বাড়িঅন্যান্যচোর সন্দেহে যুবককে বেদম মারধর, হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু

চোর সন্দেহে যুবককে বেদম মারধর, হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় এক যুবককে চোর সন্দেহে বেদম মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তাঁর পরিবার। মারধরের পর গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ওই যুবককে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়।

নিহত মো. রানা মিয়া (৩০) উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা গ্রামের মো. আমিরুল ইসলামের ছেলে। স্থানীয় একটি কারখানায় চাকরি নিয়েছিলেন তিনি। তবে বেশ কিছুদিন ধরে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন না রানা।

স্বজনদের অভিযোগ, মাওনা পিয়ার আলী কলেজের পূর্ব পাশে চুরির অপবাদ দিয়ে স্থানীয় ভাঙারি ব্যবসায়ী মো. শিপন, ওই এলাকার বাসিন্দা আকাশ মিয়া, মো. উজ্জ্বল, মো. ইমন মিয়াসহ ৮-১০ জন রানাকে বেদম মারধর করেন। সন্তানকে উদ্ধার করতে গেলে রানার মা–বাবাও মারধরের শিকার হন। পরে সেখান থেকে উদ্ধারের পর ঢাকায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে রানা মারা যান।

নিহত যুবকের চাচা মো. কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রানা মিয়া প্রায়ই বাড়ি থেকে না বলে বের হতেন। গত শুক্রবার রাতেও বাড়ি থেকে বের হন তিনি। রাত একটার দিকে পিয়ার আলী কলেজের পূর্ব পাশে একটি ভাঙারির দোকানের পাশে রাখা একটি ভ্যানের কাছে রানা দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় সেখানে দায়িত্বরত প্রহরীরা তাঁকে চোর সন্দেহে আটক করেন। প্রহরীরা ভাঙারি ব্যবসায়ী শিপনকে ডেকে তোলেন। এ সময় সেখানে আকাশ মিয়া, উজ্জ্বল, ইমনসহ আরও ৮-১০ জন উপস্থিত হন। এরপর তাঁকে অনেক মারধর করা হয়। ভোরের দিকে রানার বাড়িতে খবর পাঠানো হয়। ঘটনাস্থলে রানার বাবা আমিরুল ইসলাম ও মা রেহানা খাতুন উপস্থিত হন। রানাকে গুরুতর আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাঁরা মারধরের কারণ জিজ্ঞাসা করেন। এ নিয়ে শিপন ও অন্যদের সঙ্গে রানার মা–বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাঁদেরও মারধর করেন শিপন ও তাঁর সহযোগীর।

ঘটনাস্থল থেকে রানাকে নিয়ে যেতে চাইলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে যেতে হয় তাঁর মা–বাবাকে। পরে সেখান থেকে রানাকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তাঁর মা–বাবা। চিকিৎসকেরা তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। গুরুতর অবস্থা দেখে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রানাকে ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে গতকাল সন্ধ্যা সাতটায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শিপনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। বাড়িতেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর মা রোকেয়া আক্তার বলেন, রানাকে মারধর করেননি শিপন।

শ্রীপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments