
ভোলা দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ৭ নং ওয়ার্ডে কৃষক আওলাদ হোসেনর কৃষিপণ্য কাটার কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনে গভীর রাতে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) গভীর রাতে উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের কাজীর হাট মাছ ঘাটে পূর্বপাশে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আওলাত হোসেনের স্ত্রী নুরনাহার বেগম বাদী হয়ে দৌলতখান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী আওলাদ হোসেন জানান, তিনি একজন কৃষক মানুষ। কয়েক বছর আগে সরকারি প্রণোদনায় ৩৩ লক্ষ টাকায় কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন টি কিনে ধান কাটাসহ কৃষিকাজে ব্যবহার করে আসছিলেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পূর্বের শত্রুতার জেরে দুর্বৃত্তরা মাছ ঘাটের পাশে চরের মধ্যে রাখা মেশিনটিতে আগুন ধরিয়ে পুড়ে ফেলে।
কৃষক আওলাদ হোসেন দাবি করেন, কিছুদিন আগে তার এই কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন থেকে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও মটর চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় মোঃ সামসু মাঝি কে হাতেনাতে ধরে ফেলে । এই নিয়ে গ্রাম্যভাবে সালিশের মাধ্যমে ৫১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় সামসু মাঝি থেকে।
সেই থেকেই আওলাদ হোসেনকে তারা বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল এমনকি তার মেশিন
পুড়িয়ে ফেলার হুমকি দিয়েছিল।
তার জের ধরেই প্রতিবেশী মোঃ সামসু মাঝি এবং তার ঘনিষ্ঠ মোঃ কামাল ব্যাপারী গং, মোঃ দুলাল মাঝিরা বিভিন্ন সময় আওলাদ হোসেন কে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা চালাচ্ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চড়ে মেশিন রেখে বাসায় চলে যায় কৃষক আওলাদ হোসেন, নদীতে অভিযান থাকায় সন্ধ্যার মধ্যেই লোকালয় শূন্য হয়ে যায় মাছ ঘাট। এই সুযোগে সামসু মাঝি তার ছেলেরা ও ঘনিষ্ঠ লোক নিয়ে কৃষক আওলাদ হোসেনের কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনটি পুড়ে ফেলে। সকালে স্থানীয়রা মেশিনটি পড়ানো দেখে আওলাদ হোসেনকে অবগত করলে তিনি এসে দেখেন তার স্বপ্নের মেশিনটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কৃষক আওলাদের শেষ সম্বল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে। এই ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, নদীতে মাছ ধরার অভিযান থাকায় মাছ ঘাটে সন্ধ্যার পরে কেউ থাকেনা। এই সুযোগে পরিকল্পিতভাবে দুর্বৃত্তরা কৃষক আওলাদ হোসেনের মেশিনটি পড়ে ফেলে। আমরা সকালে এসে মেশিনটি পোড়া দেখে তাকে অবগত করি, কে বা কাহারা এই কাজ করছে আমরা জানি না। তবে যেই করুক না কেন দ্রুত তাদের কে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। আর যেন কোনো কৃষকের স্বপ্ন না পুড়ে।
চরপাতা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানান: মানুষের সাথে মানুষের দ্বিধা দ্বন্দ্ব থাকতে পারে কিন্তু মেশিনের সাথে কারো শত্রুতা থাকতে পারে না। এভাবে একজন কৃষকের ক্ষতি করা উচিত হয়নি।
এ বিষয়ে দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান বলেন, বিষয় টি দুঃখজনক আমি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।