
সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক ধরে এগুলোই ডানপাশে চোখে পড়বে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রধান ফটক। মূল ফটক থেকে প্রায় হাজার গজ পেরিয়ে মূল ক্যাম্পাস। ফটক থেকে মূল ক্যাম্পাস পর্যন্ত রাস্তাটি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে ‘এক কিলো’ নামে পরিচিত।
এই কিলোর দুই পাশে সারি সারি সবুজ গাছ-গাছালি আর চোখ ধাঁধানো লেক। এ লেককে ঘিরে আছে সবুজ গালিচায় মোড়ানো বিভিন্ন প্রকারের রং-বেরঙের গাছ-গাছালি। কিলো রোড়কে কেন্দ্র করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদরে চলাচলের সুবিধার্থে যুক্ত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ‘ওয়াকওয়ে’। যা কিলোরোড়ের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ।
সবুজায়নে ভরপুর এ কিলো রোড় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্মৃতি বিজড়িত একটি স্থান, কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ থেকে ঘর্মাক্ত কিংবা ক্লান্ত হয়ে ছায়াঘেরা কিলো রোড়ে আসলেই অনুভূত হয় শীতল প্রশান্তি। এছাড়া কেউ কেউ দল বেঁধে রাত বিরাতে গান করে অথবা গল্পগুজবে সময় কাটায় কিলো রোড়ে। ১৯৮৬ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে সময়ের পরিক্রমায় পরিবর্তন হয়েছে কিলো রোড়ের, বেড়েছে সৌন্দর্যও। বর্তমানে কিলোরোড়ে নির্মাণাধীন ওয়াকওয়ে নজর কেঁড়েছে সকলের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২ কোটি ১৮ লাখ ৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৫শ ফিট ওয়াকওয়ে তৈরি করা হচ্ছে। বর্তমানে ওয়াকওয়ের কাজ শেষের দিকে। দুটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ওয়াকওয়েটি নির্মাণ কাজ পরিচালনা করছে। কাজ শেষ হলেই ওয়াকওয়েটি উন্মক্ত করা হবে।
অনুভূতি জানিয়ে ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী তাসপিয়া সোলতানা বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এককিলো রোড় সকলের আবেগের একটি জায়গা, ব্যক্তিগতভাবে আমার নিজেরও অনেক ভালো লাগে। কিলো রোড়ে হাটতেই নিজের মধ্যে অন্যরকম একটি প্রশান্তি কাজ করে। কিলোর রোড়ে ওয়াকওয়ে যুক্ত হচ্ছে, এটি কিলো রোড়ের সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দিবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের এক কিলোতে একটি ওয়াকওয়ে দরকার ছিল, ভিসি স্যার সেটার উদ্যোগ নিয়েছেন। ওয়াকওয়ের কাজটি দুইটি অংশে পরিচালিত হচ্ছে, কিছু কাজ এখনো বাকি রয়েছে, আশা করছি তা দ্রুত শেষ হবে। ক্যাম্পাসের পরিবেশ ঠিক রেখে সে কাজগুলো করা হচ্ছে। এটি চালু হলে ক্লাস ও পরীক্ষা চলাকালীন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চলাচলের সুবিধার্থে কিলো রোড়ে একটা ওয়াকওয়ে দরকার ছিল। তবে কিলো রোড়ের দুই ধারে গাছ থাকায়, গাছের কোন ক্ষতি না করে ডিজিটাল সার্ভের মাধ্যমে ওয়াকওয়েটি নির্মাণ করার পরিকল্পনা নিই। আশা করছি চলতি মাসের মধ্যে ওয়াকওয়েটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারবো।
উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য আগামীতেও এমন ভালো ভালো উদ্যোগ নেওয়া হবে। শিক্ষা, গবেষণা, উন্নয়ন ও সুশাসনে এ বিশ্ববিদ্যালয় হবে অন্যান্যদের রোল মডেল। তাই আমরা প্রত্যেকটি কাজকে সেভাবে পরিকল্পনা নিয়ে করছি।