
স্বপন কুমার নাথ – ষ্টাফ রিপোর্টার –
* সীতাকুন্ডে ০৫ মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর –
* এক সপ্তাহ আগে দেয়া হয়েছিল প্রান নাশের হুমকি
* হুমকি দাতার প্রতি”ই সন্দেহের তীর –
* থানায় অভিযোগ ও সনাতনীদের মাঝে জ্বলছে ক্ষোভের আগুন।
সনাতনী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী তীর্থ স্হান হিসাবে খ্যাত চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার চন্দ্রনাথ ধাম। এর আওতাধীন উপজেলার বাড়বকুণ্ডে অবস্থিত অগ্নিকুণ্ড ( বাড়বানল) তীর্থ স্হান। এখানে রয়েছে অগ্নিকুণ্ড, শিব মন্দির, ত্রিনাথ মন্দির, অন্নপূর্ণা মন্দির, হনুমান মন্দির ও জগন্নাথ মন্দির। দেশ বিদেশ থেকে প্রতি বছর শিবচতুর্দশী তে এবং সারা বছর ব্যাপী লক্ষ লক্ষ তীর্থ যাত্রী এখানে তীর্থ করতে আসেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে কোন এক সময় দূর্বৃত্তরা এখানে থাকা সব কয়টি মন্দির ও মন্দিরে থাকা প্রত্যকটি দেব দেবতার বিগ্রহ ব্যাপকভাবে ভাঙচুর করে। পাশাপাশি অন্নপূর্ণা ও ত্রিনাথ ঠাকুরের বিগ্রহ ভাঙচুর করে মন্দিরের বাহিরে ফেলে দেয় এবং ইট পাথর দিয়ে চাপা দিয়েছে শিব ঠাকুরের বিগ্রহ। এ ঘটনায় এলাকা সহ সারা দেশে সনাতনী সম্প্রদায়ের মাঝে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে এবং ইতিমধ্যে মন্দিরের সেবায়েত কুমারী স্মৃতিলতা ভারতী বাদী হয়ে সীতাকুন্ড মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মন্দিরের সেবায়েত এর ভাতিজা কালী ণারায়ন ভারতী বলেন, মন্দির ভেঙ্গে তীর্থ পীঠের জায়গা
দখল করার জন্য একটি শক্তিশালী কুচক্রী মহল দীর্ঘদিন যাবৎ অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা বাধা দেয়ায় তাদের ২/১ জন গত সপ্তাহ খানেক আগে আমাকে প্রানে মেরে ফেলার জন্য প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে এবং এ বিষয়ে আমি এক সপ্তাহ আগে সীতাকুণ্ড থানায় ডায়েরি করেছি। এর পর সপ্তাহ পার না হতেই আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে আমাদের এই তীর্থ পীঠে অবস্হিত সবগুলো মঠ মন্দির ও বিগ্রহ ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে এবং মন্দিরে হামলা ও ব্যাপক লুঠপাট চালিয়েছে। আমি মনে করি, আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দাতা ও মন্দিরে হামলাকারী একই চক্র। বাবু কালী ণারায়ন ভারতী অশ্রু স্বজল নয়নে আর ও বলেন, আমার প্রিয় মন্দির ও দেব দেবতাদের ভাঙচুর না করে, আমাকে মেরে ফেললেও আমি এমন কষ্ট পেতাম না। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাচ্ছি এবং আমাদের নব নির্বাচিত সাংসদ জনাব আলহাজ্ব এস এম আল্ মামুন সাহেব এবং মানবতার মা ও এ দেশের সর্বোচ্চ অভিবাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের প্রিয় নেত্রী জননেত্রী হাসিনার নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি যে, এ ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতিকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মূলক শান্তি দিবেন এবং সকল ধর্মের লোক যাহাতে নির্ভিগ্নে যার যার ধর্ম পালন করতে পারেন এটি নিশ্চিত করবেন। এ বিষয়ে ০৫নং বাড়বকুন্ড ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব ছাদাকাত উল্ল্যাহ্ মিয়াজি বলেন, দেশে চলমান শান্তিপূর্ণ পরিস্হিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি বিনষ্ট করতে দূর্বৃত্তরা এ হামলা চালিয়েছে বলে আমার ধারণা। আমি ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতিকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানাচ্ছি। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবু বিমল চন্দ্র নাথ এবং সাধারণ সম্পাদক বাবু আশীষ কুমার শীল উল্লেখিত ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছেন এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী দূর্বৃত্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন পাশাপাশি অনতিবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্হ মন্দির দ্রুত নির্মাণ সহ বিগ্রহাদি পুনঃ স্হাপনের মাধ্যমে সনাতনীদের পূজা পার্বনে সহায়তা করার জন্য সরকারের প্রতি দাবী জানিয়েছেন। অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সীতাকুন্ড মডেল থানার উপপরিদর্শক জনাব পায়েল রায় বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা তদন্ত শুরু করেছি। আশা করছি শিঘ্রই আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।