
১০ টাকার টিকেট কে কেন্দ্র করে পর্যটকের উপর হামলার ঘটনায় জাফলং এ পর্যটকদের ভিড় কমেছে ৷ প্রকৃতিকন্যা খ্যাত সিলেটের জাফলংয়ে হামলার ঘটনায় পর্যটকদের উপস্থিতি কমে গেছে।
৬ মে শুক্রবার মাত্র হাজার খানেক পর্যটককে জাফলংয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাস করতে দেখা গেছে। অথচ বিগত তিনদিন জাফলংয়ে পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল আজকের তুলনায় প্রায় ৫০ গুণের বেশি।
জাফলং পর্যটন কেন্দ্রে টিকিট (প্রবেশ ফি) কাটাকে কেন্দ্র করে ৫মে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় অতর্কিত হামলার শিকার হন ঢাকার কয়েকজন পর্যটক। ঘটনার ৪ঘন্টা পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হামলার ভিডিও ভাইরালের পরপরই কঠোর পদক্ষেপ নেয় জেলা ও পুলিশ প্রশাসন। হামলাকারী পাঁচজন স্বেচ্ছাসেবককে আটক করা হয়। তারপরও এ ঘটনায় পর্যটক উপস্থিতিতে প্রভাব পড়েছে জাফলংয়ে। জফলংয়ের ঘটনায় সিলেট জেলার অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রে গুলোতে ভিড় দেখা গেছে।
৬মে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় ঈদের আমেজ এখনো কাটেনি। ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর আর বিছনাকান্দিতে পর্যটকদের ভিড় অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গোয়াইনঘাটের জাফলং হতে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সবুজ পাহাড় আর পাহাড় হতে নেমে আসা ঝরনা ধারা সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করত পর্যটকদের।
বিছনাকান্দি, জৈন্তাপুরের সারি নদী, কোম্পানি গঞ্জের সাদাপাথর, উৎমাছড়া এবং মিঠাপানির একমাত্র জলারবন রাতারগুলের সবুজের সমারোহে পর্যটকদের ভিড় থাকে সবসময়ই।
নরসিংদী হতে সিলেটে ঘুরতে আসা মানিক মিয়া বলেন, যতবার সিলেট ঘুরতে আসি ততবারই জাফলং ঘুরতে যাই এছাড়া আজও আসলাম। শুনেছি বৃহস্পতিবার এখানে পর্যটকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ আর সেই পরিবেশ নেই। পুলিশের উপস্থিতি আছে। তারা পর্যটকদের আনন্দ-বিনোদনে সহায়ক ভূমিকা রাখছেন।
খুলনার হতে জাফলংয়ে বেড়াতে আসা ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন বলেন, সিলেটে ঘুরতে আসবো আসবো করে বিগত দুটি বছর করোনার সংক্রমণের কারণে আর আসা হয়নি। এবার স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এসে অনেক ভালো লাগছে।
সিলেটের পর্যটন কেন্দ্র গুলো দেশের অন্য পর্যটন এলাকা গুলো থেকে একটু আলাদা। তাই এখানে ঘুরতে এলে ভালোই লাগে।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী আবুল হোসেন মো. হানিফ জানান, বৃহস্পতিবার পর্যটকদের ওপর হামলার পর শুক্রবার জাফলংয়ে পর্যটকের সংখ্যা কমেছে। গত তিনদিন জাফলংয়ে লোকে লোকারণ্য থাকলেও আজ বন্ধের দিন শুক্রবারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ জাফলং জোনের ওসি রতন শেখ বলেন, ‘জাফলংয়ে পর্যটকদের সংখ্যা এ বছর বেড়েছে। আজ শুক্রবারও পর্যটক ঘুরতে এসেছেন। পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ আন্তরিক ভাবে কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় আটক পাঁচজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আজ বিকেলে সিলেটের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পর্যটকদের ওপর অতর্কিত হামলার পর ঈদ উপলক্ষে আগামী সাতদিন প্রবেশ ফি নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে এ নির্দেশনা কার্যকরা হয়েছে।
স্থায়ী ভাবে প্রবেশ ফি বন্দের দাবী জানিয়ে শুক্রবার মানব বন্ধন পালন করেছে বৃহত্তর জৈন্তা ছাত্র ঐক্য পরিষদ৷ তারা অভিলম্বে প্রবেশ ফি বাতিলের দাবী জানিয়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ৷ এছাড়া বৃহত্তর জৈন্তার অরাজনৈতিক সংগঠনে ১৭ পরগনার জরুরী বৈঠকের আহবান জানানো হয়েছে ৷