
ফাহিম হোসেন ।। নারায়ণগঞ্জ সদর (নারায়ণগঞ্জ) শিক্ষানবিশ প্রতিনিধি :
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জে সমাপ্তি ঘটল সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের। আগামী বছর শরৎ কালে আবার মর্ত্যে আসবেন দেবী দুর্গা।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে যা তার বাবার গৃহ। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে নারায়ণগঞ্জে শুরু হয় বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতা। প্রত্যেক মন্ডপ থেকে প্রতিমা ট্রাকে করে বের করা হয়। এরপর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক হয়েছে চাষাড়া প্রদক্ষীণ করে আবার বঙ্গবন্ধু সড়ক হয়ে দুই নম্বর রেলগেল দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। ঢাকের বাদ্য আর গান-বাজনা ছাড়া বিদায়ের করুণ ছায়ায় সারিবদ্ধভাবে একে একে শীতলক্ষ্যা নদীতে বিসর্জন দেয়া হয় প্রতিমা।
এ সময় সড়কে পুলিশের ও নদীতে ছিল নৌ-পুলিশের টহল দেখা যায়। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরাও তাদের দায়িত্ব পালন করে।
এর আগে শনিবার সকাল ৮টা থেকে রবিবার ভোর ৪টা পর্যত শহরের মন্ডপ-মন্দিরে ‘বিহিত পূজা’ অনুষ্ঠিত হয়। রবিবার ভোরে পুষ্পাঞ্জলি, সমাপন ও দর্পণ বিসর্জণ হয়। পরে দুপুরে মন্দিরগুলোতে সিদুর খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে যা সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে। সন্ধ্যার পর শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতা।
অধিকাংশ মন্ডপে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হলেও নিতাইগঞ্জের শ্রী শ্রী বলদেব জিউর আখড়া ও শিব মিন্দরের প্রতিমাটি রেখে দেয়া হয়। কিন্তু পূজার কাজে ব্যবহৃত দেবীর ফুল, বেলপাতা ও ঘট বিসর্জন দেয়া হয় বলে জানান মন্দির কমিটির সভাপতি জয় কে রায় চৌধুরী।
প্রথা অনুযায়ী প্রতিমা বিসর্জনের পর সেখান থেকে জল এনে (শান্তিজল) মঙ্গলঘটে নিয়ে তা আবার হৃদয়ে ধারণ করা হয়। আগামী বছর আবার এ শান্তিজল হৃদয় থেকে ঘটে, ঘট থেকে প্রতিমার সামনে রেখে পূজা করা হবে। রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ধ্যা আরতির পর মিশনের পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়। এরপর ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ করেন ও মিষ্টিমুখ করেন।
প্রসঙ্গত, এবছর নারায়ণগঞ্জ জেলা ২১৪টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। যার মধ্যে শহরে ৪৩টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়।