
রাখেশ চন্দ্র দাস,মাধবপুর(হবিগঞ্জ)বিশেষ প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার দক্ষিণ বেজুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা আফরোজা বেগমের বিরুদ্ধে সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, দপ্তরীকে গালিগালাজ, আর্থিক অনিয়ম ও কর্তৃত্ববাদী আচরণের অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অস্থিরতা বিরাজ করছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষিকা নিয়মিতভাবে সহকর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে থাকেন। এমনকি বিদ্যালয়ের দপ্তরীকেও তিনি প্রকাশ্যে গালিগালাজ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া বিদ্যালয়ে রান্নার জন্য গ্যাস সিলিন্ডার চুলা ব্যবহারে বাধ্য করা হচ্ছে এবং প্রতি মাসে শিক্ষকদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা নেওয়া হয় বলে জানা গেছে। সহকর্মীদের দুপুরের খাবার নিজ
নিজভাবে আনতেও নিষেধ করা হয়।
শিক্ষকরা আরও অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের আর্থিক লেনদেনে রয়েছে অনিয়ম ও গরমিল। স্লিপের টাকার ভাউচারে অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। এমনকি একবার স্লিপের ৭০ হাজার টাকা থেকে প্রধান শিক্ষিকা নাকি নিজের মেয়ের জন্য ৩২ হাজার টাকার গহনা ক্রয় করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষকদের দাবি, তিনি প্রায়ই ন্যায্য ছুটির আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন এবং বিদ্যালয়ের পরিবেশকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অযথা চাপ প্রয়োগ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা আফরোজা বেগম বলেন,
> “আমি স্কুলটিকে সুশৃঙ্খল রাখার চেষ্টা করি। এতে কেউ কেউ বিরক্ত হতে পারে, কিন্তু আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি।”
তবে আর্থিক হিসাব সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,
> “এসব বিষয়ে জানতে চাইলে লিখিত আবেদন দিতে হবে।”
এদিকে সহকর্মীদের দাবি, প্রধান শিক্ষিকার ‘টাইট’ ব্যবস্থাপনা আসলে কর্তৃত্ববাদী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। এর ফলে বিদ্যালয়ের সুস্থ পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে ভয় ও অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধবপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস এম জাকিরুল হাসান বলেন,
> “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় শিক্ষাকর্মী ও অভিভাবকরা দ্রুত তদন্ত করে ঘটনার সঠিক বিচার এবং বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।