
শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসব। গতকাল শনিবার ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে সূচনা ঘটে বাঙালির শারদোৎসবের। এদিন দুর্গতিনাশিনী দেবীর অধিষ্ঠান, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল আনুষ্ঠানিকতা। পাঁচ দিনের দুর্গোৎসবের প্রথম দিনে গতকাল মণ্ডপে ম পে দেবীর অধিষ্ঠান হয়। সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠীবিহিত পূজা শুরু হয়। এ সময় বেলতলা কিংবা বেলগাছের নিচে দেওয়া হয় ষষ্ঠীপূজা। সন্ধ্যায় দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস ছাড়াও সব মণ্ডপে পুষ্পাঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও ভোগ আরতির আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যায় বিশেষ আলোকসজ্জাসহ অনেক মণ্ডপে বিশেষ প্রার্থনা ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে আজ রোববার মহাসপ্তমী। সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে ত্রিনয়নী দেবীদুর্গার চক্ষুদান, নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন, সপ্তমাদি কল্পারম্ভ ও সপ্তমীবিহিত পূজা শুরু হবে। এভাবে উৎসব চলবে আগামী বুধবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন পর্যন্ত।
হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এ ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে দেশজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে আনন্দ ও উৎসাহ-উদ্দীপনার। ঢাকা মহানগরীর ২৪১টিসহ সারাদেশের ৩২ হাজার ১৬৮টি পূজামণ্ডপে এদিন দুর্গাপূজা শুরু হয়। হিন্দুদের পাশাপাশি অন্য ধর্মের মানুষও যোগ দেওয়ায় উৎসব সার্বজনীন রূপ নিয়েছে। সারাদেশের মণ্ডপে মণ্ডপে ঢাকের বাদ্য, শঙ্খ আর উলুধ্বনির শব্দ দেবীদুর্গার মর্ত্যে আগমনের জানান দিচ্ছে। পূজার মন্ত্রোচ্চারণ, আরতি আর মাইকের আওয়াজে এখন মাতোয়ারা সারাদেশের পূজা ম পগুলো।
কেন্দ্রীয় পূজা উৎসব বলে পরিচিত ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনের মণ্ডপের সামনে বিশাল প্যান্ডেল ছাড়াও মন্দিরকে সাজানো হয়েছে নানা আঙ্গিকে। নেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সকাল ও সন্ধ্যায় ষষ্ঠীপূজার নানা আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি সন্ধ্যায় ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয় এখানে। পূজা শেষে অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও ভোগ আরতি ছিল উৎসবের অন্যতম অনুষঙ্গ।
একই উৎসব গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ পূজামণ্ডপেও দেখা যায়। ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হল পূজামণ্ডপেও দুর্গাপূজা শুরু হয় সাড়ম্বরে। রমনা কালী মন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রমের মণ্ডপে সন্ধ্যায় গত বছরের প্রতিমা মন্দিরের পুকুরে বিসর্জন দেওয়া হয়। মণ্ডপসহ পুরো প্রাঙ্গণ সাজানো হয়েছে বাহারি সাজে।