
মোঃ জাকির হোসেন, বেনাপোল(শার্শা)প্রতিনিধি:
প্রায় ৫০০ যাত্রী নিয়ে বেনাপোল থেকে মোংলায় অনানুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করলো “মংলা কমিউটার ট্রেন”। এই রুটের দূরত্ব ১৩৮ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার। বেনাপোল-খুলনা রুটে চলাচল কারী ট্রেন “বেতনা এক্সপ্রেস” ট্রেনের নাম পরিবর্তন করে “মোংলা কমিউটার” রাখা হয়েছে। ট্রেনটি ফুলতলা হয়ে মোংলায় পৌঁছবে।
শনিবার(০১ জুন-২০২৪) মংলার উদ্দেশ্যে সকাল সোয়া ৯টায়, বেনাপোল থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও, আনুষ্ঠানিকতা সারতে ঘন্টা খানিক দেরি করে সেটি সকাল ১০টায় ছেড়ে যায়। ট্রেনটি মোংলায় পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে। এরপর মংলা থেকে ট্রেনটি ছেড়ে আসবে দুপুর ১টায় এবং বেনাপোলে পৌঁছবে বিকেল সাড়ে ৪ টায়।
বেনাপোল থেকে বিকেল ৫ টায় ছেড়ে খুলনায় পৌছবে রাত সাড়ে ৭ টায়। মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন এ রুটে একই সময়ে একবার করে ট্রেন চলাচল করবে।
বেনাপোল থেকে ট্রেন ছাড়ার পর নাভারণ, ঝিকরগাছা, যশোর জংশন, রূপদিয়া, সিঙ্গিয়া, চেঙ্গুটিয়া, নওয়াপাড়া, বেজেরডাঙ্গা, ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদ-নগর, কাটাখালি, চুলকাটি বাজার, ভাগা ও দিগরাজ স্টেশনে যাত্রাবিরতির পর মোংলায় যাবে।
মোংলা রেলপথ চালু হওয়ায় এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা বিষয়টিকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন। তারা বলছেন, মোংলা বন্দর ব্যবহার করে সবাই উপকৃত হবে। অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে গতিশীলতা বাড়বে। সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে। মোংলা থেকে মালামাল পরিবহনে খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে।
ট্রেনযাত্রী জাহাঙ্গীর জানান, এই ট্রেনটি চালু হওয়ায় আমরা অনেক উপকৃত হবো। বেনাপোল থেকে সরাসরি মোংলা বন্দরে কাজ করতে পারবো। আগে বেনাপোল থেকে খুলনা ও খুলনা থেকে অন্যবাসে করে মোংলায় যেতাম। প্রায় ৩০০ টাকা খরচ হতো। এখন মাত্র ৮৫ টাকায় মোংলা যেতে পারছি।
ট্রেনযাত্রী অর্পিতা রায় বলেন, আমার বাড়ী মংলাতে। বেনাপোল থেকে সরাসরি মংলায় টিকিট কেটেছি। আমাদের খুব সুবিধা হলো। মংলা থেকে আসার সময় বাস পাল্টিয়ে পাল্টিয়ে এসেছি। খুব কষ্ট হয়।
বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মোঃ সাইদুজ্জামান জানান, “বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মংলার সঙ্গে দেশের রেলওয়ের বর্তমান নেটওয়ার্ক সংযোগ স্থাপন এবং মংলা বন্দরের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের রেলযোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করা, মোংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথে আরামদায়ক ভ্রমণের সুব্যবস্থা করা, রেলের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষে ও উদ্দেশ্য নিয়ে খুলনা-মোংলা পোর্ট রেলপথ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে।
বেনাপোল থেকে মোংলার ভাড়া নির্ধারন করা হয়েছে ৮৫ টাকা। পুরোনো ট্রেন দিয়ে মোংলা-বেনাপোল রুটে আজ থেকে নিয়মিতভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও কোরবানির ঈদের পর এ রুটে নতুন ট্রেন সংযোজন করা হবে এবং ট্রেনের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে”।