
জাকির হোসেন, বেনাপোল(শার্শা)প্রতিনিধি:
যানজট নিরসনের লক্ষ্যে গত এক সপ্তাহ আগে যশোরের জেলা প্রশাসকের সাথে স্থানীয় সুধীসমাজ এবং পরিবহন কর্মকর্তাদের সাথে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।সে বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বেনাপোল চেকপোস্ট এবং বেনাপোল বাজার থেকে যে সব পরিবহণ বাসগুলি বা লোকাল বাসগুলি বেনাপোল-যশোর-ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলাশহরে ছেড়ে যায়।
সেই সব বাসগুলি এখন থেকে বেনাপোল বাজার থেকে চার কিলোমিটার দূরে পৌরবাস টার্মিনাল থেকে ছাড়তে হবে। ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে আসা পরিবহন বাসগুলোর যাত্রী ভোরে বেনাপোল চেকপোস্টে নামিয়ে দিয়ে সে বাসগুলি আবার টার্মিনালে চলে যাবে।
হঠাৎ করে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দিবাগত রাত তিনটার দিকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পরিবহন বাসগুলির যাত্রীদের টার্মিনালে জোরপূর্বক নামিয়ে দেওয়ায় ঐ যাত্রীগুলো হয়রানির শিকার হয়।
কোন কিছু না জানিয়ে প্রশাসনের এ ধরনের সিদ্ধান্তের কারণে বেনাপোল বাস মালিক সমিতি সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
অনেক পাসপোর্ট যাত্রী অভিযোগ করে বলেন পার্শ্ববর্তী ভারতের পেট্রাপোলে যাত্রীদের সুবিধার্থে ইমিগ্রেশনের সাথেই নির্মাণ করা হয়েছে যাত্রী টার্মিনাল কিন্তু বাংলাদেশে বর্ডার সংলগ্ন বন্দরের নিজস্ব চালু থাকা টার্মিনাল বন্ধ করে দিয়ে, ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পৌরসভার বাস টার্মিনালে পাঠানো হচ্ছে যাত্রীদের।
এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পাসপোর্ট যাত্রীদের।
পাসপোর্ট যাত্রী মেহেদী হাসান জানান ঢাকা থেকে জার্নি করে আসার পর, প্রাই ৪ কিলোমিটার দূরে পৌর টার্মিনালে বাস থেকে, রাত ৩ টার সময় নামিয়ে দিয়েছে।পরে ২ ঘন্টা একটি চায়ের দোকানে বসে সকাল হওয়ার পর একটা ইজিবাইক নিয়ে বর্ডারে এসেছি।একজন পাসপোর্টধারী যাত্রীর নিকট থেকে বাংলাদেশ স্থলবন্দর পোর্ট ব্যবহারের জন্য পোর্ট চার্জ বাবদ টাকা নিয়ে থাকেন।তাহলে পোর্ট আমাদের কি সেবা দিলো।আমরা চাই চেকপোস্টে অবস্থিত স্থলবন্দর বাস টার্মিনাল থেকে বাস গুলো পূনরায় চালু হোক।
এ ব্যাপারে পরিবহন সমিতির সভাপতি বাবলুর রহমান বাবু জানান, কয়েকদিন আগে যশোর জেলা প্রশাসকের সাথে আমাদের এবং স্থানীয় সুধী সমাজের সাথে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ।বৈঠকে যানজটের কথা বলে সকল পরিবহন বাস গুলি চেকপোস্টের টার্মিনাল থেকে সরিয়ে নিয়ে, বেনাপোল থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে কাগজপুকুর টার্মিনালে নিয়ে যায় এবং গাড়ি সেখান থেকেই ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে আসা বাসের যাত্রী গুলো বেনাপোল চেকপোস্টে নামিয়ে দিয়ে পৌর বাস টার্মিনাল কাগজপুকুরে চলে যাচ্ছিল।দিনের ট্রিপ না থাকায় বাসগুলি আমরা বেনাপোল চেকপোস্ট এবং বেনাপোল বাজার থেকে রাত আটটা থেকে সকাল আটটার মধ্যে ছাড়ছিলাম। আর বাকি সারাদিন টার্মিনাল থেকেই গাড়ি ছাড়া হচ্ছিল ।
হঠাৎ করে শুক্রবার রাত তিনটার দিকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দূরপাল্লার বাসগুলো আসার পর, সে সব বাসের যাত্রীদের কে জোরপূর্বক টার্মিনালে নামিয়ে দেয়, এ সময় যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এবং হয়রানির শিকার হয়। পরে সেই যাত্রীগুলো লোকাল বাসে করে চেকপোষ্টে পাঠান টার্মিনালে থাকা পৌর সভার লোকজন ।
এখন আমাদের কথা হলো তাহলে লোকাল বসস যদি চেকপোষ্টে যেতে পারে।সেক্ষেত্রে আমাদের পরিবহন বাসগুলি চেকপোষ্টে যাত্রী নামাতে পারবে না কেন? আমাদের পরিবহন বাস গুলো তো কোন যানজটের সৃষ্টি করে না, বা রাস্তায় দাঁড়িয়ে অহেতুক যানজট বাঁধায় না। তাহলে কেন আমাদের সাথে এই ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ করছে প্রশাসন? প্রশাসনের এ ধরনের আচরণের প্রতিবাদে, পরিবহন মালিক সমিতি গতকাল রাতে ঢাকা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশ্যে কোন গাড়ি ছাড়িনি এবং বেনাপোল থেকে সকল ধরনের পরিবহন দূরপাল্লার বাস বন্ধ রেখেছে মালিক সমিতি। প্রশাসনের নিকট তার একটা সুষ্ঠ সমাধান চাই পরিবহন মালিক সমিতি।