
বরুন কান্তি সরকার,নিজস্ব প্রতিবেদক নাসিরনগর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ডাকাতকে গ্রেফতার করে কাঁধে করে তুলে আনা সেই পুলিশ সদস্যরা পুরস্কার পাচ্ছেন।পুরস্কার প্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন,পুলিশের উপ-পরিদর্শক রুপন নাথ, উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক কামরুল ইসলাম, পুলিশ সদস্য মো.জাফর ও মো. রানা।তাদের পুরস্কৃত করার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন। সোমবার (২৫ মার্চ) সকালে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গত শুক্রবার (২২ মার্চ) ইফতারের আগ মুহূর্তে উপজেলার হরিপুরের একটি জমি থেকে জীবন নামে এক ডাকাতকে গ্রেফতারের পর কাঁধে করে তুলে আনে পুলিশ। গ্রেফতার জীবন ওই এলাকার হুসেন আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক ডাকাতি মামলা আছে।সম্প্রতি তিনি মাধবপুর-হরিপুর সড়কে ডাকাতি করতে শুরু করেন।
পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত শুক্রবার ইফতারের আগ মুহূর্তে (২২মার্চ) জীবনের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে নাসিরনগর থানা পুলিশ। ডাকাত জীবনকে গ্রেফতারের দায়িত্বে থাকা নাসিরনগর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই)রূপন নাথ উপ সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) কামরুল ইসলাম ও দুই পুলিশ সদস্যকে নিয়ে হরিপুরে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন জীবন তার সঙ্গীদের দিয়ে একটি জমিতে বসে ‘ইয়াবা’ সেবন করছেন। তখন পুলিশ সদস্যরা সেখানে সাদা পোশাকে অবস্থান নেন।
একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের পক্ষে গিয়ে জীবন ও তার সঙ্গীদের কাছে পানি চাওয়া হয়। অবস্থা বুঝে তখন জীবনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরানো হয় হাতকড়াও। কিন্তু পুলিশ সদস্য রানার হাতে কামড় দিয়ে ও ধস্তাধস্তি করে হাতকড়া নিয়েই দৌঁড়ে পালান জীবন। পরে পুলিশ ছুটে গিয়ে আবার তাকে আটক করেন। এরপরও তাকে বাগে আনা যাচ্ছিল না। একপর্যায়ে উপ সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) মো. কামরুল ইসলাম তাকে কাঁধে তুলে নেন। কিছুদূর আনার পর তাকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে কড়া পুলিশ পাহারায় নাসিরনগর থানায় নিয়ে আসা হয়।
ডাকাতকে কাঁধে তুলে আনার ছবি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সবাই উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) কামরুলের সাহসিকতার প্রসংশা করেন। এই কাজের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার তাদেরকে পুরস্কৃত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
এই ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন সোমবার সকালে গণমাধ্যমকে জানান, প্রতিটি ভালো ও প্রশংসা কাজে আমরা পুরস্কৃত করে থাকি। এই পুরস্কারে যেন অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা অনুপ্রাণিত হন, তাই আমরা নাসিরনগরে ডাকাত ধরে প্রশংসিত হওয়া পুলিশ সদস্যদের পুরস্কৃত করার ঘোষণা দিয়েছি। আগামী কল্যাণ সভায় তাদের হাতে পুরস্কারের অর্থ তুলে দেয়া হবে।
ডাকাতকে কাঁধে নেওয়া উপ-সহকরি পুলিশ পরিদর্শক কামরুল ইসলামকে পুরস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ পুরস্কার আমাদের কাজের গতিকে আরো বাড়িয়ে দিবে। পুলিশ সবসময়ই জনগনের বন্ধু।