পর্যটকদের উপর হামলা করে মারধরের প্রভাব পড়েছে প্রকৃতিকন্যা খ্যাত সিলেটের জাফলংয়ে। শনিবার সরবারি ছুটির দিন হলেও আশঙ্কাজনক হারে পর্যটক সমাগম ঘটেনি ৷ গত শুক্রবার হকে নিরাপত্তার অভাবে সিলেটের বাহিরের পর্যটকরা আসেনি এই পর্যটন কেন্দ্রে৷ অতিতের সকল রের্কড ছাড়ীয়ে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে লক্ষাধিক পর্যটকের আগমন ঘটে প্রকৃতি কন্যা খ্যাত জাফলংয়ে৷
ঈদের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মনোনিত সেচ্ছাসেবীদের হামলায় ঢাকা হতে আসা পর্যটকদের মহিলা পুরুষের উপর ১০টাকার টিকেট জন্য হামলা চালায় প্রশাসনের পেটুয়া বাহিনী ৷ ঘটনার ভিডিও জৈন্তাপুর উপজেলা স্থানীয় অন লাইন সংবাদ মাধ্যমে এক সংবাদকর্মী ভিডিওটি প্রকাশ করলে মুহুত্বের মধ্যে সাইক্লেন গতিতে ইন্টারনেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ৷ ইতোমধ্যে ভিডিও ক্লিপটি প্রায় মিলিয়ন লোক দেখেছে ৷ এছাড়া কপি পোষ্টের মাধ্যমে আরও কয়েক মিলিয়ন লোক দেখেছে ৷ যার ফলে সংশ্লিষ্ট উদ্বর্তন প্রশাসন তড়িৎ গতীতে হামলাকারী সেচ্ছাসেবকদের আটক এবং মামলার মাধ্যমে আদালতে প্রেরণ করে ৷ পর্যটন কেন্দ্রে ৭দিনের জন্য বিনামূল্যের টিকেটে পর্যটক প্রবেশের ঘোষনা দেন ৷ এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য গত শুক্রবার হতে অতিরিক্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়ন করা হলেও পর্যটকরা নিজেদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সিলোটের বাহিরের তেমন কোন পর্যটক আসেনি ৷ তবে জাফলং ছাড়া সিলোটের অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্র সমুহে পর্যটকদের ভিড় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দেখা গেছে ৷
সব মিলিয়ে মানুষের মনে এখন জাফলংয়ের টিকেট আত্মংক বিরাজ করছে পর্যটকদের মনে ৷ যার কারনে পর্যটক সমাগমের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়েছে সিলেটের সর্ববৃহত জাফলং পর্যটন স্পটে৷
গোয়াইনঘাটের জাফলং থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সবুজ পাহাড় আর পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝরনা ধারা সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করে পর্যটকদের। এছাড়া বিছনাকান্দি, জৈন্তাপুরের সারি নদী, কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর, উৎমাছড়া এবং মিঠাপানির একমাত্র জলারবন রাতারগুলের সবুজের সমারোহে পর্যটকদের ভিড় থাকে সবসময়ই।
খুলনা হতে ঘুরতে আসা পর্যটক পরিবারের সদস্য সোহেল মির্জার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, যতবার সিলেট ঘুরতে আসি তখনই জাফলং আসি। তারই ধারাবাহিকতায় বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে জাফলং আসলাম। কিন্তু তুলানা মুলক হারে এই পর্যটন কেন্দ্র অনেকটাই ফাঁকা ৷ স্থানীয়দের মাধ্যমে জানলাম গত বৃহস্পতিবার পর্যটক পরিবরের উপর হামলা হয়েছে ৷ বিশেষ করে প্রশাসন নিয়োজিত বাহিনীর মাধ্যমে ৷ ঘটনাটি শুনে আমাদের মধ্যেও কিছুটা আত্মংক বিরাজ করছে ৷ যদিও পর্যটকদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি হয়েছে কিন্তু আমরা মনে করছি পর্যটকদের মনে ঘটনার আত্মংকটা রয়ে গেছে ৷ যার কারনে এই পর্যটন কেন্দ্র তেমন কোন ভিড় লক্ষ করা যঅচ্ছে না ৷ সকাল আমরা বিছানা কান্দি ছিলাম কিন্তু সেখানে পা ফেলার যায়গা নেই বলে তারা জানান৷
জাফলং ভিউ সহ বেশ কয়েকটি খাবার হোটেল ঘুরে দেখা হোটেল মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেলে, বৃহস্পতিবারের ঘটনার ভিডিও দেশ বিদেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে ৷ ঘটনার পর হতে জাফলংয়ে প্রায় শতকরা ৭০ শতাংশ পর্যটক কমেছে ৷ এই ঘটনায় আমাদের ব্যবসার বড় ক্ষতি হল ৷
তারা আরও বলেন, ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনের পর্যটক সমাগম যে ভাবে ছিল একই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে গত করোনার ক্ষতি পুষিয়ে উঠা যেত ৷ এই মাহলার ঘটনায় তা হয়ে উঠবে না ৷
ট্যুরিস্ট পুলিশ জাফলং জোনের ওসি রতন শেখ বলেন, জাফলংয়ে পর্যটকদের সংখ্যা এ বছর বেড়েছে। আজ শনিবারও পর্যটকরা ঘুরতে এসেছেন। তবে গত বৃহস্পতিবার তোলনায় একটু কম। পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ আন্তরিক ভাবে কাজ করছে।