
মোঃ সুমন ভূঁইয়া, নোয়াখালী বিশেষ প্রতিনিধি
নোয়াখালীর সবর্ত্র গড়ে উঠেছে চক্ষ হাসপাতাল। বিশেষ করে বেগমগঞ্জে এর সয়লাভ বেশী। উপজেলার চৌমুহনী, চৌরাস্তা সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি হাসপাতাল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাগজ পত্রের তোয়াক্কা না করে চলছে এসব হাসপাতাল। নেই কোন আধুনিক যন্ত্রপাতি, নেই কোন টেকনলোজিস্ট।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন হাসপাতালে র ্যাব দিয়ে অভিযান চালানো হলে ও চক্ষু হাসপাতাল গুলোতে অভিযান পরিচালনা করা হয় না।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার বেগমগঞ্জে রয়েছে বেশ কয়েকটি চক্ষু হাসপাতাল। এদের মধ্যে নোয়াখালী চক্ষু হাসপাতাল, নোয়াখালী আধুনিক চক্ষু হাসপাতাল, অন্ধকল্যান, সেন্টালসহ রয়েছে বেশ কয়েকটি চক্ষু হাসপাতাল। তাদের কাছে সরকারী নীতি মালা অনুযায়ী কোন কাগজ পত্র নেই। নেই কোন আধুনিক যন্ত্রপাতি, নেই কোন প্যাথলজসিস্, নেই কোন সরকারী নিয়ম অনুসারে নিয়োগকৃত নার্স।
এদের মধ্যে নোয়াখালী চক্ষু হাসপাতালের অবস্থা নাজুক। তারা ব্যাপক আকারে অনিয়ম করে আসছে, তাদের হাসপাতালে চোখের রোগী দেখার পাশাপাশি চশমা বিক্রি, ওষুধ বিক্রি করা হয়। কিন্তু চশমা বানানোর কোন টেকনলজিস্ট নেই, একজন ফার্মাসিস্ট দিয়েই চলে সার্বক্ষনিক ঔষধ বিক্রি, এছাড়া তারা প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন জায়জায় বিনা মূল্যে ক্যাম্প করে ডাক্তার দিয়ে। ওখানে সিভিল সার্জনের অনুমতি নেওয়া হয় না, সিভিল সার্জন অনুমতি বিহীন ক্যাম্পে ডাক্তার রোগী দেখে চানি পড়া, নেত্রনালী বন্ধ হওয়া সহ বিভিন্ন রোগীদের স্বল্প খরচের প্রলোভন দেখিয়ে ২শ, ৫শ, ১ হাজার টাকা দিয়ে ভর্তি করানো হয়। রোগি না আসলে ওটা হাসপাতালের খাতায় জমা হয়। ভর্তি কৃত রোগী আসলে অত্যন্ত নির্ম মানের লেন্স দিয়ে অপারেরশন করিয়ে আনা হয় ৩ মাসের জন্য ফলোআপ। ফলোআপে প্রতিবার গুনতে হয় ডাক্তারের ভিজিট। এভাবে লাখ লাখ টাকা তারা হাতিয়ে রোগীদের সর্বশান্ত করছে। উল্লেখ্য, নোয়াখালী চক্ষু হাসপাতালে কোন চশমার বিশেষজ্ঞ টেকনোলজিস দ্বারা চশমা তৈরী হয় না, ওখানে নিম্ম শ্রেনী লোক দিয়ে চশমার ফাওয়ার অনুযায়ী চশমা তৈরী করা হয়। নেই কোন আধুনিক যন্ত্রপাতি, দক্ষ কোন নার্স, এবং ভাল পরিবেশ নেই বললেই চলে।
এছাড়া তাদের রয়েছে রেগুলার রোগীদের জন্য একটি অপারেশন শার্ট, ঐ শার্ট অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ম না মেনে খুশী মত রোগীদের কাছ থেকে বিশাল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিম্ম মানের লেন্স স্থাপন করা হয়।
বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুর গ্রামের মোকলেছুর রহমান জানান (৬০) ১৫ হাজার টাকা দিয়ে আমেরিকার লেন্স লাগানোর হয় আমার, অপারেশনের পর থেকে তিনি চোখে তেমন দেখেন না, এরপর নেওয়া হয় ফলোআপে ৩ মাস ডাক্তারের ফিস দিয়ে সকল নিয়ম মেনে ও তার তার চোখের দৃষ্টি ফিরে পান নি তিনি। তিনি অভিযোগ করে জানান, তারা আমার অপারেশন করানোর আগে বলছিলো আমি ঠিক মতে দেখতে পাবো, কিন্তু অপারেশন করার পর ও আমি ঠিক মতে দেখি না, আমার চোখ অন্ধত্বের পথে। এখন তারা বলছে বাকী চোখ অপারেশন করতে। অথচ আমি ঢাকা ইসলামীয়া হাসপাতালে যাওয়ার পর ওরা বলছে, আপনার চোখের অপারেশন নিম্ম মানের লেন্স দ্বারা অপারেশন করার করানে আপনি দৃষ্টি শক্তি আর ফেরত পাবেন না।
এমতাবস্থায় অত্র অন্ঞলের সর্বসাধারনের দাবী হচ্ছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতাল চালানো।
উল্লেখ্য, নোয়াখালী চক্ষু হাসপাতাল সহ আরো কয়েকটি হাসপাতাল বিনা মূল্যে চক্ষু চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে যাচ্ছে। এলাকার সর্ব সাধারন এই প্রতারনা থেকে মুক্ত হতে চায়। এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের দৃষ্টি কামনা করছে সবাই।
এই বিষয়ে সিভিল সার্জন মাসুম ইফতেকার বলেন, কোন হাসাপাতাল কোথাও কোন ক্যাম্প করতে হলে অবশ্যই সিভিল সার্জনের অনুমতি নিতে হবে, অভিযোগ পেলে আমরা আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। এছাড়া শীর্ঘই এসব অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।