শামসুল আলম শারেক,টেকনাফ( কক্সবাজার) প্রতিনিধি।
কক্সবাজার টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষ্যং পাহাড়ে গরু চরাতে গিয়ে অপহরণের শিকার হওয়া শিশুসহ ১০ ভিকটিমকে মুক্তিপণ পেয়ে ছেড়ে দিল পাহাড়ে থাকা অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা।
বুধবার রাতে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে তাদের মুক্তি দেওয়া হয় বলে জানান তাদের স্বজনরা।
ফেরত আসা ভিকটিমরা হলেন— হোয়াইক্যং ইউনিয়নের করাচিপাড়া এলাকার বেলালের দুই ছেলে জুনাইদ (১২) ও মোহাম্মদ নুর (১০), একই এলাকার লেদুর ছেলে শাকিল (১৫), শহর আলীর ছেলে ফরিদ আলম (৩৫), নুরুল ইসলামের ছেলে আকতার (২৫), নাজির হোসেনের ছেলে ইসমাইল প্রকাশ সোনাইয়া (২৪) ও হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং এলাকার আলী আকবর এর ছেলে ছৈয়দ হোছাইন বাবুল (২৬), কালা মিয়ার ছেলে ফজল কাদেরসহ (৪০) আরো ২ জন।
বুধবার ২৭ মার্চ রাতে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষ্যং এলাকার ২২ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পশ্চিমে পাহাড় থেকে তাদের ফেরত দেওয়া হয়।
ভিকটিম শাকিলের বাবা লেদু মিয়া জানান, রাতে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছেলে ফেরত দিয়েছে অপহরণকারীরা। তবে আমাদের পরিবার দিনমজুর হওয়ায় টাকা জোগাড় করতে অনেক কষ্ট হয়েছে। ছেলের সঙ্গে অপহৃত অপরাপর সবাই মুক্তিপণ দিয়ে ফিরেছে।
কাঞ্জরপাড়া এলাকার গ্রামপুলিশ শেখ কবির বলেন, প্রতিদিনের মতো সকালে তারা পাহাড়ে তাদের কাজ করতে যায়। পরে অপহরণকারীরা পাহাড় থেকে এসে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ১০ জনকে নিয়ে যায় বলে শুনেছি। তাদের আস্তানায় পৌঁছার পরে ভিকটিমদের প্রত্যেকের পরিবারে মোবাইল করে মুক্তিপণ দাবি করে খবর পাঠান। পরে রাতে মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত আসেন সবাই।
এদিকে বার বার অপহরণ ও মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া বিষয়টি নিয়ে জনমনে ক্ষু্দ্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। জনসাধারণ মনে করছে অপহরণের টাকা দিতে অপহরণ কারীদের সাথে কে বা কারা মিডিয়া করছেন তাদের খুঁজে বের করা হলে মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে সচেতন মহলের ধারণা।
অন্যদিকে গেল ২/৩ সপ্তাহ ধরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় অপহরণের শিকার হওয়া বিভিন্ন ভীকটিম পুলিশী অভিযান ও মুক্তিপণের মাধ্যমে উদ্ধারও ফেরত আসলেও বিগত ২০ দিন পূর্বে অপহরণের শিকার হওয়া মাদ্রাসা ছাত্র শিশু সোয়াদ বিন আব্দুল্লাহর এখনো খোঁজ মিলেনি। ছেলে হারানোর শোকে মা নুরজাহান পাগল প্রায়ই।
এবিষয়ে হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, হ্নীলা হোয়াইক্যং এলাকার মানুষ বেশিরভাগ পাহাড়ে চাষাবাদ করে তাদের জীবন সংসার চালায়। তারা যদি চাষাবাদ বা গরু দেখতে গেলে অপহরণ হয়ে যায়; তা হলে মানুষ কি করে বাঁচবে। অপহরণকারীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শাহাদাত জানান, উদ্ধার ভিকটিমদের স্বীকারোক্তিমতে অপহরণকারীদের শনাক্ত ও আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।