
ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ত্রিশাল উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক উদ্ভাবিত অ্যাকুয়া কালচার ৪.০ ভার্টিক্যাল এক্সপানশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে অল্প জমিতে গত এক বছরে অধিক মাছ চাষ করে লাভের মুখ দেখিয়ে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে প্রকল্প পরিদর্শন শেষে সন্তোষ প্রকাশ করেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ।
কৃষি জমি ঠিক রেখে অল্প জমিতে অধিক মাছ চাষ করে কিভাবে উৎপাদন বাড়ানোর যায় এবং কিভাবে লোকসানের হাত থেকে মৎস্য খামারিদের রক্ষা করা যায় তা নিয়ে পরিকল্পনা ও গবেষনা করেন তৎকালীন ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুয়েল আহমেদ। পরীক্ষামূলক ভাবে উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নে ৫৮ শতাংশের একটি সরকারি পুকুরে নিজেস্ব উদ্ভাবিত অত্যাধুনিক অ্যাকুয়া কালচার ৪.০ প্রযুক্তি ও বিদ্যমান পুকুরে ভার্টিক্যাল এক্সপানশন পদ্ধতিতে গত বছরের এপ্রিল মাসে ৫৮ শতাংশের ১৮ ফুট গভীরতার ওই পুকুরে ৬৫ হাজার পাঙ্গাস মাছ চাষ শুরু করেন। এক বছরে ওই প্রকল্পের মাধ্যমে মেলে অভ’তপূর্ব সফলতা।
এ সাফল্য দেখতে সোমবার প্রকল্প পরিদর্শনে আসেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ। দুপুরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এটি একটি লাভজনক প্রযুক্তি। চাষী পর্যায়ে প্রযুক্তি ছড়িয়ে দিতে কাজ করবে ত্রিশাল উপজেলা প্রশাসন।
এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারী, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি মাহবুবুর রহমান, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সামসুজ্জামানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক ওই ওয়েব ও মোবাইল অ্যাপস জানান দেয়, পুকুরে অক্সিজেন, পিএইচ,টিডিএস, টেম্পারেসারের মাত্রা কত এবং সেই মাত্রার ভিত্তিতে সয়ংক্রিয় ভাবে এয়ারেটর ডিভাইস অন বা অফ করে। এ্যামোনিয়ার পরিমান বাড়লো কিনা, সেটা জানানোর সাথে সাথে এর পরিমান বেড়ে গেলে সয়ংক্রিয়ভাবে ড্রেনেজ পাম অন করে পুকুরের তলদেশের বর্জ্য পদার্থ কমাতে কাজ করে। মাছের প্রজাতি অনুসারে কখন কি পরিমান খাবার প্রয়োজন সেটা জানা যায় এবং সেই অনুযায়ি সয়ংক্রিয় ফিডার মেশিনখাবার দেয়ার ব্যবস্থা করে। এসবে মানুষের কোন প্রকার হস্তক্ষেপ প্রয়োজন পড়ে না। রেইন সেন্সর ও ওয়েদার ফোর কাষ্টিং টুলস ব্যবহারের ফলে মাছ চাষি বৃষ্টির সম্ভাবনা ও তাপমাত্র সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আগে থেকেই জানতে পারে। একটি চাষ চক্রে খামারে কি পরিমান বিদ্যুতের ব্যবহার হয়েছে, কত কেজি খাবার পুকুরে প্রয়োগ করা হয়েছে, কোন এয়ারেটন যন্ত্র কত সময় ধরে চলেছে তার সঠিক ও নির্ভুল হিসাব অ্যাপসের মাধ্যমে পাওয়া যায়। এসব বিষয় সাধারন চাষিদের অজানা থাকার কারণে মাছ বিক্রির পর অধিকাংশদের লোকসান গুনতে হয় বলেই এ প্রযুক্তির উদ্ভাবন।