
সাজ্জাদ আহম্মেদ, খোকসা (কুষ্টিয়া) নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
বন্ধুদের সাথে গড়াই নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র নূসাদ আমান। স্কুল ব্যাগ কেস আর ইউনিফর্মের পাশে বসে ছেলের জন্য আহাজারি করছিলেন মা বাবা। ছেলের মাকে সান্তনা দেবার চেষ্টা করেছিলেন বাবা তিনি নিজেও মাঝে মাঝে ডুকরে কেঁদে উঠছিলেন মাটিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছিলেন মা।
সোমবার সকাল ১০.০০ ঘটিকার সময় কুষ্টিয়া খোকসা জানিপুর পুরাতন বাজারের বোর্ড হাউজ এলাকার মিলুর ঘাটে নিখোঁজ হয় স্কুল ছাত্র আমান। সে খোকসা উপজেলা জানিপুর ইউনিয়নের একতারপুর গ্রামের প্রবাসী শামীম হাসানের ছেলে। খোকসা জানিপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র।
নুসাদ আমান নিখোঁজ হওয়ার সময় তার সহপাঠী সানি,সাকিন একসাথে নদীতে গোসলে নেমেছিল প্রত্যক্ষদর্শী সহপাঠীরা জানান তাদের সাথে গড়াই নদী বোর্ড হাউজ এলাকায় ঘুরতে যায়। হঠাৎ করে তাদের মাথায় নদীতে গোসলের চিন্তা আসে।স্কুল পোশাক খুলে বইয়ের ব্যাগ নদীর ধারে রেখে চার বন্ধু পানিতে নামে। একপর্যায়ে নুসাদ আমান নদীতে ফেলা জিও ব্যাগের উপর থেকে ঝাঁপ দেয় সে পানিতে ডুবে যাওয়ার মুহূর্ত হাত উঁচু করে নিজেকে রক্ষার নিমিত্তে জানায়। বন্ধুরা চেষ্টা করে কিন্তু আমানকে আর উদ্ধার করতে পারেনি। নদীর পানির স্রোতে হারিয়ে যায় নুসরাত আমান।
নিখোঁজ এর খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে মা-বাবা ও তার ছোট ভাই নদীর ঘাটে ছুটে আসেন। নদীর ঘাটে ছেলের খুলে রেখে যাওয়া পোশাক এনে কাছে নিয়ে বিলাপ করছে মা শাহানা ইসলাম। নিখোঁজ ছাত্রের বাবা শাহানাকে সান্তনা করার চেষ্টা করছিল। আবার বিলাপ করতে করতে মাটিতে বসে পড়ছিলেন।
নিখোঁজ শিক্ষার্থীর সাথে থাকা সহপাঠি বর্ণ আহমেদ জানান তারা চার বন্ধুসহ একই শ্রেণীর কয়েকজন ছাত্র সকালে স্কুল ছুটির ফাঁকে বোর্ড হাউস এলাকায় কফি খাওয়ার জন্য আসেন এ সময় তারা নদীর কূলে স্কুল ড্রেস খুলে রেখে গোসলে নামে। তাদের ভরসা ছিল সে তার ভাইয়ের সাথে নদীতে আগেও গোসল করেছে। একপর্যায়ে সে নদীতে ঝাঁপ দেয় ডুবে যাওয়ার সময় সে হাত উঁচু করে সাহায্য চেয়েছিল সবাই মিলে তাকে উদ্ধারের চেষ্টাও করেছিল কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে।
নিজে সহপাঠীকে চোখের সামনে ডুবে যেতে দেখে তারা নিরুপায় মত কেঁদে উঠছিল।
স্কুল ছাত্র নিখোঁজ এর খবর পেয়ে খোকসা ফায়ার সার্ভিস খুলনাকে অবহিত করলে খুলনা থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ৬ সদস্য ডুবুরি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন লিডার শরিফুল ইসলাম দলনেতা।
ঘটনা স্থলে উপস্থিত ছিলেন খোকসা উপজেলা চেয়ারম্যান আল মাছুম মুর্শেদ শান্ত ও খোকসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইরুফা সুলতানা এবং খোকসা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আননূর জায়েদ।