বাড়িঢাকা বিভাগগাজীপুর জেলাছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ অতপর থানায় মামলা।

ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ অতপর থানায় মামলা।

মোঃ মোজাম্মেল হোসেন,কাপাসিয়া গাজীপুর বিশেষ প্রতিনিধি।

সদ্য অব্যাহতি পাওয়া গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান হোসেন শিশিরের বিরুদ্ধে কাপাসিয়া থানায় ধর্ষণ মামলা করেছেন এক গৃহবধূ। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক সন্তানের ওই জননীকে ধর্ষণ করা হয় বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন তিনি।

আজ বুধবার সকালে কাপাসিয়া থানায় একটি মামলা করেছেন ওই নারী। এ ঘটনার জেরে গত রবিবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক পত্রে তাকে গাজীপুর জেলা ছাত্রদল সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযোগকারী গৃহবধূ উপজেলার এক ফ্রান্স প্রবাসীর মেয়ে। সেই সুবাদে একই উপজেলার ফ্রান্স প্রবাসী এক যুবকের সঙ্গে প্রায় ১০ বছর আগে তার মেয়েকে বিয়ে দেন। প্রায় ৩ বছর আগে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ওই সংসারে ৭-৮ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেন শিশির উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়নের ইকুরিয়া এলাকার আব্দুর রশিদ মাস্টারের ছেলে। বর্তমানে তারা উভয়ে উপজেলা সদরের সাফাইশ্রী আদালতপাড়ায় বসবাস করছেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজে অধ্যয়নকালে (২০১৯ সালে) শিশিরের সঙ্গে ওই গৃহবধূর পরিচয় হয়। তারপর থেকে প্রায়ই শিশির তার বাড়িতে যেতেন এবং প্রেমের প্রস্তাব দিতে থাকলে এক পর্যায়ে তিনি রাজি হন। প্রায় ছয় বছর ধরে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে গাজীপুরের বিভিন্ন রিসোর্ট, রাজধানী ঢাকার উত্তরা এবং কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়ে একসঙ্গে আবাসিক হোটেলে রাত্রিযাপন করেছেন। এমনকি তারা দুজন ভারতে গিয়ে ৯ রাত একসঙ্গে রাত্রিযাপন করেছেন বলে দাবি করেন তিনি। এ সময় তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অসংখ্যবার শারীরিক সম্পর্কের ফলে অন্তত চার-পাঁচ বার ওই নারী গর্ভবতী হয়েছেন। তখন বিয়ের জন্য চাপ দিলে শিশির ছাত্রদলের পদ হারাবে জানিয়ে ছাত্র রাজনীতি শেষে তাকে বিয়ের আশ্বাস দেন এবং প্রতিবারই শিশিরের চাপে গর্ভপাত করতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

এতদিন পর্যন্ত ওই নারীকে বিয়ের আশ্বাস দিলেও গত ৫ আগস্টের পর থেকে শিশির ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন এবং এ বিষয়ে মুখ খুললে নিজস্ব লোক দিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি ও নানা রকমের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলে দাবি করেন। ফলে তিনি বাধ্য হয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতৃবৃন্দের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন।

গত ১২ অক্টোবর শনিবার একটি ভিডিওতে (৩ মিনিট ৪১ সেকেন্ডর) এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলে শিশিরের বিচার দাবি করেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়। পরের দিন রবিবার সকালে এ বিষয়ে ওই নারী শ্রীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় একটি সংবাদ সম্মেলন করে তার বক্তব্য সম্বলিত ওই ভিডিও সুপার এডিট করে বানানো হয়েছে বলে দাবি করেন।

শিশিরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এর সঙ্গে জড়িত বলে লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন তিনি এবং এ বিষয়ে বিচার দাবি করেন। মামলার আবেদনে সেদিন শিশিরের চাপে পড়ে ওই নারী এ সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি করেন।

এ বিষয়ে ইমরান হোসেন শিশির জানান, এক সন্তানের জননী ওই নারী প্রমাণ হিসেবে যে সকল ভিডিও প্রচার করছেন তা অত্যাধুনিক এ.আই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানিয়েছেন। সকল অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তাকে রাজনৈতিকভাবে নাজেহাল করার জন্য প্রতিপক্ষের লোকজন ওই নারীকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন।

কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন জানান, ইমরান হোসেন শিশিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগকারী ওই নারীকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হবে এবং মামলায় উল্লেখিত স্থানসমূহে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments