
আব্দুল কাইয়ুম। শ্রীপুর (মাগুরা) :
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই গুলিতে আহত হন শাহরিয়ার সোহান (২৮)। দীর্ঘ ৩৯ দিন বুলেট বিদ্ধ থাকার পর শেষ পর্যন্ত ঢাকায় মারা গেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে তার মৃত্যু হয়। তিনি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের শাহ সেকেন্দার আলীর ছেলে।
পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সোহান ঢাকায় ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসে চাকরি করতেন। দরিদ্র পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা তার পরিবার। পরিবারে তার বাবা, মা, ছোট ভাই ও স্ত্রী রয়েছে।
সূত্রমতে, গত ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় ঢাকার রামপুরা এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার একটি মিছিল বের হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সাথে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। কোম্পানির কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে হঠাৎ একটি গুলি সোহানের পাজর দিয়ে ঢুকে স্পাইনালক আটকে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে ৩৯ দিন শরীরে আটকে থাকা গুলি বের করতে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। অপারেশনের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।
সোহানের মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ তাকে ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে দেখতে যান। বুধবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিকেল ৫ টায় শ্রীপুর পূর্বপাড়া ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে স্থানীয় সম্মিলিত কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
সোহানের বাবা শাহ সেকেন্দার আলী বলেন, আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শেষ করে অনেক বড় চাকরি করবে। সংসারে অভাব অনটনের জন্য সে লেখাপড়ার পাশাপাশি চাকরি করতো। আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। এখন আমরা কিভাবে বাঁচবো?