জৈন্তাপুরে নবজাতক হত্যার দায়ে নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আটক
সিলেটের জৈন্তাপুরের মুজিব নগরের বিধবা মহিলার সন্তান প্রস্রব হলে নবজাতক শিশুটিকে হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া হয়। এঘটনায় উপজেলা জুড়ে আলোচনার জন্ম হয় ৷ এই ঘটনার জের ধরে পুলিশ নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফখরুল ইসলামকে আটক করে৷
পুুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জৈন্তাপুর উপজেলার গোয়াবাড়ী গ্রামে গৃহহীন অসহায় পরিবারের জন্য মুজিব নগর গ্রাম স্থাপিত হয়। সেখানে ১নং ২নং এবং ৯নং ঘর বরাদ্ধ পান কমলাবাড়ী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে ৷
অনুসন্ধানে জানাযায় প্রায় ১০ বছর পূর্বে স্বামী মারা যাওয়ায় ৮বছর বয়সী এক ছেলেকে নিয়ে পিতার বাড়ী কমলাবাড়ী গ্রামে আশ্রয়নেন এবং পরবর্তীতে মুজিব নগরের সরকারী ঘরে বরাদ্ধ পেয়ে স্থায়ী বসাবাস শুরু করেন। দরিদ্রতার সুযোগে মহিলার সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলেন ঐ গ্রামের বাসিন্দা নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য ফখরুল ইসলাম (৫০)। তার সাথে সহযোগী ছিল ঐ গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার ছেলে সুহেল আহমদ (৩৩) ও জৈন্তাপুর ইউনিয়নের লামনীগ্রামের বাসিন্ধা তোতা মিয়ার ছেলে ট্রাক চালক জমির উদ্দিন। বিভিন্ন সময় তাদের শারীরিক সম্পর্কে জড়ীয়ে পড়লে ভিকটিম অন্তস্বত্ত হয়ে পড়ে। একপর্যায় ৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ভোর ৬টায় নিজ ঘরে ঘরে ভিকটিম এক ছেলে সন্তান প্রস্রব করে। সন্তান জন্মের সংবাদ পেয়ে অভিযুক্ত ফখরুল, সুহেল ও জমিরের পরামর্শে নবজাতক শিশুটিকে গলাটিপে হত্যা করে স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়ীর পাশে মাটিচাপা দেওয়া হয়৷ অপরদিকে মাটি চাপা দেওয়ার বিষয়টি প্রতিবেশি মহিলা দেখতে পেয়ে আশ-পাশের লোকজনকে ঘটনাটি জানান ৷ গ্রামবাসী জৈন্তাপুর মডেল থানায় খবর দেয়।
ঘটনার সংবাদ পেয়ে জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আব্দুর রব এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটিচাপা অবস্থায় শিশুটির লাশ উদ্ধার করে এবং ভিকটিমের জবানবন্দি গ্রহন করে৷ ভিকটিমের জবানবন্ধির ভিত্তিত্বে ঘটনার সাথে জড়িত ঐ গ্রামের বাসিন্দা নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য ফখরুল ইসলাম (৫০) কে আটক করা হয় ৷ আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভিকটিম মহিলাকেও থানায় নিয়ে আসা হয়।
নবজাতক হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়৷ ঘটনার জড়িত অপর দুই ব্যক্তি সুহেল ও জমির উদ্দিন শিশুর লাশ উদ্ধারের পরপর পলাতক রয়েছে।
জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম দস্তগীর আহমদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এটা অত্যন্ত নির্মম ঘটনা। ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত শিশুটির লাশ উদ্ধার করি এবং ভিকটিমের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলামকে গ্রেফতার করি। অপর দুজনকে গ্রেফতারের চেষ্ট চলছে ৷ নবজাতক শিশুটিকে ডিএনএ টেষ্টের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ঐ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন এবং শিশু হত্যার দায়ে মামলা রের্কড করা হয়।