
প্রিন্স মন্ডল অলিফ, চিতলমারী(বাগেরহাট)নিজস্ব প্রতিনিধি
গতকাল ১৫ ই মার্চ আনুমানিক সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৬.৩০ এর মধ্যে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার দড়ি উমাজুড়ি উত্তর পাড়ায় স্বামীর বাড়ীতে বসে সিলিং ফ্যানের রড এর সাথে গামছা দিয়ে এই মর্মান্তিক আত্মহত্যা সংঘটিত হয়। ঘটনার বিবরনে জানা যায় গত সোমবার ১০ ই মার্চ দড়ি উমাজুড়ি উত্তর পাড়া নিবাসি অরুন বৈরাগির বড় ছেলে বিষ্ণু বৈরাগির ( ২৫) সহিত পিপড়ার ডাংগা নিবাসি শ্যাম মন্ডল এর বড় মেয়ে ঈশিতা মন্ডলের (১৮) শুভ বিবাহ ধুমধামের সহিত সু সম্পন্ন হয়। বিষ্ণু বৈরাগি পেশায় একজন কৃশক কিন্তু ঈশিতা এবার একাদশ শ্রেণির ২য় বর্ষে বাবু কালিদাস বড়াল মহাবিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত।
ছেলের পরিবারের সহিত কথা বলে জানা যায় সদ্য বিবাহিত পুত্রবধুকে নিয়ে বেশ সুখেই তারা দিন যাপন করছিলেন। নিজের মেয়ে না থাকায় পুত্র বধুকে নিজের মেয়ের মতই শ্নেহ করতেন কিন্তু তাদের এই সুখ শুরুর আগেই শেষ হয়ে গেল। পুত্র বধুর এই অকাল মৃত্যুতে তাদের পরিবারের সবাই পাগল প্রায়। এদিকে পিপড়ার ডাংগা মেয়ের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তাদের পরিবারের এক করুন অবস্থ্যা। মেয়ের বাবা শ্যাম মন্ডল বলেন গত সোমবার পাড়া প্রতিবেশি ও আত্মীয় স্বজন্দের উপস্থিতে সাধ্যমত ধুমধামের সহিত মেয়ের বিবাহ সম্পন্ন করি। মেয়েকে বিয়ের আগে আমি একাধিকবার প্রশ্ন করেছি তার কোন পছন্দ বা অপছন্দ আছে কিনা, কিন্তু মেয়ে আমাকে স্পস্ট ভাষায় বলে দিয়েছে তার বাবার পছন্দ ই তার পছন্দ। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন এই কথার উপর ভিত্তি করেই তারা পিপড়ার ডাংগা নিবাশি অরুন বৈরাগির বড় ছেলে বিষ্ণু বৈরাগির ( ২৫) সহিত এই বিবাহের সম্মন্দ ঠিক করেছি ও বিবাহ দিয়েছি। খুব সুখেই আমার মেয়ে তার স্বামীর বাড়িতে ছিল, এমনকি গত ২ দিন পূর্বে জামাই মেয়ে আমাদের বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেছে কিন্তু কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দেয়নি। আমার মেয়ের বড় ইচ্ছা ছিল সে লেখা পড়া শেষ করে পুলিশে যোগদান করবে। নিয়তির নির্মম পরিহাস আমার মেয়ের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল যা আর কোনদিন ই বাস্তবে রুপায়িত হবেনা। এই শোকের ভিতর ও তিনি নিজ ইচ্ছায় একাধিকবার বলেন এই মৃত্যুতে আমার জামাই কিংবা তার পরিবারের কারো বিরুদ্ধেই আমার কোন অভিযোগ নাই তারা খুব ভালো মানুষ।
৭নং সন্তোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ড এর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বাবু গোলক মজুমদার বলেন আমার জানামতে এদের সংসারে কোন ঝামেলা ছিলনা, সদ্য বিবাহিত পুত্র বধুকে নিয়ে বেশ সুখেই ছিল এদের সংসার। সন্তোষপুর ইউনিয়ন এর বিএনপির সাভেক সভাপতি কাজী লায়েকুজ্জামান বলেন আমি বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে পাশেই লোকজনের সাথে কথা বলছিলাম তখন লোক্মুখে শুনে এখানে এসেছি তবে আমার জানামতে ছেলেটি খুবই ভালো।
চিতলমারী থানার সাব ইন্সপেক্টর জনাব মোঃ শরিফ বলেন, ‘বিষয়টি প্রাথমিক ভাবে আমাদের কাছে আত্মহত্যা বলে মনে হয়েছে। মেয়ের পরিবার থেকে ও কোন অভিযোগ দ্বায়ের করা হয়নি বর্তমানে এ বিষয়ে থানায় একটি ইউ ডি মামলা হয়েছে যার নং – ৭/২৫। যেহেতু মেয়েটি সদ্য বিবাহিত আর এটি একটি অস্বাভাবাকিক মৃত্যু এই কারনে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে মরাদেহটি ময়নাতদন্তের জন্ন বাগেরহাট প্রেরন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর আসল রহস্য উন্মমোচন হবে এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা সম্ভব হবে।তবে এই বিষয়টিতে কেউ সংক্ষুব্ধ থাকলে থানায় অভিযোগ করতে পারে। অভিযোগ পেলে আমরা খতিয়ে দেখব।