
মনোহরদী(নরসিংদী)নিজস্ব প্রতিনিধি
বাংলাদেশে জমির সিএস পর্চার দিকে তাকালে দেখা যাবে, অধিকাংশ জমির মালিক ছিলেন হিন্দু জমিদাররা। আপনার দাদার বাবা কিংবা আপনার দাদার দাদা সেই জমিগুলো তাদের কাছ থেকে ‘রায়তী’ হিসেবে নিয়েছিলেন।
১৯৪৭ সালের আগে থেকেই তারা নামমাত্র মূল্যে জমিজমা বেঁচে ভারতে পাড়ি জমানো শুরু করেন। সাতচল্লিশের পরে যেসব জমিদাররা থেকে গিয়েছিলেন, তারাও লক্ষ্য করলেন যে দাপট নিয়ে তারা একসময় চলতেন, এখন তাদের সেই দাপট আর নেই। ফলে তারাও তাদের সহায়সম্পদ বিক্রি করে কেউ ভারতে, কেউ ইউরোপ-আমেরিকায় চলে যান।
এর ফলে এতোদিন চাষবাস করে খাওয়া, কিংবা সামান্য মাইনে চাকরি করা বহু বাঙ্গালী মুসলমান হুঠাৎ করে এতো সম্পত্তির মালিক হয় যে তারা চাইলেই কয়েক পুরুষ কোনো চিন্তা ছাড়াই খেয়েপরে বেঁচে থাকতে পারে।
আপনার পূর্বপুরুষরা জমিদারদের থেকে জমিগুলো এমনিএমনি পায় নি। এ জন্যে তাদের অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।
উত্তরাধিকারসূত্রে বিশাল জমিজমার মালিক হয়ে অহংকার দেখানো বহু বাঙ্গালি মুসলমান জানে না, যার জন্যে তারা এতো বিশাল জমিজমার মালিক হয়েছে, যার জন্যে বাঙ্গালি মুসলমানরা বঙ্গদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করে খেতে পারছে, তাদেরকে আম্বানি-আদানির গোলামি করতে হচ্ছে না,
তিনি কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ।
১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট তিনি আমাদের এনে দিয়েছিলেন ইংরেজদের থেকে ও হিন্দু জমিদারদের শোষণ থেকে প্রথম আজাদি। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে আমরা পেয়েছিলাম পাঞ্জাবিদের অত্যাচার থেকে স্বাধীনতা, যারা কিনা সাতচল্লিশের স্বাধীনতার চেতনার নামে আমাদের শোষণ করা শুরু করেছিলো।
আর একাত্তরের চেতনার নামে যারা আমাদেরকে এতোদিন শোষণ করে এসেছে, তাদের কাছ থেকে আমরা স্বাধীনতা পেলাম এই ২০২৪ সালে। খুব কম জাতিই আছে যারা এতো কম সময়ে তিন তিনিটে স্বাধীনতা পেয়েছে। তবে দুঃখজনক হচ্ছে স্বাধীনতাগুলোকে আমরা এখনো সেভাবে কাজে লাগাতে পারি নি।
সাতচল্লিশ সালের স্বাধীনতাকে আমরা এতোদিন অস্বীকার করে এসেছি, কারণ একাত্তরের চেতনার নামে যে বয়ান শাহবাগীরা উপস্থাপন করে এসেছে, তার সাথে এটা ঠিকমতো যায় না। কিন্তু এই স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা মানে ধ্রুব সত্যকে অস্বীকার করা, আরো ঠিক করে বললে— বাংলাদেশকেই অস্বীকার করা।
বঙ্গবঙ্গ রদ হবার পর যেই মহাপুরুষরা বুকের রক্ত ঝরিয়ে আমাদেরকে হিন্দু জমিদারদের শোষণ থেকে মুক্ত করেছিলেন, তাদের জন্যে আমাদের শ্রদ্ধা ও দু’আ। আশা রাখি, মহান আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে তাদের নিয়ত অনুযায়ী উত্তম প্রতিদান দেবেন।
আমাদের প্রথম স্বাধীনতার প্রাক্কালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ তার বিখ্যাত ভাষণে বলেছিলেন, ‘ইউ আর ফ্রি’।
আশা করি, আমরা একদিন হাকিকি আজাদি পাবো আর স্বাধীনতার এই ধারাবাহিকতায় চব্বিশ সালে আমরা যে তৃতীয় স্বাধীনতা পেলাম তা লম্বা সময় ধরে রাখতে পারবো।