
মোঃ কাউছার মিয়া,মনোহরদী(নরসিংদী)নিজস্ব প্রতিনিধি।
মনোহরদী উপজেলার গোতাশিয়া ইউনিয়ন এর চুলা গ্রামে অবস্থিত গোতাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন পুকুরটি প্রায় ২০০ বছরে ঐতিহ্য বহন করে আসছে।জনশ্রুতি অনুযায়ী পুকুরটি সবসময় সর্ব-সাধারনের কল্যানের কাজে ব্যবহার হত।
ব্যবহার হত মসজিদের মুসুল্লিদের ওজু ও মন্দিরের পূজারীর স্নানে।কৃষক ও পথচারীরা এই পুকুরের পাড়ে বসে নিত বিশ্রাম।আশেপাশের জমিতে কৃষি কাজে ব্যবহার হত এই পুকুরের পানি।এই পুকুর কে কেন্দ্র করে জমে উঠেছিল বাজার,হত পুথি-পাঠ,হত বাউল গান,জাড়ি-শারি ও পল্লী গান।পুকুরটি ছিল সাতার শেখার উন্মুক্ত স্কুল।গ্রামের ছেলেরা প্রায় সারাদিন ই খেলাধুলায় মত্ব থাকত এই পুকুরে।সর্বোপরি পুকুর টি ছিল মানুষের জীবন-জীবিকা ও বিনোদনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।তবে বিগত কয়েক বছর যাবৎ “কাজী বাড়ীর” ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে পুকুরটি প্রায় পরিত্যক্ত হয়েছিল।পুকুরের অন্যান্য অংশীদার ও এলাকাবাসী দের ঐকান্তিক ইচ্ছায় জাতীয় দৈনিক পত্রিকা “দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন” এবং অনলাইন ভিত্তিক জাতীয় দৈনিক পত্রিকা “দৈনিক প্রথম বাংলা” ও Dhakapost71 এ একটি প্রতিবেদন হওয়ার পর চুলা গ্রামের সচেতন যুব-সমাজ পুকুরটি পরিষ্কার ও সংস্কার এর কাজে নেমে পড়েন।”মালিকানা যার যার,পুকুর সংরক্ষণ ও ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব সবার” এই স্লোগান কে সামনে রেখে সচেতন যুব-সমাজ পুকুরটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু করেন এবং ভবিষ্যতেও পুকুরটি সংরক্ষণ করে ইতিহাস ঐতিহ্য রক্ষার শপথ নেন।পুকুরটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে চুলা গ্রামের সচেতন যুবক/স্বেচ্ছাসেবক’দের মধ্যে ছিলেন,মোঃ অনিম ভূঁইয়া,মোঃ রিফাত(টুটুল) ভূঁইয়া,মোঃ ছানি ভূঁইয়া,মোঃ রূপক গাজী,মোঃ ছনি,মোঃ কাউছার,মোঃ নূর হোসেন,মোঃ আশিক ভূঁইয়া,মোঃ মারুফ,মোঃ কফিল উদ্দিন ভুঁইয়া,শ্রী শায়ন চন্দ্র ঘোষ এবং মোঃ আবু কাউছার ভূঁইয়া।পুকরটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে সার্বিক সহযোগীতায় ছিলেন,মোঃ খোকন ভূঁইয়া,মোঃ ফারুক ভূঁইয়া,মোঃ সজিব ভূঁইয়া,মোঃ শাহীন ভূঁইয়া,মোঃ তুহিন ভূঁইয়া,মোঃ সামসুল ভূইয়া,মোঃ প্রান্ত ভূঁইয়া ও মোঃ মাহমুদুল হাসান তমাল ভূঁইয়া।
এ বিষয়ে সচেতন যুব-সমাজ/স্বেচ্ছাসেবী’রা বলেন,মুরুব্বিদের মুখ থেকে শোনা এবং আমাদের চোখে দেখা এই পুকুরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রের কবলে পরে নষ্ট হওয়ার সম্মুখীন হয়েছিল।সময়,ব্যস্ততা এবং মামলার ভয়ে আমরা এতদিন পুকুরটি সংস্কার এর কাজটি করতে পারি নি।জাতীয় দৈনিক পত্রিকা “দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন” ও অনলাইন ভিত্তিক জাতীয় দৈনিক পত্রিকা “দৈনিক প্রথম বাংলা” ও “Dhakapost71″ এ একটি প্রতিবেদন হওয়ার পর পুকুরের অন্যান্য অংশীদার,এলাকাবাসি এবং গোতাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এর সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব আবুল বরকত রবিন সাহেবের সাথে কথা বলে আমরা পুকুরটি সংস্কারের উদ্যোগ নেই এবং সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে পুকুরটি পরিষ্কার করতে সক্ষম হই।পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজটি করতে গিয়ে আমাদের(স্বেচ্ছাসেবী) মধ্যে হাত,পা ও অন্যান্য জায়গায় ব্যাথা পেলেও ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষায় পুকুরটি সংস্কার করতে পেরে আমরা সবাই সন্তুষ্ট।পুকুর টি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে আমরা মালিকানার দিকে লক্ষ করিনি।আমাদের স্লোগান ছিল,”মালিকানা যার যার,পুকুর সংরক্ষণ ও ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব সবার”।”কাজী বাড়ী’র” কোন বিরুপ প্রতিক্রিয়া না থাকলে ভবিষ্যতেও পুকুর টির সুন্দর্য বর্ধন ও সংরক্ষণ এর মধ্য দিয়ে বিগত ২০০ বছরের ইতিহাস ঐতিহ্য’র ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
পুকুরটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়ার বিষয়ে এলাকাবাসী জানান,যুব সমাজের এই উদ্যোগের মাধ্যমে পুকুরটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়ায় আমরা সকালেই অত্যন্ত আনন্দিত।আমরা সকলেই তাদের এই স্বেচ্ছা শ্রম কে সাধুবাদ জানাই।তাদের(স্বেচ্ছাসেবী) মাধ্যমে পুকুরটি পূনরায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে।সুন্দর্য বর্ধন ও সংরক্ষণ এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে বিগত সময়ের মত আগামী প্রজন্মের কাছেও পুকুরটি হবে একটি ইতিহাস।
উল্লেখ্য,চুলা গ্রামের যুব-সমাজ এর আগেও বিভিন্ন সমাজ-সেবা মূলক কাজের মাধ্যমে সমাজের উন্নয়নে কাজ করেছে।উৎসাহ ও সহযোগিতার পাশাপাশি বাধা-বিপত্তি না পেলে এবং প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা পেলে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়ন মূলক কাজের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবী সচেতন যুব-সমাজ।