বাড়িবাংলাদেশেবরিশাল বিভাগভোলার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা মিলছেনা যেনো দালাল ছাড়া।

ভোলার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা মিলছেনা যেনো দালাল ছাড়া।

মোঃ রাফসান জানি,জেলা বিশেষ প্রতিনিধি (ভোলা)

ভোলা সদর সহ ৭ টি উপজেলা নিয়ে ভোলা জেলা।উপজেলা গুলো হচ্ছে মনপুরা,চরফ্যাশন, তজুমদ্দিন,লালমোহন, বোরহানউদ্দিন, দৌলতখান ও ভোলা সদর উপজেলার মানুষ যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে,তখন উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে আসে, নিজের অজান্তে সাথে করেই যেন দালাল নিয়ে আসে রুগীর স্বজনরা।

যখন রুগী নিয়ে ব্যস্ত, চিন্তিত, দিশেহারা স্বজনরা, তখনই যেন দালালরা সুযোগ করে নেয় টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পন্থী।বিভিন্ন ভাবে ব্রেন্ড ওয়াশ করে প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক গুলোতে নিয়ে কারণে-অকারণে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করিয়ে ৪০-৫০ %(পার্সেন্ট) কমিশন নিয়ে নেয় দালালরা।

যখন আপনার বাসায় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ল, জরুরী সেবা হিসেবে আপনি এ্যাম্বুলেন্স খবর দিলেন বা পাশের বাসার কেউ ডায়াগনস্টিকে চাকরি করে তাদেরকে খবর দিয়ে সাথে নিয়ে গেলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্মরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আপনার রুগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ঠিক তখনি এ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার বা ডায়াগনস্টিকের লোক সুযোগ খোঁজে নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য আপনাকে সরকারি হাসপাতালে না নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে নিজেই নিয়ে গেল প্রাইভেট কোন ক্লিনিক বা ডায়গনস্টিকে,শেষ করে দিলো আপনার সাথে থাকা সমস্ত টাকা।আপনি মনে করেছেন সরকারি হাসপাতাল থেকে প্রাইভেটের পরীক্ষা নিরীক্ষা গুলো ভালো।পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করে যখন সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়,অগ্রিম পরীক্ষা গুলো তখন দেখে ডাক্তার বলেন বেদরকারি কেন এতগুলো পরীক্ষা করলেন।তখন সরল সোজা আত্মীয়-স্বজনরা চিকিৎসকের সামনে কিছুই বলতে পারে না।

এক গাইনী রুগীর আত্মীয় লাইলী বেগম বলেন, আমাদের সাথে আসা এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার আমাদেরকে দিয়ে অযৌক্তিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে নিয়েছেন প্রাইভেট ডায়গনস্টিকে নিয়ে।আমরা গরিব অসহায় এলাকা থেকে চাঁদা তুলে রুগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বোরহানউদ্দিন থেকে ভোলায় নিয়ে আসি,আমাদের রুগীর গাইনী সমস্যা,প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, রক্ত লাগবে বলেছে ডাক্তার। ডাক্তার আমাদেরকে রক্তের গ্রুপ ও কত %(পারসেন্ট) রক্ত আছে জানার জন্য এই দুটি পরীক্ষা দেয়, আমাদের সাথে থাকা এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার ডায়গনস্টি কে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করিয়ে ৩,৬০০ টাকার নিয়ে নেন।গাইনী ওয়ার্ডের নার্স আমাদেরকে কিছু মেডিসিন লিখে দেন কিনে আনার জন্য এবং রুগীকে কিছু খাওয়াতে বলেন।কিন্তু আমাদের কাছে আর একটি টাকা অবশিষ্ট নেই,আমাদের রুগীর অবস্থা আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছে।কিন্তু কিভাবে নেব আমাদের টাকা তো শেষ। হাসপাতালের সামনে গিয়ে আমরা যখন হতাশ কান্নাকাটি করছি তখন কিছু লোক আমাদেরকে জিজ্ঞেস করলে আমাদের সমস্যার কথা বলি, তারপর তারা ড্রাইভারকে বলেকিছু টাকা ডায়াগনস্টিক থেকে উদ্ধার করা দেয়,পরে ঔষধ ও খাবার কিনি।

ভুক্তভোগী আরো রুগীর স্বজনরা ও আশপাশে থাকা স্থানীয় জনগণ জানান, আমরা যারা রুগী নিয়ে আসি তখন আমাদের হিতাহিত কোন জ্ঞান বুদ্ধি থাকে না সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এ্যাম্বুলেন্স এর ড্রাইভার, ক্লিনিকে চাকরি নিযুক্ত লোক সহ আরো অন্যান্যরা আমাদেরকে ভাল ডাক্তারের কথা বলে প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এবং দালাল ছাড়া মিলছে না কোন স্বাস্থ্যসেবা।

জনগণের জন্য একটি কথাই বলবো দালাল ও প্রতারক চক্র থেকে সাবধান।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments