
পাথর কোয়ারী সচলের দাবিতে জাফলংয়ে মন্ত্রী ইমরানকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণায় তোলপাড়
সিলেটের পাথর কোয়ারী সচলের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে কতিপয় বক্তা কোয়ারি বন্ধ রাখার বিষয়ে মন্ত্রী ইমরান আহমদকে দায়ী করে বক্তব্য রাখেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের একজন নেতা মন্ত্রীকে জাফলংয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণায় তোলপাড় শুরু হয়েছে মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকায়। অনেকে এ ঘটনা তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন। সমাবেশে মন্ত্রীকে হঠাৎ করে এক বক্তা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় তোলপাড় শুরু হয়।
গত শনিবার দুপুরে জাফলংয়ের কেন্দ্রবিন্দু মামার দোকানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে জাফলং পাথর উত্তোলন শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, কোয়ারি বন্ধ থাকার কারণে এলাকার সংসদ সদস্য, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। কোয়ারি বন্ধ রাখার বিষয়ে তিনি মন্ত্রী ইমরান আহমদকে দায়ী করেন। তার এই বক্তব্যের পর সমাবেশে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়। আব্দুস সালামকে পূর্ব জাফলং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার পক্ষ থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে জানিয়ে নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে সমাবেশ চলার সময়ও আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জানা যায়, সিলেটের কোয়ারিগুলোতে পাথর উত্তোলনে সায় দিচ্ছেন না প্রশাসনের কর্মকর্তারা। ক’দিন আগে বিভাগীয় কমিশনার জানিয়ে দিয়েছেন পাথর উত্তোলনে সম্মতি নেই প্রশাসনের।
জেলা প্রশাসকও জানিয়েছেন, অনিয়ন্ত্রিতভাবে পাথর উত্তোলন করতে দেয়া হবে না। সামনেই মৌসুম। কোয়ারি খোলার অপেক্ষায় লাখো শ্রমিক। এবার পাথর কোয়ারি লিজে দেয়া হবে কিনা-এ নিয়ে এখনো খনিজ উন্নয়ন ব্যুরো থেকে স্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি। এই অবস্থায় জাফলংয়ে শ্রমিকরা মাঠে নেমেছেন। গতকাল জাফলংয়ে হাজারো শ্রমিক শোডাউন করেছে। আর এই শোডাউনে ঘটে গেছে নানা ঘটনা। এরমধ্যে একটি ঘটনায় তোলপাড় চলছে সিলেটজুড়ে।
গত শনিবার পাথর কোয়ারী সচলের দাবিতে শোডাউনের আয়োজন করেছিল জাফলং পাথর ব্যবসায়ী সমিতি। এই সমিতিতে জাফলংয়ের সব পাথর ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্তি রয়েছে। এই সংগঠনের মাধ্যমে অতীতে নানা সময় কোয়ারি খোলার দাবিতে আন্দোলন চালানো হয়েছে।
গত শনিবার দুপুরে জাফলংয়ের কেন্দ্রবিন্দু মামার দোকানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে জাফলং পাথর উত্তোলন শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, কোয়ারি বন্ধ থাকায় এলাকার সংসদ সদস্য, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। কোয়ারি বন্ধ রাখার বিষয়ে তিনি মন্ত্রী ইমরান আহমদকে দায়ী করেন। তার এই বক্তব্যের পর সমাবেশে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়। আব্দুস সালামকে পূর্ব জাফলং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার পক্ষ থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে জানিয়ে নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে সমাবেশ চলার সময়ও আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সমাবেশে গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সামছুল আলম। তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পাল্টা জবাবও দেন।
শামসুল আলম তার বক্তৃতার শেষদিকে বলেন, ‘যারা মন্ত্রী মহোদয়কে অবাঞ্ছিত ঘোষণার সাহস দেখিয়েছে আগামীতে তাদেরও জবাব দিতে হবে।’ তবে বক্তব্যের শুরুতেই জাফলং পাথর কোয়ারি সচল রাখার জন্য তার ভূমিকা ও প্রশাসনের নানা চাপের বিষয় তুলে ধরেন। সামছুল বলেন, ‘অতীতে আমার পরিবার আপনাদের পাশে ছিল, আজো আছি, আগামীতেও থাকবো। আমাদের এই পরিবেশবাদীরা সব করছে। আমরা ডলার দিয়ে ভারত থেকে পাথর আনি। এতে করে রিজার্ভ কমছে। হিসাব করে দেখেন গত কয়েক মাসে কতো রিজার্ভ কমেছে। আমরা ডলার দিয়ে পাথর আনছি অথচ আমাদের কোয়ারি বন্ধ। আমরা চাই ইসিএ এলাকা বাদে অন্য এলাকায় পাথর উত্তোলনের সুযোগ দেয়া হোক।’
এদিকে, সমাবেশের আয়োজকরা তার এই বক্তব্য মেনে নিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সম্মতিও দিয়েছেন। জাফলং পাথর কোয়ারি দেশের অন্যতম পাথর কোয়ারি। উজানের সীমান্ত এলাকা হচ্ছে পর্যটন এলাকা। দেশ-বিদেশ থেকে এখানে পর্যটকরা বেড়াতে আসেন। প্রায় ১০ বছর আগে জাফলং কোয়ারি ও আশপাশ এলাকায় নির্বিচারে পাথর উত্তোলন করায় কোয়ারির একাংশকে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা বা ইসিএ জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসিএ জোন এলাকা হওয়ার কারণে প্রায় ১০ বছর ধরে পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে জাফলং কোয়ারিতে।এতে করে ফিরেছে আগের পরিবেশ। এই অবস্থায় অপেক্ষায় থেকে থেকে এখনো ইজারায় দেয়া হয়নি জাফলং পাথর কোয়ারি। সরকারের তরফ থেকেও সে ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
অন্যদিকে- চাহিদা পূরণে ভারতের পাথরের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন ভারত থেকে শতকোটি টাকার পাথর আসে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ কারণে জাফলং পাথর কোয়ারি সচল করার দাবিতে গতকাল মানবন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, মন্ত্রীকে অ্যাটাক করার পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। যারা সমাবেশে এসেছিলেন সবাই যে ভালো নিয়তে এসেছেন বলা মুশকিল। কেউ কেউ সমাবেশকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছেন। এটা খুবই দুঃখজনক।