
একটানা ছুটিতে দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে ঈশ্বরদীর পাকশীতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু এলাকায়। হাজার হাজার মানুষ প্রাচীন এ ঐতিহ্যবাহী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এবং পদ্মা তীরের মনোরম দৃশ্য দেখার জন্য এখানে ছুটে আসেন দূর–দূরান্ত থেকে। প্রকৃতিক সৌন্দর্য্যের রূপ দেখে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা।
ঈশ্বরদীর পাকশী রেলস্টেশনের পাশে পদ্মা নদীর ওপর লাল রঙের হার্ডিঞ্জ ব্রিজটি দাঁড়িয়ে আছে। শত বছরের বেশি সময় পার হলেও ব্রিজের সৌন্দর্য নষ্ট হয়নি। তাই প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী এ ব্রিজের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন এখানে।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাশেই সমান্তরাল ভাবে দাঁড়িয়ে আছে লালন শাহ সড়ক সেতু। দেশের তৃতীয় দীর্ঘতম সড়ক সেতু এটি। এ সেতুর কোল ঘেঁষেই নির্মিত হচ্ছে দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। নির্মাণাধীন রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুউচ্চ (৩০ তলার সমপরিমাণ উঁচু) চুল্লি, কুলিং টাওয়ার ও উঁচু স্থাপনাগুলো হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু থেকে খুব সহজেই অবলোকন করা যায়। পদ্মার পাদদেশে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু মিলে ওই এলাকা যেন অপরূপ সৌন্দর্যের আধারে পরিণত হয়েছে।
শনিবার বিকেলে দেখা যায়, হাজার হাজার দর্শনার্থী ব্রিজের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছেন। সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির কারণে মানুষের সমাগম বেড়েছে। যে যার মতো করে ছবি, সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করছেন।
ঘুরতে আসা মাহফুজুর রহমান শিফন নামের যুবক জানান, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লালন শাহ সেতু ও রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প সব মিলিয়ে এলাকাটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। এলাকাটি পর্যটন শিল্পের আওতায় আনা হলে দর্শনার্থীদের সমাগম আরও বাড়বে।
দর্শনার্থী রঞ্জন বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দেখতে এসে একই সাথে পাকশীর নানন্দিক রেল স্টেশন, লালন শাহ সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণশৈলী দেখে মুগ্ধ হয়েছি। ব্রিটিশ আমলের স্থাপনা পাকশী রেলের বিভাগীয় কার্যালয়, শতবর্ষী অসংখ্য গাছ ও পদ্মা নদীর ঢেউ দর্শনার্থীদের হৃদয়কে ভরিয়ে দিয়েছে।
এলাকার গবেষক, শিক্ষাবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্রিটিশ নানন্দিক স্থাপনার নিদর্শন রয়েছে পুরো পাকশী জুড়ে। পদ্মা নদী, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, রেলওয়ে বিভাগীয় সদর দপ্তর, রেল স্টেশন, ব্রিটিশ আমলের শতবর্ষী শত শত গাছ সব মিলিয়ে পাকশী সৌন্দর্যের তীর্থস্থান বলা যেতে পারে। এলাকাটি পর্যটন শিল্পের আওতায় আনা হলে এখানে আরও দর্শনার্থীদের সমাগম বাড়বে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, এখানে প্রতিদিন প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। দর্শনার্থীদের জন্য উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে দুটি টয়লেট, ডাস্টবিন, সোলার লাইট ও নলকূপের ব্যবস্থা করা হয়েছে।