
মো:ফেরদৌস ওয়াহিদ সবুজ, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ৬জন শিক্ষক কর্মরত থাকা সত্বেও মাত্র একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে ১৮৯নং নিজপাড়া গ্রামডাংগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান। বিদ্যালয়টিতে ছাত্রছাত্রী হাজিরা খাতায় ১২০-১৩০ জনের নাম থাকলেও মাত্র ৮ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল।
“শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড, শিক্ষাই মুক্তি ” এই স্লোগান বাস্তবায়ন হচ্ছে না উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে।
উপজেলায় ২৩১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বছরের প্রথমেই বিন্যামূলে আংশিক বই প্রদান করা হয়, ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান করা, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক দ্বারা পাঠদান করা এবং শ্রেণি পাঠদানে বাস্তব উপকরণ প্রদান করছে শিক্ষা বিভাগ।
সোমবার (২০ জানুয়ারি -২০২৫) দুপুরে সরজমিনে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬ জন শিক্ষকের স্থলে একমাত্র আরিফা জাহান শিক্ষিকা হিসেবে তিন ক্লাশে ৮ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাতে দেখা যায়।
অভিভাবকরা অভিযোগ করেন জানান, প্রায়দিনই একজন অথবা কোন কোন সময় দুইজন শিক্ষক দিয়েই স্কুল চালানো হয়, প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল লতিফ বেশীরভাগ স্কুলে অনুপস্থিত থেকেই পরবর্তীতে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন।
অন্য কোন শিক্ষক না থাকায় একজনেই সব শ্রেণির ক্লাস নিতে দেখা গেছে।
এমনকি যাবতীয় দাপ্তরিক কাজে তাকে সবসময় ব্যস্ত থাকতে হয়। সেকারণে বর্তমানে বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, নিজপাড়া ইউপির প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের স্থানীয় ইলিয়াশ আলী নামের এক ব্যক্তির দানকৃত
৫৭শতক সম্পত্তিতে ১৯৮৯ সালে ১৮৯নং নিজপাড়া গ্রামডাংঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়, যা পরবর্তীতে ২০০২-২০০৩ সালে সরকারিকরণ হয়।
সংশ্লিষ্টসূত্রে জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১২০ জন এবং শিক্ষক পদসংখ্যা ৬টি, এর মধ্যে মাত্র ১ জন শিক্ষক বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন। অপর ২ জন সহকারী শিক্ষকের মধ্যে ১ জন মোঃ সফিকুল ইসলাম তিন দিনের ছুটিতে আছেন। সহকারী শিক্ষক ওমর ফারুক ভোটার হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। বাকি ৩ জন শিক্ষকের মধ্যে প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুল লতিফ, সহকারী শিক্ষিকা কাসমিন আরা এবং সহকারী শিক্ষিকা ১জন নানা অজুহাত দেখিয়ে স্কুলে আসেন না।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক উপস্থিত না থাকার বিষয়ে জানতে পেরে সহকারী শিক্ষা অফিসার মো: মাজেদুর রহমান সরকারি গ্রামডাংঙ্গী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করে বাস্তব চিত্র দেখতে পান।
তিনি বলেন, অনুপস্থিত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বীরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোছা: শাহজিদা হকের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট সহকারী শিক্ষা অফিসারকে পরিদর্শক করে রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।