চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের টোব্যাকো গেট এলাকার কিশোর এক রিকশাচালককে (১৫) গ্রেপ্তারের পর পুলিশ ফাঁড়িতে দেখতে গিয়েছিলেন তাঁর বড় তিন ভাই। একপর্যায়ে পুলিশ ডেকে নিয়ে বড় এক ভাই আপন দাশকেও (১৮) ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে আটক করে। এতে হতভম্ব অপর দুই ভাই জীবন দাশ ও তপন দাশ গ্রেপ্তারের ভয়ে আর পুলিশের কাছে যেতে সাহস করেননি।
গত শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে। গতকাল শনিবার আপন ও তাঁর কিশোর ছোট ভাইকে আসামি করে লোহা চুরির মামলা দিয়ে আদালতে পাঠায় সীতাকুণ্ড থানার পুলিশ। আপন কিংবা ওই কিশোরের নামে আগে থেকে থানায় কোনো মামলা ছিল না। পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার দুই ভাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে লোহা চুরির সঙ্গে জড়িত।
গ্রেপ্তার দুজনের ভাই তপন দাশের অভিযোগ, তাঁরা খুব গরিব ও অসহায়। তাঁর সেজ ভাই আপন রিকশাচালক। আপন অসুস্থ হওয়ায় শুক্রবার রিকশা নিয়ে বের হয় তাঁদের কিশোর ছোট ভাই। বিকেলে ভাটিয়ারী বিএমএ এলাকা থেকে তিন-চারজন লোক কিছু লোহা রিকশায় তুলে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে বলেন। লোহা বেশি ও ভারী হওয়ায় তাঁর ভাই লোহাগুলো রিকশায় তুলতে চায়নি। পরে জোর করে লোহা রিকশায় তুলে দেন ওই ব্যক্তিরা।
কিছু দূর যাওয়ার পর ওই ব্যক্তিরা সটকে পড়েন। এর কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ এসে তাঁর ভাইকে গ্রেপ্তার করে ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে তিনি ও মেজ ভাই জীবন দাশ চট্টগ্রাম নগরের প্রবর্তক মোড় থেকে পুলিশ ফাঁড়ির দিকে রওনা দেন। তাঁরা পুলিশ ফাঁড়িতে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর অসুস্থ সেজ ভাই আপনও পৌঁছান। এরপর পুলিশ কর্মকর্তা আপনকে ডেকে নিয়ে যান কথা বলার জন্য। সেখানেই তাঁকে আটকে রাখা হয়। পরে দুজনকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে স্ক্র্যাপবাহী লরি থেকে প্রায়ই লোহা চুরির অভিযোগ আসে। পুলিশও সতর্ক অবস্থানে আছে। গত শুক্রবার বিকেলে চোরাই লোহাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয় ওই কিশোরকে। গ্রেপ্তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে আগে কোনো মামলা ছিল না। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। এ জন্য তাঁদের দুজনকেই গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।