
মো: পিয়াস,পূর্বধলা (নেত্রকোনা) শিক্ষানবিশ প্রতিনিধি:
নেত্রকোনার পূর্বধলায় রাস্তার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা নারীর লাশের পরিচয় ও হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পূর্বধলা থানা পুলিশ।
নিহত ওই নারীর নাম আনোয়ারা আক্তার (৩০)। তিনি ময়মনসিংহ শহরের আকুয়া চৌরাঙ্গীর মোড় এলাকার মনসুর মিয়ার স্ত্রী।
ওই নারীর লাশের পাশে উদ্ধার হওয়া দুই বছর বয়সী শিশুটির নাম আলিফ। সে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।
এই হত্যাকাণ্ডের ১৩ দিন পর (৯ জুন) তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যার সাথে জড়িত অলিউল্লাহ (১৮) নামের এক যুবককে গৌরীপুর উপজেলার ডেঙ্গার মোড় নামকস্থান থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত অলিউল্লাহ ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সনউড়া গ্রামের মরহুম ইব্রাহিমের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত আনোয়ারার সাথে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে কালা মিয়ার সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। আব্দুর রাজ্জাক ওরফে কালা মিয়া পূর্বধলা উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের পানিশানা গ্রামের মৃত আলী হোসেনের ছেলে। ঘটনার আগের দিন মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে কৌশলে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি যাওয়ার কথা বলে শিশু আলিফকে সাথে করে কালা মিয়ার সাথে তিনি বেরিয়ে যান। পরে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে কালা মিয়া তার পূর্ব পরিচিত অলিউল্লাকে হত্যার পরিকল্পনার জন্য তিন হাজার টাকার বিনিময়ে ভাড়া করেন। তারা সারাদিন সিএনজিতে ঘোরাঘুরি করার পর চেতনা নাশক ওষুধ প্রয়োগ করে তাদেরকে অজ্ঞান করে। বুধবার (২৯ মে) শেষ রাতের দিকে পূর্বধলা উপজেলার বিশকাকুনি ইউনিয়নের কাছিয়াকান্দা গ্রামে ওরা দু’জনে মিলে মাথায় কুপিয়ে হত্যা করে।
পুলিশ খোঁজ নিয়ে আরো জানতে পারে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে কালামিয়ার নামে ২০০৬ সালে একটি হত্যা মামলা রয়েছে।
এ দিকে, একটি বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার গ্রামের বাড়ি ঘাগড়া ইউনিয়নের পানিশানাতে ও ময়মনসিংহের আকুয়া বাসায় একযোগে তল্লাশি চালালে আকুয়া বাসায় অবস্থান করার সময় খুনের অনুশোচনায় রোববার (৯ জুন) বিষ পান করে কালা মিয়া আত্মহত্যা করেছেন। তার লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে মর্গে রয়েছে।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, নিহত মনোয়ারা আক্তারের পরিচয় কোনোভাবেই শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। পরিচয় শনাক্তের জন্য বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম, লিফলেট বিতরণ, সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা করা হয়। ফলে প্রতিবেশী একজন ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করেন। শনাক্ত হওয়ার পর তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যার সাথে সম্পৃক্ত অলিউল্লাহ নামের এক যুবককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন। তাকে সোমবার (১০ জুন) আদালতে পাঠানো হয়েছে।