বাড়িবাংলাদেশেবরিশাল বিভাগলালমোহনে খেজুর গাছের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা

লালমোহনে খেজুর গাছের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা

অপু হাসান। লালমোহন (ভোলা)নিজস্ব প্রতিনিধি:
দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহনে পৌষের তীব্র শীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন খেজুর গাছের রস আহরণের গাছিরা। ভোলার বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় শীতের সকালের ঘন কুয়াশা মধ্যে খেজুর গাছের রস সংগ্রহে নেমে পড়েন তারা। গ্রামীণ পথের পাশে সারি সারি খেজুর গাছে ঝুলতে থাকে রসের হাড়ি। আমাদের গ্রাম বাংলার আদি ঐতিহ্যের সাথে খেজুরের রস ও শীতকাল একাকার হয়ে আছে। তাই শীত এলেই সকলের কাছে কদর বাড়ে সুমিষ্ট খেজুরের রসের।
খেজুর গাছের মাথায় একই স্থানে অনেকখানি বাকল তুলে সেথায় হাড়ি বেঁধে (বাঁশের তৈরি) নালার সাহায্যে এ রস সংগ্রহ করা হয়। সাধারণত বিকেলে অথবা সন্ধ্যায় গাছে হাড়ি বেঁধে রেখে যায় গাছিরা। আর প্রতিদিন ভোরে ঘন কুয়াশার মধ্যে গাছ থেকে রসে ভরা হাড়ি নামানো হয়। পুরো এলাকা তখন কাচা রসের মহোনীয় গন্ধে মৌ-মৌ করে। এসব রসের হাড়ি ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।
জানা যায়, ভোলায় শীতের মধ্যে মূল উৎসব’ই হচ্ছে শীতের পিঠা ভাপা পিঠার উৎসব। প্রতিটি ঘরে ঘরে আসে নতুন ধানের চাল। সেই চালের গুড়ো দিয়ে তৈরি হয় হরেক রকম পিঠার-নাস্তা। যার মূল উপাদন হচ্ছে খেজুরের রস, গুড় ও পাটালী। আর শীতের সকালে রোদে বসে গরম গরম পিঠা খেতে কার না ভালো লাগে। তাই এ সময় গ্রামের ঘরে ঘরে পিঠা ও নাস্তা তৈরির ধুম পড়ে যায়। ঐ  পিঠা খাওয়ার উৎসবে মেতে উঠে শিশু, যুবক, বৃদ্ধ সবাই।
গাছিরা জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেশি করে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়। আগের চেয়ে খেজুর গাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। তাই অনেকে’ই আগাম রসের জন্য গাছিদের কাছে রস সংগ্রহের জন্য অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখেন। সেই টাকায় কেউ কেউ রস সংগ্রহের সরাঞ্জম ক্রয় করেন আবার অনেক তাদের সাংসারিক কাজে ব্যায় করেন তাই গাছিরা এখন রস সংগ্রহে মগ্ন। 
উপজেলার কালমা ইউনিয়নের সফিউল্লাহ, হেলাল পালোয়ান, নুর-ইসলাম বলেন, অন্য মৌসুমে তারা বিভিন্ন ফসলের চাষ করেন। কিন্তু শীত এলেই তারা খেজুরের গাছ কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কারণ এ অঞ্চলে রসের পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় ভালো টাকা লাভ হয়। এছাড়া খেজুরের গুড়েরও বেশ কদর রয়েছে। এক সময় প্রচুর খেজুরের গাছ ছিলো। তখন রসও পাওয়া যেত প্রচুর। তারা রস বয়ে নিয়ে বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে বিক্রি করতেন। এখন আর সেই দিন নেই। এখন আগাম বলে রেখে দূর দূরান্ত থেকে বিভিন্ন ব্যাক্তিরা এসে রস নিতে হয়। কেউ কেউ রাসের জন্য আগাম টাকা দিয়ে রাখেন। তারা আরো জানান, তাদের নিজেদের কোন গাছ নেই। অন্যের গাছ কেটে রস সংগ্রহ করতে হয়। আর গাছের মালিককেও রসের একটা অংশ দিতে হয়। তারপরেও প্রতি বছর তারা রস বিক্রি করে লাভবান হন বলে জানান।
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments