বাড়িঢাকা বিভাগগাজীপুর জেলামধ্যপাড়া মৎস্য খামার হাজী রহম আলী জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে।

মধ্যপাড়া মৎস্য খামার হাজী রহম আলী জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে।

স্টাফ রিপোর্টারঃ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর মধ্যপাড়া গোলীয়া বাইদ মৎস্য খামার জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন হাজী রহম আলী বেপারী । এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরা বিচারে বসে তাকে খামারের দখল ছেড়ে দেবার কথা বলেছেন। বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদের সালিশি বৈঠকে হাজী রহম আলী বেপারীকে খামার ছেড়ে দেবার কথা বললেও তিনি কোন বিচার মানেননি। তিনি ক্ষমতার দাপটে খামার দখল করে রেখেছেন। অবশেষে ভোক্তভোগী খামারীরা গাজীপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার বরাবর হাজী রহম আলী বেপারির নামে লিখিত অভিযোগ করছেন।

জানা যায়, মধ্যপাড়া ও শ্রীপুরের গ্রামের মাঝখানে ২৭ বিঘা জমির খামার করা হয়েছে। খামারের জমি দাতা ১৮ জন। গোলীয়া বাইদ মৎস্য খামার হাজী রহম আলী ব্যাপারী ৫ বছরের নামে নিজ নেন। ৭ মাস আগে লিজের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। লিজ নেবার মেয়াদ শেষ হবার হলেও তিনি খামার টি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন বলে একাধিক খামারী অভিযোগ করছেন । খামারের জমির মালিকরা নতুন করে খামার লিজ দেবার জন্য ডাক দেয়। কিন্তু খামারে ২ / ৩ জন জমির মালিককে টাকা দিয়ে তিনি খামারটি দখল করে রেখেছেন রহম আলী । খামারের অন্য জমির মালিকদের মতামত না নিয়ে তিনি খামার দখল করে রেখেছেন। খামারীদের ঠিক মত টাকা দেয়া হচ্ছে না। এক দিনে ফসলি জমিতে ফসল উৎপাদন করতে পারছেন না কৃষক। অপরদিকে খামারে টাকা ঠিক মত না পাওয়ায় অনেক কৃষক মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একাধিকবার সালিশী বৈঠকে তাকে খামার ছেড়ে দেবার কথা বলা হয়েছে। বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদের সালিশি বৈঠকে একাধিক বার বিচারকরা হাজী রহম আলী বেপারী কে খামার ছেড়ে দেবার কথা বললেও তিনি জোরপূর্বক খামার দখল করে রেখেছেন।

বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন খান সালিশি প্রতিবেদনে জানান, হাজী রহম আলী বেপারী মৎস্য খামার জোরপূর্বক দখলকারী। তিনি একজন আইন অমান্যকারী ও সমাজের বিশৃঙ্খলাকারী একজন মানুষ।

হাজী রহম আলী বেপারী জানান, তিনি নতুন করে খামারের লিজ নিয়েছেন। তবে সব খামারী চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করেননি। যারা চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করে নি তারাই শবিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করছেন। সব খামারী চুক্তিনামায় স্বাক্ষর না করলে আপনি কি ভাবে খামারে লিজ নিলেন। এ প্রশ্নের সঠিক উওর তিনি দেন নি।

ছেলে শফিকুল ইসলাম তার বাবার ফোন দিয়ে কথা বলার সময় বলেন, আমার বাবা সবার সম্মতিতে খামারের লিজ নিয়েছেন। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন সবার সম্মতিতে খামারের লিজ নিলে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিচার, ইউনিয়ন পরিষদে সালিশি বৈঠক, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ কেন। এ প্রশ্নের সঠিক উওর তিনি দেন নি। পরে তিনি বলেন আপনারা যা খুশি পএিকায় লিখেন।

অনন্ত চন্দ্র সরকার জানান, আমার এই খামারে জমি আছে। নতুন চুক্তিনামায় আমি স্বাক্ষর করিনি। খামারের টাকা পাই না। কোন শক্তির জোরে খামার জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে আমি জানি। বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেও খামার দখল মুক্ত হচ্ছে না।

মো. ইকবাল হোসেন জানান, আমাদের মৎস্য খামার হাজী রহম আলী বেপারি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন। আমারা স্হানীয় ভাবে, ইউনিয়ন পরিষদের অভিযোগের মাধ্যমে, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেছি। কিন্তু তিনি খামার ছাড়ছেন না। তিনি বিভিন্ন খামারে দালালকে টাকা দিয়ে খামার জোরপূর্বক দখল করে নেয়। আমি জরিমানা সহ খামারে টাকা দাবি করছি। এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন খামার জোরপূর্বক দালালের মাধ্যমে দখল করে নিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় কোটি টাকা কামাই করে নিয়েছে।

মো. হযরত আলী জানান, হাজী রহম আলী বেপারি গোয়ীলা বাইদ মৎস্য খামার জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন। এ ছাড়াও তিনি লিজ নিতে না পারায় শ্রীপুর প্রগতি মৎস্য খামার ৪ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এ মৎস্য খামারের জমির মালিকরা চরম দুর্ভোগের স্বীকার হয়েছে। জলপাইগুড়ি মৎস্য খামার, বড়বাইদ মৎস্য খামার, বুড়িগুমালীন মৎস্য খামার, কুড় মৎস্য খামার সহ বিভিন্ন খামারে দালালের মাধ্যমে তিনি লিজ নিয়েছেন।

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকার মৎস্য চাষের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। মাছ থেকে প্রোটিনের চাহিদা পূরন হচ্ছে। দেশে মৎস্য চাষ বেড়েছে।

দেশের আমিষের চাহিদা মেটাতে মৎস্য চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দেশে দিনে দিনে মৎস্য চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। মৎস্য চাষের ফলে দেশে দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে।

এলাকার কিছু প্রভাবশালী মানুষ নিজেদের স্বার্থের জন্য খামারের জমির লিজ দালালদের মাধ্যমে নিয়ে খামারিদের সঠিক মূল্য দিচ্ছন না।

 

 

 

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments