
বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে পিঠা পুলির আয়োজন। আর এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই প্রতি বছরের মতো এবারও শুরু হয়েছে নিয়ামতপুরের হাজিনগর ইউনিয়নের তালতলিতে তাল পিঠা মেলা।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিয়ামতপুরের তালতলিতে দ্বিতীয়বারের মত তাল পিঠা মেলা অনুষ্ঠিত হয়। নিয়ামতপুর উপজেলা পরিষদ এ মেলা আয়োজন করে। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার তাল পিঠা মেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ঐতিহ্য ধরে রাখতে তাল পিঠা মেলা বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তাল পিঠা বাঙালির চিরায়ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অংশ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, তালতলির তালগাছ নিয়ে কথা বলতে গেলে আমি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি। এই তালগাছ রোপণকালে যারা আমার সহযোগী ছিলেন তাদের কথা মনে পড়ে। আবার ভাবতে ভালো লাগে সেই তালগাছের নিচে এখন তাল পিঠার মেলা হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ বলেন, এ ধরনের আয়োজন আমাদের মানবিক হতে শেখায়। আমাদের শেকড়ের কাছে নিয়ে যায়। তাল পিঠার মেলাকে কেন্দ্র করে মানুষে মানুষে মনের সংযোগ ঘটে।
এছাড়াও নওগাঁ জেলা প্রশাসক মো. খালিদ মেহেদী হাসান, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিয়ামতপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক সুফিয়ান। হাজিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অন্যান্য মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নিয়ামতপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ, নিয়ামতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, আলহাজ্ব আবুল কালাম, আজাদ সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান বিপ্লব।
দিনব্যাপী এ পিঠা মেলায় তালের তৈরি নানান ধরনের পিঠার পসরা নিয়ে হাজির হয়েছেন এ অঞ্চলের পিঠাশিল্পীরা। এবার মেলায় ৫০টিরও বেশি স্টলে প্রায় ৩০ ধরনের পিঠা দিয়ে সাজানো হয়েছে এই তাল পিঠার মেলা। মেলায় তালের তৈরি ফুলঝুরি, জামাই পিঠা,খেজুর পিঠা,তাল জিলাপি, তাল কেক, তালক্ষীর, মুইঠা পিঠা, গড়গড়া, তাল রুটি, কান মুচুরি, ডাল বড়া প্রভৃতি।
উল্লেখ্য, তালতলিতে ১৯৮৬ সালে তাল গাছ রোপণ করেন তৎকালীন ইউনিয়নপরিষদের চেয়ারম্যান, বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তালতলির তালসড়ক এখন এ অঞ্চলের পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে। ২০২১ সালে প্রথমবার তাল পিঠা মেলা আয়োজন করা হয় এখানে। প্রকৃতিতে শোভাবর্ধনের পাশাপাশি আয়বর্ধক কাজেও তালগাছগুলো ভূমিকা রেখে চলেছে।