
জেলা নিজস্ব ,প্রতিনিধি কক্সবাজার।
কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে দায়েরকৃত একটি মামলা ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ইয়াসীন আরফাত নামের এক ব্যক্তি নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করে নিরীহ মানুষ, সাংবাদিক, বিএনপি-জামায়াতের কর্মীসহ ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
গত ৩ মার্চ মহেশখালী থানায় ১৫৩ জনের নামে এবং ৫০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার বাদী ইয়াসীনের বিরুদ্ধে শতাধিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।
ভূয়া সমন্বয়কের মামলার আসামী আন্দোলনকারী, সাংবাদিক, শ্রমিকদলের নেতা ও বাদীর পাওনাদার।
বাণিজ্য করার চেষ্টা বলে মত দিয়েছেন বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইয়াসীন কক্সবাজার এলও অফিসের দালালি করতেন এবং জেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজ মোরশেদের সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। দৈনিক আলোকিত সকাল পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মিজবাহ ইরান অভিযোগ করেন, ইয়াসীনের কাছে তিনি কয়েক লাখ টাকা পান। কিন্তু টাকা চাইতে গেলে ইয়াসীন নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করে এবং জামায়াতের কর্মী পরিচয় দিয়ে টাকা দিতে অস্বীকার করেন।
মামলায় বিএনপি-জামায়াতের কর্মী, সাংবাদিক ও ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ নিরীহ ব্যক্তিদের আসামি করায় মহেশখালীসহ জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ছাত্র আন্দোলনের প্রকৃত সমন্বয়ক হাফেজ মো. শাহজাহানও এই মামলায় আসামি হয়েছেন। এছাড়াও, মহেশখালী শ্রমিক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল আজাদ, সাবেক ছাত্রদল নেতা ওসমান গণি, ব্যবসায়ী সুমন যিনি ইয়াসীন থেকে টাকা পাওনাদার, দৈনিক পূর্বকোণ ও দৈনিক ভোরের দর্পণের জেলা, মহেশখালী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রতিনিধি এরফান হোছাইনসহ অনেকে মামলায় আসামি হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ছাত্র আন্দোলনে প্রকৃত হামলাকারী অনেকের নাম মামলায় আসেনি। যাদের মধ্যে কালারমারছড়ার রশিদ মেম্বারের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা আরিফ, জেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজ মোরশেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম চৌধুরী অন্যতম।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সম্মুখ সারীর যোদ্ধা এডভোকেট গোলাম নুসরাত জানান, সুমন নামে যে ভদ্রলোককে আসামি করা হয়েছে ক্রমিক ৬০ নং, সে এই মামলার বাদির থেকে ২০ হাজার টাকা পায়। কক্সবাজার সাগরগাঁও হোটেলের সামনে আমি সহ আরো দুই জনের জিম্মায় ১ মাস সময় নিয়ে ছেড়ে দেয় দুনিয়ার লিলাখেলায় আজ পাওনাদার উল্টা ছাত্র আন্দোলনের মামলার আসামী।
তিনি আরও বলেন, ১৬ জুলাইয়ের মহেশখালী বাবু দিঘীর পাড়ের ঘটনায় যারা উপস্থিত ছিলো না তারাও মামলার আসামী তন্মধ্যে সাংবাদিক এরফান, শ্রমিকদলের নেতা মোস্তাফা কামাল সহ আরও অনেকেই। এছাড়া যারা ঐ দিন ঘটনায় ছিলো তারা কেউ এই মামলা সম্পর্কে জানে না। এছাড়া যাদের এই মামলায় সাক্ষী দেখানো হয়েছে তারা কেউ এই মামলা সম্পর্কে জানে না।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি কাইসার হামিদ বলেন, বিভিন্ন চাপের কারণে মামলাটি নিতে হয়েছে। তিনি জানান, দ্রুত চার্জশিট দিয়ে নিরীহ ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়া হবে। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা যাচাই-বাছাই না করে মামলা নিয়েছে।
মামলার বাদী ইয়াসীনের বিরুদ্ধে আসামি করার হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগও রয়েছে।
মহেশখালীর সাধারণ ছাত্র-জনতা দাবি জানিয়েছে, ইয়াসীনকে জবাবদিহি করতে হবে কার প্রভাবে এবং কার এজেন্ডা বাস্তবায়নে ওসিকে চাপ দিয়ে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।