বাড়িঅন্যান্যসুরক্ষা অ্যাপ ও এনআইডি জালিয়াতি ছয় মাসে হাতানো হয়েছে ১ কোটি ৬৩...

সুরক্ষা অ্যাপ ও এনআইডি জালিয়াতি ছয় মাসে হাতানো হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা

অবৈধ পন্থায় সুরক্ষা অ্যাপের সার্ভারে প্রবেশ ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতির মাধ্যমে সরবরাহের অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা ও সুনামগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাঁদের ধরা হয়েছে। গ্রেপ্তাররা হলেন- নির্বাচন কমিশনের কম্পিউটার অপারেটর সানোয়ার কবির ও তাঁর সহযোগী একরাম হোসেন, জাহিদুল হাসান ও আব্বাস উদ্দীন। তাঁদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় পুলিশ হেফাজতে নিয়ে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এছাড়া গ্রেপ্তার চারজনের গত ছয় মাসের মোবাইল ব্যাঙ্কিংয়ের তথ্যও সংগ্রহ করেছেন গোয়েন্দারা। এতে দেখা যায়- গ্রেপ্তাররা ওই সময়ে ১ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করেন। প্রতারণা করে করোনার সনদ ও এনআইডি সরবরাহ করে এই অর্থ তাঁরা কামিয়েছেন।

ডিবির প্রধান ডিআইজি হারুন অর রশীদ জানান, ডিবির সাইবার মনিটরিং বিভাগের মাধ্যমে এই চক্রটির অপরাধের তথ্য সামনে আসে। চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও  চক্রের আরও কিছু সদস্য এখনও আইনের আওতায় আনা যায়নি। টিকার সনদ ও এনআইডি কার্ড নিয়ে বাণিজ্য করে তাঁরা অনেক টাকা হাতিয়েছেন। চক্রটির ব্যাঙ্কিং লেনদেনের নথিও সংগ্রহ করেছি।

সাইবার ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জুনায়েদ আলম সরকার জানান, ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে যেসব গ্রুপ খুলে তাঁরা সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলেছেন সেগুলো হলো- ‘বজলু তালুকদার’, ‘আকরাম হোসেন’। এনআইডির তথ্য সংগ্রহ, করোনার টিকার সনদ প্রদান, জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা জানিয়ে অভিযুক্ত একরাম হোসেন অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহক সংগ্রহ করতেন। সুরক্ষা অ্যাপসের গোপন নম্বর জানায় একরাম নিজেই অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে সনদ দিতেন। যাঁরা টিকা দেননি তাঁদেরও সার্টিফিকেট সরবরাহ করেছেন তিনি। এছাড়া অনেকের এনআইডি হারিয়ে গেলে পরবর্তী সময়ে ডুপ্লিকেট এনআইডি দরকার হয়। আবার এনআইডি কার্ডের বিপরীতে গোপন সার্ভারে প্রত্যেক নাগরিকের নানা তথ্য থাকে। সরকারি দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া ওই সার্ভারে প্রবেশের কারও সুযোগ নেই। তবে সারোয়ার কবির (ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের নির্বাচন কমিশন অফিসের চুক্তিভিত্তিক কম্পিউটার অপারেটর) অবৈধভাবে ডুপ্লিকেট এনআইডি ও এনআইডির তথ্য সরবরাহ করতেন। একেকবারে ৮শ থেকে ১ হাজার ব্যক্তির এনআইডি নির্বাচন কমিশনের সত্যিকার সার্ভার থেকে নিয়ে গ্রাহকদের হাতে তুলে দিতেন।

তদন্তসংশ্নিষ্ট আরেক কর্মকর্তা জানান, অনলাইনে গ্রাহক সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন জেলায় তাঁদের প্রতিনিধি ছিলেন। প্রত্যেককে কাজ ভাগ করে দেওয়া থাকে। একরামের দায়িত্ব ছিল এনআইডি, করোনা সনদ ও জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট জালিয়াতি করা। সারোয়ার কবির এনআইডির বিপরীতে সব তথ্য সরবরাহ করেন। অভিযুক্তদের মধ্যে একরাম ও আব্বাস দুই বছর ও জাহিদুল এবং সানোয়ার তিন বছর ধরে এই ধরনের জালিয়াতি করে আসছেন।

তদন্তসংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, লেনদেনের যে তথ্য পাওয়া গেছে সেখানে দেখা যায়- প্রতারণার মাধ্যমে গত ৬ মাসে একরাম হোসেন ৩৭ লাখ ৪১ হাজার টাকায় হাতিয়েছেন। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ডিপোজিট করেছেন। জাহিদুল হাতিয়েছেন ৩৯ লাখ ৯৩ হাজার টাকা, আব্বাস উদ্দীন ৬৬ লাখ ৭০ হাজার ও সারোয়ার কবির কামিয়েছেন ১৪ লাখ ১৩ হাজার টাকা।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments