
স্বপন সরকার কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সদরচালা এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে বৈশাখি মেলা থেকে তুলে নিয়ে দুই নারী পোশাক কর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে ওই এক পোশাক কর্মীর মা বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এঘটনা তদন্ত ও দোষিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ মাঠে নেমেছেন বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।
পুলিশ,বাদীনির অভিযোগ,এলাকায়বাসী জানান, ধর্ষণের শিকার বড়চালা হালিমের টেক এলাকায় বসবাসকারী দুই নারী স্থানীয় টে·নিল ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেড নামক একটি পোশাক তৈরির কারখানায় কাজ শেষে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে তাদের সহকর্মী আমিনুল ইসলামকে সাথে নিয়ে পাশের গ্রামের সদরচালা গ্রামে অনুষ্ঠিত বৈশাখি মেলায় যায়। সেখানে বিভিন্ন বিনোদনে আনন্দভোগ শেষে মেলার এক পাশে ওই দুই নারী কর্মীর নানা ঢঙের ভিডিও ধারণ করছিল সহকর্মী আমিনুল ইসলাম।
এসময় পুলিশের সোর্স মোঃ সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে ৬-৭জন যুবক তাদের কাছে এসে আমিনুল ইসলামকে ধরে পাশের জামতলা বাজারের একটি ক্লাবে নিয়ে যায়। সেখানে আমিনুল ইসলামকে বেধরক মারধর করে ভয়ভীতি দেখায়। পরে ওই যুবকরা মোবাইল ফোনে দুই নারী পোশাক কর্মীদের ঢেকে ক্লাবে নিয়ে আসতে বলে। এসময় আমিনুল ইসলাম প্রাণ ভরে ফোন করে ক্লাবে ঢেকে আনে। যুবকরা আমিনুল ইসলামকে ক্লাবের এক জায়গায় বসিয়ে রেখে দুই নারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একটি অটোরিক্সায় তুলে নিয়ে যায়।
রাত দুইটার দিকে আমিনুল ইসলামকে ক্লাব থেকে ছেড়ে দিলে আমিনুল আবার মেলায় গিয়ে আয়োজকদের ঘটনাটি জানানো হলে মেলার আয়োজকরা পুলিশের সোর্স মোঃ সাজ্জাদ হোসেনকে ফোনে আমিনুলের মোবাইল ফেরত দেয়ার চাপ দিলে আমিনুল কিছুক্ষণ পরেই মোবাইল নিয়ে মেলায় হাজির হয়। পরে আমিনুলকে মোবাইল ফেরত দিয়ে দেন।
অপর দিকে ওই দুই নারী পোশাক কর্মীকে নিয়ে উপজেলার আড়াবাড়ি এলাকার একটি জঙ্গলে নিয়ে সাকিব হোসেন ও শিফাত হোসেন একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরে ভোর চারটার দিকে ওই নারী শ্রমিককে নিয়ে পুলিশের সোর্স সাজ্জাদ হোসেনের বাড়ীর সামনে নিয়ে যায়। পরে সাজ্জাদ হোসেনসহ দুইজন ওই দুই নারীকে তাদের বড়চালা গ্রামের বাড়ীতে পৌছে দিয়ে চলে যায়। শুক্রবার সকালে তাদের অভিভাবকের কাছে মোবাইল ফোনে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে চাপ দিতে থাকে। ঘটনাটি যাতে ফাঁস না হয় এজন্য হুমকি ধামকি দিতে থাকে। পরে কৌশলে পুলিশের সোর্স মোঃ সাজ্জাদ হোসেন দশ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশের সোর্স মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমি ভোর চারটার দিকে ওই দুই নারীকে বাড়ীতে পৌছিয়ে দিয়ে এসেছি। এঘটনার সাথে আমি জড়িত নই।
নারী পোশাক কর্মীরা বলেন, মেলায় টিকটকের জন্য কয়েকটি ভিডিও ধারণ করার সময় ৬-৭জন যুবক প্রথমে আমাদের সহকর্মী আমিনুলকে মারতে মারতে নিয়ে যায়। আধাঘন্টা পর আমাদের ফোন করে জামতলা বাজারের একটি ক্লাবে নিয়ে যায়। সেখানে ৪-৫জন যুবক অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমাদের একটি জঙ্গলে নিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে অসভ্যতা (ধর্ষণ) করে। যারা আমাদের সাথে অসভ্যতা করেছে তারা হলো সাকিব হোসেন ও শিফাত। এদের সব সময় সহযোগিতা করেছে পুলিশের সোর্স মোঃ সাজ্জাদ হোসেন।
কালিয়াকৈর থানার ওসি এএফএম নাছিম বলেন, এবিষয়ে এক নারীর মায়ের দেওয়া একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ঘটনাটি। ঘটনা সত্য হলে দ্রুতই আসামীদের গ্রেপ্তার করা হবে।