
মোঃইনামুল হক বদরগঞ্জ(রংপুর)শিক্ষনবিশ প্রতিনিধিঃ
রংপুরের বদরগঞ্জে পুলিশ সদস্যদের বাগ্বিতণ্ডার ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করার সময় সালাম বিশ্বাষ নামের এক সাংবাদিককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। পরে পুলিশ সদস্যরা ওই সাংবাদিককে চেংদোলা করে তুলে থানায় নিয়ে যান। গতকাল বুধবার বেলা তিনটার দিকে বদরগঞ্জ থানার মূল ফটক থেকে প্রায়র ১০৩ গজ দূরে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী আবদুস সালাম বিশ্বাস বতর্মানে দৈনিক আমার দেশের বদরগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি হিসাবে কর্মরত । তাঁকে বদরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক আহসান হাবীব জানান, আবদুস সালামের বাঁ হাতে ও পায়ে আঘাতের কারণে কিছুটা ফুলে গেছে।
আবদুস সালাম বিশ্বাস বলেন, গতকাল বেলা তিনটার দিকে তিনি বদরগঞ্জ থানার মূল ফটক থেকে ১০৩ গজ দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় থানার ভেতর থেকে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান তাঁর সামনে এসে থামে। পিকআপ ভ্যানের ভেতরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য বাগ্বিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এ দৃশ্য তিনি মুঠোফোনে ভিডিও করছিলেন। তখন কনস্টেবল আল আমিন (২৩) তাঁকে ভিডিও করতে নিষেধ করেন।
সালাম বিশ্বাসের ধারণ করা ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ‘ওই পুলিশ সদস্য (আল আমিন) ক্ষিপ্ত হয়ে বলতে থাকেন, ‘ভিডিও বন্ধ না করলে পিটাব।’ একপর্যায়ে তিনি থাবা দিয়ে মুঠোফোনটি কেড়ে নেন।
আবদুস সালাম অভিযোগ করেন, ‘মুঠোফোন কেড়ে নেওয়ার পর পুলিশের ওই সদস্যসহ পিকআপ ভ্যান থেকে নেমে এসে আরও তিনজন পুলিশ সদস্য তাঁকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে কিলঘুষি মারেন। এরপর ওই পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে তাঁকে চেংদোলা করে ধরে থানার ভেতরে নিয়ে যান।
ওই ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলায় কর্মরত অন্তত ১০ সংবাদকর্মী থানায় ছুটে যান। পরে পুলিশ সদস্যদের ওই কর্মকাণ্ডে দুঃখ প্রকাশ করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরাও ক্ষমা চান।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে কনস্টেবল আল আমিন বলেন, ‘আমরা নিজেদের সমস্যা নিয়ে উচ্চ স্বরে কথা বলছিলাম। এ সময় মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করছিলেন আবদুস সালাম। তাঁর পরিচয় জানতে চেয়ে ভিডিও করতে বারণ করি। কিন্তু তিনি তা শোনেননি। এ কারণে মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে তাঁকে থানার ভেতরে নিয়ে যাই। তাঁকে কোনো মারপিট করিনি। তবু ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে থানায় উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে মাফ চেয়েছি।’
ওসি এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ওই পুলিশ সদস্যরা রংপুর পুলিশ লাইনস থেকে বদরগঞ্জ থানায় এসেছিলেন। দায়িত্ব পালন শেষে তাঁরা ওই সময়ে থানা থেকে রংপুরে যাচ্ছিলেন। থানা ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা ওই সংবাদকর্মীর সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে অপেশাদারি আচরণ করেছেন। পরে তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যস্থতায় ঘটনাটি আপস–মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে।