বাড়িবাংলাদেশেঢাকা বিভাগআলোচিত জল্লাদ শাহজাহান মারা গেলেন

আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান মারা গেলেন

অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ

আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্হায়  সোমবার  ভোরে মারা গেছেন। নরসিংদীর পলাশ উপজেলার  ইছাখালীতে জল্লাদ শাহজাহানের লাশ দাফন সম্পন্ন করা হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামিসহ ২৬ জনের ফাঁসির দড়ি টানায় আলোচিত ছিল  ‘জল্লাদ’ শাহজাহান।

জল্লাদ শাহজাহানের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন তার বোন ফিরোজা জানান, আমরা খবর পেয়ে লাশ গ্রহণ করতে দুপুরে হাসপাতালে পৌঁছেছি। হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি পলাশের ইছাখালীতে নিয়ে আসা হবে। পরে সেখানে তার জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হবে।

নিহতের স্বজনরা জানান, সাভারের হেমায়েতপুরের কাশেম আলীর একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন জল্লাদ শাহজাহান। সেখানে  ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তার বুকে ব্যথা উঠে। পরে বাড়ির মালিক রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে  ভর্তি করা হয়।  সকাল সাড়ে ৫ টার দিকে  হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

শাহজাহানকে ১৯৯১ সালে আটক হওয়ার আগে ও পরে তার নামে মোট ৩৬ টি মামলা হয়। এর মধ্যে একটি অস্ত্র মামলা, একটি ডাকাতি মামলা, ও বাকি ৩৪ টি হত্যা মামলা ছিল।

আলোচিত ‘জল্লাদ’ শাহজাহান দীর্ঘ ৩২ বছর ছয়মাস দুইদিন কারাভোগের পর গত বছরের ১৮ জুন বেলা ১১টা ৪৭ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

জল্লাদ শাহজাহানের পুরো নাম শাহজাহান ভূঁইয়া। তিনি নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামের মৃত হাছেন আলীর ছেলে। ৭৪ বছর বয়সী শাহজাহান কারাভোগ শেষে মুক্তি পাওয়ার পর এক তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু কয়েক মাস সংসার করার পর তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।

শাহজাহান ভূইয়া ১৯৯১ সালে গ্রেফতার হন। তাকে মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে রাখা হয়। কারাগারে ভালো কাজ ও মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করতে জল্লাদের দায়িত্ব পালনের জন্য তার সাজার মেয়াদ ১০ বছর মওকুফ (রেয়াত) করা হয়।

পাশাপাশি শাহজাহানের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় আবেদনের প্রেক্ষিতে কারা কর্তৃপক্ষ তার জরিমানার ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে দেয়। ফলে দীর্ঘ ৩১ বছর ছয়মাস দুইদিন কারাগারের চার দেয়ালের মধ্যে বন্দিজীবন কাটানোর পর তিনি মুক্ত হন।

কারাগারের তথ্যানুযায়ী, শাহজাহান ২০০১ সাল থেকে মুক্তির আগ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ ঘাতক, ৬ জন যুদ্ধাপরাধী, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, জঙ্গি নেতা বাংলাভাই, আতাউর রহমান সানী, শারমীন রীমা হত্যার আসামি খুকু মনির, ডেইজি হত্যা মামলার আসামি হাসানসহ বাংলাদেশের আলোচিত ২৬ জনের ফাঁসি দিয়েছেন।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments