
মোংলা(বাগেরহাট)প্রতিনিধি:
বিগত কয়েক দিন পূর্ব হতে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট হওয়া গভীর নিম্নচাপটি আরও ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় “রেমাল” নামে রুপ নিয়েছে।এ কারণে গভীর মোংলা সমুদ্রবন্দর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ৭(সাত) নং বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়ছে আবহাওয়া অফিস থেকে।
শনিবার (২৫ মে) সন্ধ্যা থেকে এ এলাকার আকাশ মেঘাচ্ছন্নতার পাশাপাশি গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও নদীতে অবস্থানরত সকল প্রকার মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারসমূহকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধীদপ্তরের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তীর মাধ্যমে জানানো হয়-সৃষ্ট “রেমাল” মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে রাত ১১ টার দিকে ৩৮৫ কিলোমিটার দুরে অবস্থান করছিল।এটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব কোনে অগ্রসর হতে পারে।
এদিকে ঘূর্ণীঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করায় এর প্রাথমিক প্রস্তুতীও নিতে শুরু করেছে স্থানীয় সচেতন প্রশাসন সমূহ।তালিকায় আছেন-মোংলা পোর্ট পৌরসভা, উপজেলা প্রশাসন ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ । এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) সদস্যরাও প্রস্তুত রয়েছেন।
মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র মহোদয় – বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব শেখ আ: রহমান বলেন- ঘূর্ণিঝড় “রেমাল”মোকাবেলায় মোংলা পোর্ট পৌরসভার পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতী সম্পন্ন করা হয়েছে।
মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জনাবা নিশাত তামান্না বলেন- সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি দ্রুত গতিতে উপকূলের দিকে ধেঁয়ে আসছে।সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়কে ঘিরে এখানে উপকূলীয় মানুষের জানমাল রক্ষায় ১০৩ টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সবাইকে আশ্রয়নে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ১৩২০জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া মজুদ করা হয়েছে প্রয়োজনীয় শুকনা খাবার,পানি ও ঔষুধ। ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবেলায় মোংলা উপজেলা প্রশাসনের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
তবে রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত কোন আশ্রয় কেন্দ্রে দূর্গতরা আশ্রয় নেয়নি। উপজেলা ও পৌরসভায় পৃথক দুটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে বলেও জানান ইউ,এন,ও মহোদয় জনাবা নিশাত তামান্না।
এদিকে দুর্যোগকে উদ্দেশ্য করে শনিবার দুপুরে জরুরী বৈঠক করেছেন “মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ”।মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মহোদয় রিয়ার এ্যাডমিরাল জনাব মোঃশাহীন রহমান জানান-ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে মোংলা বন্দরে নিজস্ব এলার্ট নম্বর ‘থ্রী’ জারি করা হয়েছে। বন্দরে অবস্থানরত সকল প্রকার বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য ওঠানামার কাজসহ সকল অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মোংলা বন্দরের জেটিসহ পশুর চ্যানেলে নোঙর করা দেশি-বিদেশি ছয়টি বাণিজ্যিক জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধসহ ওই সকল জাহাজকে নিরাপদ নোঙ্গরে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।সেইসাথে বন্দর কর্তৃপক্ষের সকল কার্যক্রম(অপারেশনাল) পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
বন্দরে একটি কন্ট্রোল রুম খোলাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সতর্কতার সহিত ঝড় মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সাবধানতা ও দূরদর্শিতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে ।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ওসি জনাব হাওলাদার মোঃ আজাদ কবির বলেন-৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের প্রতিটি ষ্টেশনসহ ফাঁড়িতে দায়ীত্বরত কর্মকর্তা ও বনরক্ষকীরা নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে। করমজল বন্যপ্রাণী ও প্রজনন কেন্দ্রের বণ্য প্রাণীদেরও নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং আমরা তদসংশ্লিষ্ট সকল প্রকার সতর্কতা অবলম্বন করেছি-বাকীটা আল্লাহ ভরষা।