
জুয়েল রানা,রৌমারী(কূড়িগ্রাম)নিজস্ব প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের রৌমারী সরকারি ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিদায় সংবর্ধনা ও নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বভার গ্রহণ অনুষ্ঠান।
গতকাল বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪ দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব শহীদ রেজাউল কবির লেবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের জ্যৈষ্ঠ প্রভাষক তৈবুর রহমান ও ইংরেজি বিভাগের জ্যৈষ্ঠ প্রভাষক এম আর ফেরদৌস।
সভায় বক্তারা বলেন, ঐতিহ্যবাহি রৌমারী সরকারি ডিগ্রি কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দ্বায়িত্ব পালন করেছেন জনাব মো:আব্দুল কাইয়ুম। শিক্ষা ক্ষেত্রে সুষ্ট পরিবেশ বজায় রেখে গুনগত মান সম্মত শিক্ষা ব্যবস্থাই ছিলো তার মূল লক্ষ্য। তিনি এই কলেজের প্রতিটি উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। মন জয় করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। পিতার মতো যত্ন সহাকারে শিক্ষার্থীদের আলোকিত জীবন গড়তে করেছেন অক্লান্ত পরিশ্রম। সারা দেশে স্বৈরাচার মুক্ত করণে অনেক কলেজের অধ্যক্ষদের পদত্যাগে বাধ্য করা হলেও রৌমারী সরকারি ডিগ্রী কলেজ ছিলো তার ব্যতিক্রম। যার ফলে অধ্যক্ষের শেষ কর্মদিবসেও শিক্ষার্থীরা ছিলেন আপ্লুত।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কুরআন থেকে তেলাওয়াত শেষে মানপত্র পাঠ করেন কলেজের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান।পরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল কাইয়ুমকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। একই অনুষ্ঠানে, নব নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব শহীদ রেজাউল কবির লেবু কে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ, কলেজ শাখা ছাত্রদল, কলেজ শাখা ছাত্রশিবির সহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
একই সাথে সম্বর্ধনা দেয়া হয় রৌমারী সরকারি ডিগ্রি কলেজের তিনজন সাবেক অধ্যক্ষ,, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ,সাবেক শিক্ষক ও সাবেক কর্মচারীবৃন্দ। এর আগে একবার আড়ম্বরপূর্ণ অবসরজনিত কারণে বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল দীর্ঘদিনের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব আব্দুল ওয়াহাবসহ তৎকালীন অবসরপ্রাপ্তদেরকে।
আজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব আব্দুল কাইয়ুম ছাড়াও সাবেক অধ্যক্ষ জনাব ছামিউল ইসলাম জীবন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হায়দার আলী ও সামসুল আলম কেও বিদায়ী সম্বর্ধনা দেয়া হয়।
এছাড়াও জনাব আহাদ স্যার,মজিবুর স্যার,নুরুল স্যার,আউয়াল স্যার সহ প্রদর্শক জনাব হারুন অর রশীদ ও অফিস করনিক জনাব মতিউর রহমান কেও বিদায়ী সম্বর্ধনা দেয়া হয়। বিগত সময়ে এই কলেজে উদ্যোগের অভাবে, পরিবেশ পরিস্হিতির কারণে অনেকেরই বিদায় সংবর্ধনার আনুষ্ঠানিকতা করা হয়ে উঠেনাই। তাই এবার জনাব আব্দুল কাইয়ুম এর শেষ কর্মদিবসে সাবেক বিদায়ী শিক্ষক কর্মচারীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে সংবর্ধিত করা হয়।
উল্লেখ্য কলেজের সরকারিকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয় জনাব আব্দুল ওয়াহাব এর আমল থেকেই। কিন্তু শেষ হয় জনাব আব্দুল কাইয়ুম এর হাত ধরে। মাঝে সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব হায়দার আলী ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব সামসুল আলম সরকারিকরনের কাজ এগিয়ে নেন।কলেজ উন্নয়নে সাবেক ভার প্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব হায়দার আলী কলেজে অনেকগুলো ফ্যান লাগান,আসবাবপত্র বানান । পরবর্তীতে জালাব শামসুল আলম কিছু লাইট লাগিয়ে কলেজটিকে আলোকিত করেন। সেই ধারাবাহিকতায় বিদায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব আব্দুল কাইয়ুম আরো লাইট লাগান, কলেজের পরিবেশ রক্ষায় অনেক গাছ লাগান,, ছাত্র-ছাত্রীদের বাধ্যতামূলক ইউনিফর্ম চালু করেন,, পরিচয় পত্রের ব্যবস্থা করেন,, কলেজ লাইব্রেরি অনেকগুনে সমৃদ্ধ করেন। নিজ উদ্যোগে বন্ধু-বান্ধব সাবেক শিক্ষার্থীর সহ সকলের সহযোগিতা নিয়ে শত শত বইয়ের ব্যবস্থা করেন।
সবথেকে কৃতিত্বের দাবীদার জনাব আব্দুল কাইয়ুম দীর্ঘদিন পরে ছাত্র ছাত্রীদের ক্লাশ নিশ্চিত করেন। কলেজে আন্ত: শ্রেণী বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এসব কারনে তাঁর কার্যকাল সকলের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। ছাত্র ছাত্রীসহ এলাকার মানুষ তাঁর কর্মকান্ডে প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
বিদায় মুহূর্তের শেষ ভাষণের জনাব আব্দুল কাইয়ুম বলেন তিনি তার কর্মজীবনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন রৌমারী সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ এই রৌমারী সরকারি ডিগ্রী কলেজ কে শিক্ষার পরিবেশসহ সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণের জন্য। পরিশেষে বিদায় কালে তিনি বলেন, রৌমারী সরকারি ডিগ্রী কলেজে সামনে যেন আরও শিক্ষা বন্ধ পরিবেশ গড়ে ওঠে সেই প্রত্যাশা রেখে তিনি সকলের কাছ থেকে দোয়া চেয়ে বিদায় নেন।।