
হারুন-উর-রশীদ বকশীগঞ্জ(জামালপুর)প্রতিনিধি
জামালপুরের বকশীগঞ্জে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রাস্তা নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার সকালে অনিয়মের কারণে রাস্তার নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তবে উপজেলা প্রকৌশলী পুরাতন নির্মাণ সামগ্রী অপসারণ করে নতুন করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে বকশীগঞ্জ উপজেলার নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নের বিনোদর চর গ্রাম হতে দশানী নদীর পাড় পর্যন্ত এক হাজার ৭৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এলজিইডির রাস্তাটির কাজ পায় স্মার্ট কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। রাস্তাটির নির্মাণ চুক্তি মূল্য ধরা হয়েছে এক কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
গত বছরের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর কাজ টি কিনে নেন মো. শাজাহান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি।
সম্প্রতি রাস্তাটির মাটি ভরাটের পর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। রাস্তার নির্মাণ কাজ শুরুতেই স্থানীয়দের তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছামত নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করতে থাকেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন।
পুরাতন সিসি রাস্তার খোয়া ও নি¤œমানের ইটের খোয়া বিছানো হয় রাস্তায়। পাশাপাশি অর্ধেক বালু অর্ধেক খোয়া দেওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিজের মত করে পুরাতন খোয়া ব্যবহার করেন। ইতোমধ্যে ২শ মিটার রাস্তায় নি¤œমানের ইটের খোয়া ও পুরাতন রাবিশ ব্যবহার করা হয়েছে। এমনিতেই পুরাতন খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে তারপরও বালুর পরিমাণ বেশি দেওয়া হয়।
বিষয়টি স্থানীয় বিনোদর চর এলাকাবাসীর নজরে এলে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এলাকার লোকজন অনিয়মের বিষয়ে কথা বলতে গেলে ঠিকদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে চাঁদাবাজী মামলা দায়েরের হুমকি দেওয়া হয়।
পরে বুধবার (১৯ মার্চ) সকালে নি¤œমানের সামগ্রী দিয়ে আবারও কাজ শুরু করলে এলাকাবাসী এর প্রতিবাদ জানিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, তিন দিন থেকে অনিয়মের মধ্য দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এলজিইডির তদারকি কর্মকর্তাকে ছাড়াই পছন্দসই সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে।
আমরা স্টিমেট চাইলে তারা না দিয়ে উল্টো আমাদের নামে মামলা দেওয়ার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা চাই এই রাস্তা নির্মাণে যেভাবে নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কথা বলা আছে সেভাবেই যেন সরবরাহ করা হয়।
তাই আমরা রাস্তায় অনিয়মের কারণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এব্যাপারে ঠিকাদার মো. শাজাহানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সিসি ঢালাইয়ের রাস্তার খোয়া গুলো সংরক্ষণ করে এক জায়গায় রাখা আছে। সেগুলো রাস্তায় ব্যবহার করা হয় নি।
কাজের অনিয়মের কথা স্বীকার করে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. শামছুল হক জানান, অনিয়মের কারণে বর্তমানে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। যেসব স্থানে নি¤œমানের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো অপসারণের জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাজের মান যেন যথাযথ হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখব।