন অফিসসহ টহল বোট, টিনের চালা, জানালা-দরজা, সোলার প্যানেল ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ সময় জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়ে কটকা অভয়ারণ্যে অফিস ঘাটের জেটি বঙ্গোপসাগরের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দুবলা, কটকা, কঁচিখালি, বগা সহ বিভিন্ন বন অফিসসহ ২৫টি টহল ফাঁড়ির রান্নাঘরসহ অবকাঠামোর টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে।
সুন্দরবনের অভ্যন্তরে মিঠাপানির পুকুরগুলোও জলোচ্ছ্বাসে লোনা পানিতে তলিয়ে গেছে। সুন্দরবনের ৮০টি মিঠাপানির উৎস পুকুরে ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে লোনা পানিতে তলিয়ে যাওযায় বনকর্মীদের পাশাপাশি বাঘ, হরিণসহ বন্যপ্রাণীরাও সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে। সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীরা অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়ে মারা যাওয়ারও খবর মিলেছে।
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্ব সুন্দরবনের একমাত্র করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের নানা অবকাঠামো। সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তা জনাব মোঃ আজাদ কবির জানান-ঘূর্ণীঝড় রেমালের তাণ্ডবে এখানকার পর্যটক চলাচলের কাঠের পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে তছনছ হয়েছে অসংখ্য গাছপালা। তবে পুরো সুন্দরবনের গাছপালাসহ কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিশ্চিত করে এখনই বলা সম্ভব নয়।
জনপদ এলাকায় মৎস নির্ভর পরিবার গুলো ব্যাপক ক্ষতীর সম্মুখীন হয়েছে। মৎস ঘের তলিয়ে হাজার হাজার লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েগেছে।ঘর বাড়ী ছিন্নভিন্ন হয়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে অগনীত বানভাসি গৃহহীন অসহায় পরিবার।
বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে মিল,কল-কারখানা সহ সকল উৎপাদন ও বিপনন শিল্প বন্ধ হয়ে আছে।