
খন্দকার শহীদুল ইসলাম। সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।
সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার মেঘালয় ঘেঁষা টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালী ফসল রক্ষা বাঁধ রবিবার ভোরবেলা পানির তোড়ে ভেঙে গেছে। অবশ্য নজরখালী বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় হাওরের ফসলের কোন ক্ষতি হবে না বলে জানিয়েছেন হাওরপাড়ের কৃষকরা।কৃষকরা আরও জানিয়েছেন, হাওরে এ পর্যন্ত ৬০ ভাগ জমির ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে। নজরখালি ফসল রক্ষা বাঁধের ভিতরে যে সকল হাওর রয়েছে সেগুলো হলো— মোকতার খলা হাওর, লুঙ্গাচুঙ্গা হাওর, সেনাডুবি হাওর, ইকরছই হাওর, শালদিগা হাওর, সামসাগর হাওর, কলমা হাওর, গনিয়াকুড়ি হাওর, উলান হাওর, ছটাইন্না হাওর ও রউয়্যা হাওর। এ হাওরগুলোর জমির পরিমাণ রয়েছে প্রায় ১০ হাজার একর।
টাঙ্গুয়ার হাওরটি সরকার কর্তৃক জলাভূমি ঘোষণা করায় পানি উন্নয়ন বোর্ড নজরখালি ফসল রক্ষা বাঁধটি নির্মাণ করে না, সেজন্য প্রতি বছর হাওরপাড়ের কৃষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি নির্মাণ করে থাকেন।
টাঙ্গুয়ার হাওরের ভৌগলিক অবস্থান পড়েছে তাহিরপুর ও মধ্যনগর উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ৮২টি গ্রাম। ইউনিয়নগুলো হলো— তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন ও শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন। মধ্যনগর উপজেলার উত্তর বংশিকুন্ডা ইউনিয়ন ও দক্ষিণ বংশিকুন্ডা ইউনিয়ন।
টাঙ্গুয়া হাওরপাড়ের গোলাবাড়ি গ্রামের কৃষক খসরুল আলম বলেন, রবিবার ভোর ৪টার দিকে নজরখালি ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। তবে হাওরের ফসলের কোন ক্ষতি হবে না।
মধ্যনগর উপজেলার দক্ষিণ বংশিকুন্ডা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান বলেন, নজরখালি বাঁধের ভিতরের ৬০ ভাগ জমির ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে। এখন শুধু টানি জমির ধান রয়েছে। এগুলোর কোন ক্ষতি হবে না।
তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শনির হাওরপাড়ের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালি ফসলরক্ষা বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় জেলার বৃহৎ বোর ফসলি ধানের হাওর শনির হাওর ও মাটিয়ান হাওরটি এখন নিরাপদ হয়ে গেলো। কারণ হিসাবে তিনি বললেন, টাঙ্গুয়ার হাওরটি হচ্ছে জলাভূমি। বৌলাই ও পাটলাই নদীর পানি এখন সহজেই টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রবেশ করবে। এতে করে হাওরের বাঁধে পানির চাপ কম থাকবে।
তাহিরপুর উপজেলার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. হাসান—উদ—দৌলা বলেন, নজরখালি ফসল রক্ষা বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় ফসলের কোন ক্ষতি হয়নি। তবে এ বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় উপজেলার বৃহৎ শনির হাওর এবং মাটিয়ান হাওরটি নিরাপদ হয়ে গেলো।