মোঃ ইনামুল হক, বদরগঞ্জ(রংপুর)শিক্ষানবিশ প্রতিনিধিঃ
রংপুরের বদরগঞ্জ এর পৌরশহরের শহীদ মিনার সংলগ্ন ফুটপাত মার্কেটে বেশ সময় নিয়ে একটি জ্যাকেট দেখছিলেন রোস্তম আলী। দোকানদারের সঙ্গে দামে বনিবনা না হলেও সেটি গায়ে চাপিয়ে নিলেন। এবার দর-কষাকষির একপর্যায়ে দোকানদারের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘দিলে দিবা, না দিলে না দিবা। আমি একশত আশি টাকায় দিব।’ দোকানদারের মন গলে গেল। একশত আশিতেই বিক্রি করলো জ্যাকেটটি।
এদিকে শীতের কারণে জনজীবনে কিছুটা স্থবিরতা নেমে এসেছে। কর্মচঞ্চলতাও কিছুটা কমেছে। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সন্ধ্যা হলেই শহর ও গ্রামের হাটবাজারের মানুষ বাসায় চলে যাচ্ছেন। মানুষের সকালটাও দেরিতে শুরু হচ্ছে। পোশাক-আশাকেও এসেছে পরিবর্তন। সবাই গরম কাপড় পরছেন। শীত বাড়ায় গরম কাপড়ের দোকানেও ভিড় চোখে পড়ার মতো।
শীত বাড়লেই শহরের শহীদ মিনার সংলগ্ন থেকে হক সাহেবের মোড় পর্যন্ত এবং উপজেলার গ্রামের হাটগুলোতে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড়। ফুটপাতে দুই ধারে বসা দোকান ও গ্রামের হাট গুলোর দোকানে ২০ থেকে ৫০০ টাকায় গরম কাপড় বিক্রি হয়। সকাল থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত এখানে উপচে পড়া ভিড় লেগে থাকে। নিম্ন আয়ের মানুষেরা সেখানে বেশি ভিড় করেন বলে অনেকেই ‘গরিবের মার্কেট’ বলে থাকেন। শেখেরহাটে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় কোট বিক্রি করছিলেন আনিছুল ইসলাম, বললেন, এই কোট দোকানে-শোরুমে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু তিনি বিক্রি করছেন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। সেখান থেকে একটি কোট কিনলেন হামিদ মিয়া নামের এক ব্যক্তি। তিনি ফুটপাতে একটি খাবারের দোকান চালান। বললেন, ‘ভেতরে অন্য কাপড় পরে বাইরে কোট পরলে শীত কম লাগবে। একটু ধুয়ে ইস্তিরি করে পরলে একেবারে নতুন হয়ে যাবে। তখন কেউ বলবে না যে এটা ৪০০ টাকার।’
পৌরশহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে গোপীনাথপুর থেকে শহীদ মিনার সংলগ্ন মার্কেটে শীতের কাপড় কিনতে এসেছেন দুই নারী। সঙ্গে নিয়েছেন তাঁদের ছেলেমেয়েদের। এক নারী বলেন, শহরে তো শীত একটু কম। গ্রামে টেকা যায় না। শহরে ফুটপাতে কম দামে শীতের কাপড় বিক্রি হয় বলে এসেছেন। এখন দেখছেন ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় ভালো কাপড় পাওয়া যাচ্ছে।
বদরগঞ্জ পৌরশহরের এই ফুটপাতের মার্কেটে প্রতি শুক্রবারে অন্তত ৪ থেকে ৬ লাখ টাকার শীতবস্ত্র বিক্রি হয়। ব্যবসায়ীরা সেখানে শীতের বাহারি পোশাক নিয়ে বসেন। ডন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, শুক্রবারে শহরের প্রায় সব দোকান বন্ধ থাকে। বড় বড় বিপণিবিতানের দোকানের কর্মচারীরা সপ্তাহে ছুটির দিনে এই এক দিন ব্যবসা করেন। সব শ্রেণির মানুষ কাপড় কিনতে সেখানে যান।