মনোহরদী(নরসিংদী)নিজস্ব প্রতিনিধি
মনোহরদী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক ও বর্তমান সভাপতি (সরকার পতনের আগ পর্যন্ত) হেলাল হাসান ইমন আলমের কুকর্ম কোনভাবেই যেন থামছে না! মনোহরদী উপজেলার ইউনিয়নগুলোর বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক টি-আর, কাবিখা ও টিসিবি সহ সকল উন্নয়ন মূলক কাজগুলোতে চলছে তার একক রাজত্ব! তাছাড়াও তার প্রভাবে ভূমি অফিসের বিভিন্ন সিন্ডিকেট পরিচালনা সহ উপজেলাটিকে সে একটি চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাস, কিশোর-গ্যাং, অবৈধ ভূমি দখল সহ মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। বিগত আওয়ামী শাসনামলে স্থানীয় সাংসদ ও শিল্প মন্ত্রী এডভোকেট নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এর কড়া নিষেধাজ্ঞা সত্বেও এক গোপন শক্তির মাধ্যমে সে তার সকল অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করে গেছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনেও তার ভূমিকা ছিল স্বৈরাচার সরকারের পক্ষে। সে তার সন্ত্রাসী ও কিশোর-গ্যাং বাহিনী কে সাথে নিয়ে এলাকায় ও এলাকার বাহিরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র ও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে নানান তৎপরতা চালায়। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে গত ৫ ই আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ এর পরও ভৌতিক ক্ষমতার মাধ্যমে সে তার অবৈধ কার্যক্রমগুলো চালিয়ে যাচ্ছে!
দেশের একটি পট পরিবর্তনের পরও সে কিভাবে তার এসমস্ত অবৈধ কার্যক্রমগুলো কিভাবে চালিয়ে যাচ্ছে তার উত্তর খুজতে গিয়ে জানা যায়, হেলাল হাসান ইমন আলম তার প্রবাসী দুই ভাই এবং তার একান্ত সহযোগী যথাক্রমে ১| রাফী ওরুফে ডেঞ্জার রাফি (কিশোর-গ্যাং লিডার, গাজা ও ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনাকারি, চিন্হিত সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিতে পারদর্শী) ২| আব্দুল্লাহ ওরুফে হাতুড়ি আব্দুল (ইমন আলমের ড্রাইভার ও কিশোর-গ্যাং এর সেকেন্ড লিডার, ইমন আলমের বডিগার্ড, ইয়াবা ব্যবসার সহযোগী, টেন্ডার ও চাঁদাবাজির সহযোগী) ৩|শাওন ওরুফে ডেরবা শাওন(গাজার ব্যবসা পরিচালনাকারি, অস্ত্রের রক্ষনা-বেক্ষনকারি ও শোডাউন এর মাস্টার মাইন্ড)৪| জাহিদ ওরুফে কানা জাহিদ (গাজা ব্যবসার সহযোগী, ডেরবা শাওন এর একান্ত সহযোগী) ৫|পাভেল ওরুফে বাঘা পাভেল (গাজা ব্যবসার এজেন্ট) ৬|মাইনুদ্দিন ওরুফে কালা মানিক (অবৈধ মদ ব্যবসা পরিচালনাকারি,গাজা ও ইয়াবা ব্যবসায়ের এজেন্ট) ৭|রাজিব ওরুফে ভিলেন রাজিব (অবৈধ মদ ব্যবসা পরিচালনাকারি, মারামারি/সহিংসতায় উস্তাদ) ৮|রাতুল ওরুফে ইয়াবা রাতুল (ইয়াবা ও গাজা ব্যবসার এজেন্ট) ৯| আরাফ/রুমি ওরুফে গাঞ্জা আরাফ/রুমি (বিশিষ্ট মাদক চোরাচালানকারি ও গাজা ব্যবসার সহযোগী) এদের মাধ্যমে মনোহরদী-বেলাব তথা নরসিংদী ও আশেপাশের জেলার বিভিন্ন দুর্নিতিগ্রস্থ নেতা ও আমলা সহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আন্দোলনে অংশগ্রহণ কারী ছাত্র-ছাত্রী সহ সাধারণ মানুষকে নির্যাতন গুম, খুন ও হত্যার সাথে জড়িত আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা সহ উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা ও সরকারের দূর্নিতিগ্রস্থ উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিদেশে অর্থ-পাচার, গোপনে আশ্রয় দান ও দেশত্যাগে সহযোগিতা করে। অন্যদিকে তার ছোটভাই 'আনাছ' নিজেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিজেকে নরসিংদী জেলার ও মনোহরদী উপজেলার এবং গোতাশিয়া ইউনিয়ন এর সমন্বয়ক দাবি করার মাধ্যমে হেলাল হাসান ইমন আলমকে তার অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনায় সহযোগিতা করে যাচ্ছে। যদিও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে ইমন আলমের ছোট ভাইয়ের কোন সম্পৃক্ততা নেই তারপরও বিগত সময়ে ইমন আলমের আলমের সৃষ্টিকরা ত্রাস ও প্রভাবশালীদের সাথে সখ্যতা থাকার কারণে সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করতে বাধ্য আর এসব কারণেই সে তার রাজত্বে বহাল তবিয়তে আছে। বিভিন্ন অনুসন্ধানী সূত্রে জানা যায়, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের শাসনামলে ছাগলকান্ডে জড়িত এনবিআর এর চেয়ারম্যান মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি'র সাথে তার সখ্যতা ছিল বেশ। মতিউর রহমান ও তার স্ত্রীর সকল অপকর্মের সহযোগী ছিল হেলাল হাসান ইমন আলম তাছাড়াও ইমন আলম বিএনপির স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতাদের পরিচয় ব্যবহার করেও তার প্রভাব বিস্তার ও বজায় রাখছে বলে জানা যায়।
এসব বিষয়ে স্থানীয় বিএনপির বেশকয়েকজন দায়িত্বশীল নেতাদের সাথে কথা বললে এসব বিষয়ে তাঁরা কেউই অবগত নন বা কোন অন্যায়ের প্রশ্রয় দেন এবং দিবেন না বলে স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে বিএনপির দুঃসময়ে মনোহরদী-বেলাবতে দলটির একক নেতৃত্ব দেওয়া (সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি ও বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সহ সম্পাদক) জনাব আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল তাঁর একক ও দলীয় অবস্থান পরিষ্কার করতে গিয়ে জানান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিতে কোন দূর্নিতি, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি সহ কোন প্রকার অন্যায়-অপকর্ম ও এসবের সাথে জড়িতদের জায়গা ছিল না এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না, ইনশাআল্লাহ। আমি আমার ব্যক্তিগত আদর্শ, রাজনৈতিক আদর্শ এবং দলীয় আদর্শ অনুযায়ী এসব কার্যক্রম কে ঘৃণা করি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং জনাব তারেক রহমান সাহেব যেভাবে অন্যায়ের সাথে আপোষহীন ছিলেন তেমনি আমিও আমার ব্যক্তিজীবন ও রাজনৈতিক জীবন আপোষহীন ভাবেই পরিচালনা করে যাব ইনশাআল্লাহ। বর্তমান পরিস্থিতিতে দলকে পূনঃগঠন এর কাজ চলমান থাকলেও কোন প্রকার অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের জায়গা হবে না দলে। দলীয় পরিচয়ে বা কোন নেতার পরিচয়ে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি কোন প্রকার অরাজকতা সৃষ্টি করে তাহলে সেই দায়ভার কখনোই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির উপর বর্তায় না। এসব বিষয়ে সকল তথ্য প্রমান বিশ্লেষনপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান করা সহ জনগনকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির উপর আস্থা রাখার আহবান জানিয়েছেন তিঁনি।
ইমন আলমের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার থানায় অভিযোগ করলেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে সেসব অভিযোগের কোন সুরাহা হয় নি।
এসব বিষয়ে মনোহরদী থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব মোঃ জুয়েল হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিঁনি জানান, আমি মনোহরদী থানায় নতুন যোগদান করেছি তবে আমি বিষয়টি দেখব এবং খুব দ্রুত যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করব।
এসব বিষয়ে ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, হেলাল হাসান ইমন আলমের সকল অপকর্ম রুখে দিয়ে সামাজিক শান্তি শৃংখলা ও রাষ্ট্রীয় আইন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা খবই জরুরি। বর্তমান কিশোর ও যুব সমাজ ধংসের মূল নায়ক সে। ইমন আলম ও তার সন্ত্রাসী এবং কিশোর-গ্যাং বাহিনী বর্তমান সমাজের অভিসাপ ও আতঙ্ক। ইমন আলম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর এসব কার্যক্রম রুখে দিতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছে সবাই। তাছাড়াও সম্প্রতি অন্তবর্তীকালীন সরকার কতৃক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের কে ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতা দেওয়ায় সকলেই একটি সঠিক বিচারের আশায় আছে বলে জানান।