প্রিন্ট এর তারিখঃ মার্চ ১৭, ২০২৫, ৩:১৬ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ মার্চ ১৬, ২০২৫, ৮:০৪ পি.এম
জাতিসংঘের বৈঠকে গুতেরেসের বার্তা: সংস্কারই অগ্রাধিকার, বিএনপির হতাশা স্পষ্ট

আব্দুর রহিম মোড়লগঞ্জ(বাগেরহাট)শিক্ষানবিশ প্রতিনিধি
(১৫মার্চ ২০২৫): জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর গোলটেবিল বৈঠকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। গুতেরেস স্পষ্ট করেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র, সুশাসন ও সমৃদ্ধির বিকাশ নিশ্চিত করতে সংস্কারকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। নির্বাচনের জন্য কোনো তাড়াহুড়োর প্রয়োজন নেই, বরং যথাযথ সংস্কারের পরই একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব। বৈঠকে গুতেরেস বলেছেন, "ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গণতন্ত্র, সুশাসন ও সমৃদ্ধির যে স্বপ্ন বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে সঞ্চার হয়েছে, জাতিসংঘ সেটাকে স্বীকৃতি জানায়।"তার এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে। তিনি আরও বলেন, "এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও উচিত বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানো এবং প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করা।"গোলটেবিল বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রতিক্রিয়া হতাশার ইঙ্গিত দেয়। তিনি বলেন, "গুতেরেসের সঙ্গে এই বৈঠক কেন হলো, আমি তা ঠিক বুঝিনি।" এই মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, গুতেরেসের বক্তব্য বিএনপির প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়নি। বৈঠকে গুতেরেস একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সংস্কারের ওপর জোর দিলেও সরাসরি নির্বাচন তাগাদা দেননি। বরং তিনি অপরাধীদের বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন। এতে বিএনপির সাম্প্রতিক আন্দোলন বড় ধাক্কা খেলো বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত। উল্লেখ্য, এই বৈঠকটি জাতিসংঘের নিজস্ব উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছিল, যা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়। এতে শুধু রাজনৈতিক নেতারা নয়, ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। গুতেরেসের এই সফরের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ড. ইউনূসের অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গুতেরেসের বার্তার পর বাংলাদেশের রাজনীতি নতুন মোড় নিতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তার বক্তব্য ইঙ্গিত দেয়, সংস্কারই হবে মূল অগ্রাধিকার, যা রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচন আন্দোলনকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে। এখন প্রয়োজন জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। এই প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত হবে জনগণের চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সংস্কারের পথে এগিয়ে যাওয়া। দেশের ভবিষ্যৎ কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে না, বরং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণই আগামী দিনের পথনির্দেশ করবে।
কপিরাইট@২০২৩ দৈনিক প্রথম বাংলা। সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত