
কাঠালিয়া, ঝালকাঠী।
কাঠালিয়ার আমরিবুনিয়ার মায়ারামের মানুষ দীর্ঘ ৫৩ বছর যাবৎ কাঁদা পানি ও সাঁকো পারাপার করে চলাচল করছে
কাঠালিয়া (ঝালকাঠী) প্রতিনিধি ঃ
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আমরিবুনিয়া গ্রামের মায়ারাম হিন্দু পাড়ার রাস্তাটির বেহালদশা। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পড়েও এখানকার মানুষ বর্ষা মৌসুমে কোমড় সমান কাঁদা পানি ও সাঁকো পাড় হয়ে যাতায়াত করছে। প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
আমরিবুনিয়ার মায়ারামের দেড় কিলোমিটার কাঁচা এ রাস্তাটিতে তিনটি লোহার পুল রয়েছে। পুলগুলোর অংশ বিশেষ ভেঙ্গে খালে পড়ে থাকায় পারাপারে জনদুর্ভোগ সুষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ দিনেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। স্থানীয়রা সাঁকো নির্মাণ করে পারাপারের ব্যবস্থা করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমরিবুনিয়া গ্রামের কাঠালিয়া-ছৈালারচর সড়কের শামসুল হক খান এর বাড়ি থেকে মায়ারাম কালিবাড়ি হয়ে আমরিবুনিয়া বাজার পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এখানে প্রায় পাঁচশত লোকের বসবাস। এ এলাকায় বসবাসকারী বেশির ভাগ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক। রাস্তায় মধ্যে একটি ভাঙ্গল রয়েছে। ভাঙ্গলে সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। কালিবাড়ি সংলগ্ন আছি খালের পুলটি ভেঙে খালে পড়ে থাকায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ রাস্তা দিয়ে আমুয়া ইউনিয়নে যাতায়াতের সংযোগ পুলটি ভেঙ্গে যাওয়ায় পারাপার হতে পারছে না পথচারীরা। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে কাঁচা এ রাস্তাটির উন্নয়ন এলাকাবাসীর চোখে পড়েনি। এ রাস্তা দিয়ে উপজেলা হাসপাতাল, আমুয়া বাজার, আমুয়া শহীদ রাজা ডিগ্রী কলেজ, বাশবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আমুয়া এসি গার্লস স্কুল, বাশবুনিয়া প্রাইমারি স্কুল, তালতলা বাজার, আমরিবুনিয়া প্রাইমারি স্কুল, আমরিবুনিয়া এইসকে বালিকা বিদ্যালয়, আমরিবুনিয়া বাজার, চিংড়াখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চিংড়াখালী মাদ্রাসা, বটতলা বাজার সহ একাধিক মসজিদ ও মন্দিরে প্রতিদিন যাতায়াতকারী শত শত লোক চরম দুর্ভোগে রয়েছে।
মায়ারামের শংকর চন্দ্র মিস্ত্রি জানান, প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে অনেক মানুষ চলাচল করে। সামান্য বৃষ্টি হলে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। তাছাড়া এই রাস্তায় তিনটি ভাঙ্গা লোহার পুল রয়েছে। রাস্তাটি পাকাকরণ ও লোহারপুল গুলো মেরামতের জন্য এলাবাসীর পক্ষ্য থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনেকবার লিখিত দাবী জানিয়েছি। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের কাছে একাধিকবার বলা হলেও এর কোনো প্রতিকার হয়নি।
শিক্ষার্থী মিতা রানী জানায় রাস্তাটির কারণে আমরা বর্ষা মৌসুমে ঠিকমতো স্কুলে যেতে পারি না। রাস্তা খারাপ থাকায় আমরা নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে পৌছাতে পারি না। ফলে শিক্ষকদের বকাও শুনতে হয়। আমরা রাস্তাটি বর্ষা মৌসুমের আগে পাকা করার দাবি জানাচ্ছি।
বাবনা সরকারি কলেজের সাবেক প্রভাষক গণেশ মিত্র জানান, স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও এই রাস্তাটির কোন উন্নয়ন হয়নি। কেহ অসুস্থ হলে তাকে আমরা সময় মত হাসপাতালে নিতে পারি না। রাস্তা ও পুল দিয়ে প্রতিদিন শতশত লোক ও শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। রাস্তা পাকা করন ও পুল মেরামতের জন্য একাধিকবার ইঞ্জিনিয়ার অফিস, চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের জানানো হয়েছে। তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
কাঠালিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন জানান, আমরা পরিষদের মাধ্যমে গত বছর মাটির কাজ করেছি। কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে রাস্তাটি পাকা ও পুলগুলো সংস্কার করার চেষ্টা চলছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জহিরুল ইসলাম রাস্তাটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।